রানা পরিবহনে ও বাবু ঝুঁট ব্যবসায়ী: স্বেচ্ছাসেবকদলে তবুও পরিচ্ছন্নতার ছাপ!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরপরই নারায়ণগঞ্জের পবিরহন সেক্টর দখলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা। দখলবাজি নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মাঝে গোলাগুলির ঘটনার একপক্ষে ছিলেন তিনি। সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু নাম লিখিয়েছেন ঝুঁট ব্যবসায়ীর তালিকায়। আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব দুজনই বিএনপির অপর গ্রুপের করা মামলায় আসামী হয়েছেন। যদিও ভাপখানা এমন কিছুই বুঝেন না তারা, ভাজা মাছটি উল্টে খেতেও জানেন না রানা ও বাবু। বাবু যেনো শুধুই বাবু। অথচ জেলার শীর্ষ বৃহত্তর আয়ের দুটি সেক্টরে রয়েছে তাদের দু‘জনের বিরাট কালো থাবা।

এদিকে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের বাকি যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্যরা আছেন শীর্ষ নেতাদের দিকে তাকিয়ে। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের কর্মকাণ্ডে সংগঠনটিতে বিতর্কের আচ পড়লেও অধিকাংশ নেতাকর্মীদের বিতর্কহীন কর্মকান্ডে আছে পরিচ্ছন্নতায়। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সভায় বিরাট আয়োজন করে কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতাদের প্রসংশা কুড়িয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। সংগঠনের আহ্বায়ক রানা ও সদস্য সচিব বাবু চার হাতে নিজেদের পকেট ভারি করলেও সংগঠনের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গেও রাখছেন না কিংবা জায়গা করেও দিচ্ছেন না তারা।

ঘটনা সূত্রে, গত ২০২৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ টার্নিনাল ঘাটে সিটি বন্ধন পরিবহনের কার্যালয় দখলে যান মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা ও সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু। সেদিন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানের অনুগামী দাদা সেলিম বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। এই ঘটনায় বিএনপির দুই গ্রুপের মাঝে পাল্টাপাল্টি মামলাও রুজু হয়। একটি মামলায় রানা আসামীও হোন। বাবু সেদিন সেখানে থাকলেও মামলা থেকে বেঁচে গেছেন। এর কদিন পরে এক নারী সাংবাদিক অভিযোগ তুলেন সাখাওয়াত ইসলাম রানা ওই নারীর বাস কাউন্টার দখলে নিতে গিয়ে নারীকে মারধর করেছেন রানা ও তার লোকজন।

অন্যদিকে আদমজী ইপিজেডে ঝুট ব্যবসায় নামেন মমিনুর রহমান বাবু। ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জেলা কৃষকদলের সাবেক সদস্য সচিব রিফাত কাউসারের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন বাবু। বাবুর সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত আছেন মহানগর মহিলা দলের সদস্য সচিব আয়েশা আক্তার দিনা, মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদ। ঝুট নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১০ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কৃষকদলের সভাপতি তৈয়ম হোসেন বাদী তাদের তিনজনের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলাও করে দেয়।

কমিটি গঠনের বিষয়ে জানাগেছে, গত ২০২৩ সালের ১৫ অক্টোবর সাখাওয়াত ইসলাম রানাকে আহ্বায়ক, কামাল উদ্দীন মির্জা জনিকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও মো. মমিনুর রহমান বাবুকে সদস্য সচিব করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকদল সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান। এর আগে ২৯ আগস্ট উপরোক্ত তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি।

কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক সাহেব উল্লাহ রোমান, হামিদুর রহমান সুমন, দুলাল হোসেন, শাহিন আহম্মেদ, মাহাদী হাসান মিঠু, রাকিব আহমেদ ডালিম প্রধান, ভিপি নজরুল ইসলাম, রেজাউল করিম, শাকিল আহমেদ, আক্তার হোসেন, রাইয়ান হককে রাখা হয়। এ ছাড়াও কমিটির দপ্তরের দায়িত্বে রয়েছেন আমান শিকদার, সহ-দপ্তরে হাসানুজ্জামান লিমন।

কমিটিতে সদস্য পদে আছেন শরিফুল রহমান, জাকির হোসেন জুয়েল, সাইফুল ইসলাম, মুনতাছির রহমান স্বজন, রাজা মিয়া, রুহুল আমিন আমিনুল ইসলাম, আনিছুর রহমান রানা, উজ্জল হোসেন, আক্তার হোসেন টুটুল, মিজানুর রহমান, রবিউল ইসলাম রবি, আরমান সরদার, আনিছুল হক বাবু, গোলাম মোস্তফা, মনির হোসেন, রুবেল হোসেন, মাহবুব হোসেন, বাধন মজুমদার, মাহাবুবুর রহমান, জামাল হোসেন, মানিক মন্ডল, বোরহান ঢালী, লুৎফুর রহমান লিটন, ইসমাইল খান, আলমগীর, জুবায়ের আহমেদ রোহান, আকিব কাউসার, মনির হোসেন, আনোয়ার, হোসেন আনু, শাহাবুদ্দিন, রোমান ইসলাম, আফসার কাজী।