ডেস্ক রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পিকআপভ্যান চাপায় স্বামী বাবুল মিয়া ও স্ত্রী পিয়াঙ্কার মৃত্যুকে ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। রহস্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন তার পরিবারের লোকজন।
পরিবারের দাবি- গত ২৪ ফেব্রুয়ারী সোমবার রাতে সোনারগাঁও উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের মালিপাড়া এলাকায় পিকআপ ভ্যান চাপায় তারা নিহত হোন। ওই দিন সকালে জমি সংক্রান্ত বিরোধে তাদের ভাগিনা বিএনপি নেতা পলাশ মিয়া তাকে পুলিশ দিয়ে ধাওয়া করে। পুলিশী ভয়ে বাড়ি ছেড়ে ঘরের মালপত্র নিয়ে অন্যত্র ভাড়া চলে যাওয়ার পথে একটি অজ্ঞাত পিকআপ ভ্যান চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান। পরদিন বাবুল মিয়ার স্ত্রীও মারা যান।
নিহত বাবুলের বোন মেহেরুন নেছা জানান, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের মিরেরবাগ গ্রামের বাবুল মিয়াকে একটি এনজিও থেকে ঋণ তুলে দেওয়ার কথা বলে পৈত্রিক সম্পত্তি জালিয়াতি করে লিখে নেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে এ নিয়ে তাদের মধ্যে মোকদ্দমা হয়। গত সোমবার সকালে বাবুল মিয়ার পুকুর থেকে মাছ ধরতে গেলে ওয়ার্ড বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক পলাশ মিয়া তালতলা ফাঁড়ি থেকে পুলিশ নিয়ে তাকে ধাওয়া দেয়। পুলিশের ধাওয়ার পর গ্রেপ্তার এড়াতে সারাদিন আত্মগোপনে চলে যায়। জমি সংক্রান্ত ঝামেলা এড়াতে তিনি বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন। পরে তিনি রাত ১০ টার দিকে আসবাবপত্র নিয়ে ভাড়া বাসায় যাওয়ার পথে মালিপাড়া এলাকায় তাদের বহনকারী ভ্যানকে একটি পিকআপ ভ্যান চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এঘটনায় বাবুল মিয়া ও তার স্ত্রী পিয়াঙ্কা মারা যান। ওইদিন থেকে পলাশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের মৃত্যুর পর ধর্মীয় রীতিনীতিসহ সকল কার্যক্রম সে নিজে করছেন। আমাদের পরিবারের লোকজনকে কোন কিছু করতে দিচ্ছে না। তাদের মৃত্যুর আসল রহস্য উদঘাটনের জন্য প্রশাসনের কাজে দাবি জানিয়েছেন।
নিহত বাবুলের ভাতিজা হানিফ মিয়া বলেন, আমার আপন চাচা বাবুল মিয়া। মৃত্যুর দিন সকালেও আমার চাচাকে সম্পত্তি বিরোধে পুলিশী হয়রানী করেছে পলাশ। রাতে পিকআপ ভ্যান চাপায় তারা স্বামী স্ত্রী মারা যান। পলাশের ভূমিকা নিয়ে আমাদের মনে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করে আসল ঘটনা আমাদের জানা দরকার।
জামপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদদক পলাশ মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তাকে ক্ষুদে বার্তা দিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য মো. মোতালেব ভূঁইয়া বলেন, সড়ক দূর্ঘটনায় স্বামী, স্ত্রী মারা যাওয়ার বিষয়টি জানা আছে। নিহতদের সঙ্গে পলাশের জমি সংক্রান্ত বিরোধ এলাকার লোকজনের মুখে শুনেছি।
তালতলা বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফেরদৌস ইসলাম স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে বলেন, সড়ক দূর্ঘটনায় স্বামী স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি আমার জানা আছে। তবে জমি সংক্রান্ত বিরোধে তাদের বাড়িতে পুলিশ গিয়েছিল কিনা জানা নেই।