সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আয়োজিত সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির বিপুল সংখ্যক আইনজীবীদের নিয়ে অংশগ্রহণ করেছে জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও আইনজীবী ফোরামের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির এবং আইনজীবী ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকিরের নেতৃত্বে আইনজীবীরা জেলা বিএনপির সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নসহ ৪ দফা দাবি বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সমাবেশে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে নজরকাড়া শোডাউনের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেছেন ইমাম হোসেন বাদল।
২৫ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার দুপুরে মহানগরীর মেট্রো সিনেমা হল মোড় এলাকায় অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির সমাবেশে দুপুর আড়াইটা থেকেই নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে চাষাড়া হয়ে মিছিলে অংশ নেন। নারায়ণগঞ্জের আইনজীবী নতুন কোর্ট এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগদান করেন।
সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এতে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো, নজরুল ইসলাম আজাদ, বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন, আজহারুল ইসলাম মান্নান, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া, মাসুকুল ইসলাম রাজিব, শরীফ আহম্মেদ টুটুল ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু প্রমুখ।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, আপনারা সংস্কারের কথা বলে কান ঝালাপালা করে ফেললেন। কী সংস্কার করেছেন জানি না। দরকার হলে বলে দেন বাংলাদেশে আর নির্বাচনের প্রয়োজন নেই। শেখ হাসিনা তো ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিল ভোট ছাড়া। আপনারাও থাকুন, আমরা না করব না। কিন্তু মানুষ আপনাদের ছাড় দেবে না। আমরা গণতন্ত্র চাই, আমরা কথা বলতে চাই।
মির্জা আব্বাস বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কথা হচ্ছে। অনেকে বলে ওমুক ভাইকে সেখানে দেখতে চাই, ওখানে দেখতে চাই৷ বিএনপির কোনো নেতাকর্মী যেন এ সকল কথা না বলে। আমরা জেল খেটেছি, মামলা খেয়েছি এ নির্বাচনের জন্য নয়, জাতীয় নির্বাচনের জন্য। যারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলছে তাদের উদ্দেশ্য একটাই। এটা হয়ে গেলে তাদের অনেক সুবিধা হয়। কারণ গ্রামগঞ্জে অনেকের পায়ের তলায় মাটি নেই। তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন করে পায়ের তলায় মাটি আনতে চান।
তিনি বলেন, আমরা জেনেছি বিডিআর হত্যা হয়েছিল বাইরের একদল প্রশিক্ষিত ও প্রাতিষ্ঠানিক লোকদের দিয়ে। তারা এ দেশে থাকে না। তারা বিদেশ থেকে এসে আমার দেশের ৫৭ জন সেনা সদস্যকে হত্যা করেছে। তাদের বিচার হয়নি। যাদের বিচার হয়েছে তারা আসলে নির্দোষ। জেলে তাদের দেখে আমরা অশ্রু ধরে রাখতে পারিনি। আমি তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাই। তাদের কেন ছাড়া হচ্ছে না আমরা জানি না। আমরা চাই তাদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়া হোক।
মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের দেশের অবস্থা খুব খারাপ। ডাকাতি, ছিনতাই বেড়ে গেছে। কারা করছে আপনারা জানেন। যারা বলে দিনের বেলা আমরা হাঁটতে না পারলে রাতে ওদের ঘুমাতে দেব না। তারাই চক্রান্ত করছে দিল্লিতে বসে কীভাবে এ দেশকে অশান্ত করা যায়। এ দেশের মানুষের ঐক্য আপনারা ভাঙতে পারবেন না। এদেশের মানুষ শান্তি চায়। মানুষ বাঁচতে চায়। আপনারা আমাদের রাতে শান্তিতে ঘুমাতে দিবেন না, লুটপাট করবেন, আগুন দেবেন। চেষ্টা করে দেখুন, মানুষ আপনাদের এত সহজে ছেড়ে দেবে না।
তিনি বলেন, অন্তবর্তী সরকারকে আমরা সবাই তাদের সমর্থন দিয়েছি। আমরা বলেছি এ সরকার ব্যর্থ হলে দেশ ব্যর্থ হয়ে যাবে। আমরা বলেছিলাম নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করব, কিন্তু আজীবন তো অপেক্ষা করব না। একজন বলে বিএনপিকে ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না। আরেকজন বলে যারা নির্বাচন চায় তারা দেশের মঙ্গল চায় না। আরে ১৭ বছর কোথায় ছিলেন আপনি? জনগণ যাকে ভোট দেবে সেই সরকার গঠন করবে। তারা ধরেই নিয়েছে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। বিএনপির জনপ্রিয়তা দেখে কতিপয় ব্যক্তি বিএনপি আওয়ামী লীগের মত হয়ে গেছে বলে। বিএনপিকে ভারতের দালাল বলে। বিএনপি কখনো ভারতের তাঁবেদারি করেনি। ভারতের তাঁবেদারি করলে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আজ জীবিত থাকতেন।