ডেস্ক রিপোর্ট
‘বিএনপিতে গণতন্ত্র নাই, জাতীয় নির্বাচনে নমিনেশন কোটি কোটি টাকায় বিক্রি হয়’ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীনের দেয়া এমন বক্তব্যের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদ। একই সঙ্গে প্রকাশ্যে নেতাকর্মীদের কাছে ক্ষমা চাইতে আগামী ২৪ ঘন্টা আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাহেদ আহমেদ।
২৮ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার সকালে মহানগরীর ৮নং ওয়ার্ডের পূর্ব এনায়েতনগর এলাকায় যুবদলের এক কর্মী সভায় এই আল্টিমেটাম দেন সাহেদ আহমেদ।
বক্তব্যে সাহেদ আহমেদ বলেন, ‘বিএনপির সাবেক এক এমপি বলেছেন বিএনপিতে নাকি গণতন্ত্র নাই, আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল হল বিএনপি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে গড়া দল। তিনি ছিলেন এদেশের বহু দলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা। আমাদের আদর্শের জননী হল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। উনি এদেশের গণতন্ত্রকে পূর্ণ উদ্ধার করার জন্য ৮০ বছর বয়সেও কিন্তু জেল খাটতে হয়েছে। আমরা কিন্তু তার মুক্তির জন্য কাঁধে কাঁধ রেখে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। আপনাকে যখন জেলা বিএনপির দায়িত্ব দেওয়া হল তখন কিন্তু আপনি এই কথা বলেননি আপনাকে যখন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি করা হয়েছিল তখনও আপনি কিছু বলেননি। কি উদ্দেশ্য নিয়ে আপনি এই কথা বলেছেন আপনাকে অবশ্যই দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে দলীয় সাধারণ নেতাকর্মীদের কাছে ২৪ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। দলকে নিয়ে খেলা করার কারো অধিকার নাই। আমি হই কিংবা যেই হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনাকে তো হঠাৎ করে আওয়ামী লীগ থেকে নিয়ে এসে জনপ্রতিনিধি বানানো হয়েছিল। ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লায় যারা প্রকৃত বিএনপি তারা আপনার দ্বারা বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেনের পরিবার গাজী ইসমাইল হোসেনের পরিবার বিএনপি নামক দল করে তারা কোন ব্যবসায়ী সুবিধা করতে পারে নাই। বিগত ১৭টি বছরের বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে ১৫টি বছর কিন্তু আপনাকে চোখেও দেখা যায়নি। লাস্ট দুই বছরে আপনাকে টেনে এনে দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সবাই মনে করেছিল আপনি পুরনো যে যৌবনের ভুল ত্রুটি ভুলে গিয়ে নেতাকর্মী সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকবেন কিন্তু আপনি ৫ তারিখ পর্যন্ত ঠিকই করেছেন এরপরে আপনি আবার পুরনো চিত্তে ফিরে গেছেন। এরপরে দল তদন্ত সাপেক্ষে আপনার কমিটি ভেঙ্গে দেয়। আবারো পরের কমিটিতে আপনাকে সম্মানিত পদ সদস্য রাখা হয়েছে। সুতরাং আপনার মতন একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি তার থেকে আমরা এ ধরনের বক্তব্যে আশা করি নাই। আপনার এধরনের বক্তব্যে আমাদের বুকে কষ্ট এবং আঘাতও লেগেছে। কারণ বিগত ১৭টি বছর আমরা এই দলের জন্য রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করি। তখন কিন্তু আপনাকে পাইনি কিন্তু আমরা ঠিকই কিন্তু এই দলকে টিকিয়ে রাখতে রাজপথে ছিলাম। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারণ করে আমরা কিন্তু বিএনপির ডাকা প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রাম পালন করেছি।’
সাহেদ আরও বলেন, ‘আমি নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব। অথচ ৫তারিখের পরে আমার রানিং ব্যবসা নিয়ে কি হয়েছে তা আপনারা জানেন। তারপরও কিন্তু আমি আমার দায়িত্বশীল জায়গা থেকে আক্রমণ করে কোন তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে কোনো কিছু বলি নাই। কিন্তু তিনি যেটি বলেছেন এটার প্রতিবাদ না করে পারলাম না কারণ এটা কিন্তু কোন ব্যক্তি না এটা সামগ্রিক। যারা শহীদ জিয়ার আদর্শ বুকে লালন করে বিএনপি রাজনীতি করে তারা অবশ্যই এটার প্রতিবাদ করবে। কারণ তাদের শরীরে এটা লাগে। সুতরাং যারা এই সকল মানুষের পিছনে ঘুরে তারা নির্লজ্জ।’
অনুষ্টানে আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রধান অতিথি মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, যুগ্ম আহ্বায়ক নূরে এলাহী সোহাগ, শেখ মোহাম্মদ অপু, আবদুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন আনোয়ার, সদস্য বাদশা খান, আশিকুর রহমান অনি ও যুবদল নেতা রহমত উল্লাহ প্রমুখ।