ডেস্ক রিপোর্ট, সান নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও পৌরসভার দিয়াপাড়া এলাকার প্রয়াত চলচিত্র নায়িকা পারভীন সুলতানা দিতির কন্যা লামিয়া চৌধুরীর সঙ্গে সংগঠিত ঘটানায় জড়ানো হচ্ছে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন সহ বিএনপির নেতাকর্মীদের। মুলত এক অসহায় বিধবা নারীর উপকারে এগিয়ে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন বিএনপির এই নেতা। প্রকৃত ঘটনার অন্তরালে গণমাধ্যমগুলোতে অপপ্রচারের শিকার হচ্ছেন মোশারফ হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, মোশারফ হোসেন সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তিনি এর আগে সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষ প্রতীকে মেয়র পদে নির্বাচন করেছিলেন। সামনের নির্বাচনেও হয়তো তিনি মেয়র পদে নির্বাচন করবেন। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত দিতির কন্যা ও তার আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গেও মোশারফের সুসম্পর্ক বিদ্যমান। তারা প্রতিবেশীও। স্থানীয়দের ভালো মন্ধ দেখার জন্য সমাজের মানুষজনের আহ্বানেই মানুষের সামাজিক সমস্যাগুলো সমাধানে এগিয়ে যান মোশারফ হোসেন।
স্থানীয়রা আরো জানান, দিতির ৪ ভাইয়ের মধ্যে দুই ভাই মৃত্যুবরণ করেছেন, যাদের মধ্যে টিপু সুলতান সবার ছোট, যিনি বিয়ের ৬ বছরের মাথায় দুই শিশু সন্তান রেখে মারা যান। টিপু সুলতানের এক স্কুল পড়ুয়া ছেলে সহ প্রতিবন্ধি আরেকটি শিশু সন্তান রয়েছে, যাদেরকে নিয়ে টানাপোড়ানে সংসার চালাচ্ছেন প্রয়াত টিপু সুলতানের বিধবা স্ত্রী লায়লা লুৎফুন্নাহার প্রীতি। তিনি টিপু সুলতানের ভাই ও বোনদের কাছে দাবি করে আসছেন টিপু সুলতানের সম্পদের অংশ বুঝিয়ে দিতে। কিন্তু প্রীতির বাসুর, ননদ ও তাদের সন্তানেরা প্রীতির স্বামী ও সন্তানদের সম্পদ বুঝিয়ে দিতে নারাজ। দেই দিচ্ছি করে কালক্ষেপন করে আসছিলেন।
এভাবে গেল ৭ বছর যাবত বিভিন্ন স্থানে ধর্না দিলেও অসহায় বিধবা নারী তার স্বামী ও শিশু সন্তানদের সম্পদ বুঝে নিতে পারেননি। গ্রাম্য সালিশির মাধ্যমে ২২ ফেব্রুয়ারী শনিবার সেই নারীর স্বামী ও সন্তানদের সম্পদ বাটোয়ারা করে দেয়ার জন্য বসছিলেন স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিরা। সালিশির শুরুতেই দিতি কন্যা লামিয়া চৌধুরী ও তার আরেক মামাতো ভাই শালিসে উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে মোবাইলে ভিডিও করতে থাকেন। এ সময় মোবাইল টানাটানি নিয়ে প্রীতি ও লামিয়ার মধ্যে ধস্তাধস্তি লেগে গেলে উপস্থিত লোকজন তাদেরকে ছাড়িয়ে দেয়। ধস্তাধস্তির পর লামিয়া তার গাড়ি করে ঢাকায় চলে যান এবং ঢাকায় গিয়ে তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে বিস্তর অভিযোগ তুলেন।
শালিসে ওই সময় ঘটনাস্থলে বসা ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান ও সোনারগাঁও পৌর বিএনপির সভাপতি শাহজাহান মেম্বারসহ স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিরা। কিন্তু ওই ঘটনাকে বিএনপির উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ফলে বিধবা নারীর সঙ্গে প্রতিবেশীদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ মিটাতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন মোশারফ হোসেন সহ বিএনপির নেতারা।
অন্যদিকে দিতি কন্যা লামিয়া ঢাকায় গিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ করে বলেন, ‘তার পা ভেঙে ফেলা হয়েছে। তিনি হাঁটতে পারছেন না। তাঁর গাড়িও ভাঙা হয়েছে।’ যদিও পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন করে লামিয়ার প্রয়াত ছোট মামার স্ত্রী লায়লা লুৎফুন্নাহার প্রীতি পাল্টা অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, জমিসংক্রান্ত বিষয়ে বিচারে লোকজন নিয়ে এসে তাঁর (প্রীতি) ওপর হামলা চালিয়েছেন লামিয়া। লামিয়া ঢাকা থেকে লোকজন এনে হামলা চালিয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমার লোকজন কোনো হামলার সঙ্গে জড়িত না। মহিলারা মহিলারা এইটা করছে।’
লামিয়ার মামি লায়লা লুৎফুন্নাহার বলেন, ‘আমার মৃত স্বামীর নামে ৩৮ শতাংশ জমি আছে। সেখানে আমি আমার দুই সন্তানকে নিয়ে বসবাস করি। আমার একটি ছেলে অটিস্টিক। আমার স্বামীর জমি দখল করতে চায় লামিয়ারা। এ নিয়ে সালিস বসলে লামিয়া ঢাকা থেকে লোকজন নিয়ে এসে আমার ওপর হামলা চালায়। এতে আমি আহত হই। বর্তমানে আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।’