যাদের নাম জেলা বিএনপির ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটিতে আলোচনায়

সান নারায়ণগঞ্জ

অচিরেই নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বর্তমান ৫ সদস্যের কমিটিকে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। গত ২ ফেব্রুয়ারী ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর সেই কমিটি ৩১ সদস্যে উন্নতি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। ৫ সদস্যের কমিটিতে সদস্য সচিব না থাকায় কমিটি গঠনের কয়েক দিনের মাথায় ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক  ও ২নং যুগ্ম আহ্বায়ককে বিভিন্ন ইউনিট কমিটি অনুমোদনের ক্ষেত্রে তিনজনের স্বাক্ষরের অনুমতি দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি।

জানাগেছে, গত ২ ফেব্রুয়ারী অধ্যাপক মামুন মাহামুদকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পদে মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুঁইয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, শরীফ আহমেদ টুটুল ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীনকে একমাত্র সদস্য পদে রাখা হয়।

আলোচনায় আছেন ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটিতে কোন কোন নেতা থাকতে পারেন। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানা উপজেলার শীর্ষ নেতারা জেলা বিএনপির কমিটিতে জায়গা করে নিতে কেন্দ্রীয়ভাবে লবিং করে যাচ্ছেন। তবে জেলা বিএনপির ৩১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে থাকতে পারবেন না কেন্দ্রীয় বিএনপির আর কোনো সদস্য ও কেন্দ্রীয় বিভিন্ন পদে যারা রয়েছেন। যেমন- নজরুল ইসলাম আজাদ, মাহামুদুর রহমান সুমন, কাজী মনিরুজ্জামান মনির, আজহারুল ইসলাম মান্নান, শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলম, রেজাউল করিমের মত কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা থাকতে পারবেন না।

আলোচনায় থাকা যেসব নেতাদের মধ্যে ফতুল্লা থানার উল্লেখ্যযোগ্য তারা হলেন- ফতুল্লা থানা বিএনপির বর্তমান সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু, সাবেক আহ্বায়ক জাহিদ হাসান রোজেল, বর্তমান কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন সিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, সাবেক সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম পান্না মোল্লা। জেলা বিএনপির কমিটিতে নিজেদের নাম বসাতে চেষ্টায় আছেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান খোকা ও জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ আকবরও।

আড়াইহাজার থেকে আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি ইউসুফ আলী ভুঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক জুয়েল হোসেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবু, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম ফকির, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লা, কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তার ও জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য আনোয়ার হোসেন অনু আলোচনায় আছেন।

গুরুত্ব পাচ্ছে অধ্যাপক মামুন মাহামুদের নিজ থানা সিদ্ধিরগঞ্জের নেতারা। এখান থেকে জেলা বিএনপির কমিটিতে সদস্য পদে থাকতে পারেন অকিল উদ্দীন ভুঁইয়া, মাসুদুর রহমান মাসুদ, শাহআলম মানিক, রিয়াজুল ইসলাম, গাজী মনির হোসেন, দেলোয়ার হোসেন খোকনের মত নেতারা। সোনারগাঁও থেকে আলোচনায় আছেন ‍জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম টিটু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী সেলিম হক রুমী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল ইসলাম চয়ন।

রূপগঞ্জ উপজেলা থেকেও অনেকের নাম থাকতে পারে জেলা বিএনপির কমিটিতে। যাদের মধ্যে আলোচনায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন, সাধারণ সম্পাদক বাছির উদ্দীন বাচ্চু, সহ-সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, মাহাবুব রহমান, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন। জেলা মহিলা নেত্রীদের মধ্যে আলোচনায় জেলা মহিলা দলের সাবেক সভাপতি নূরুন্নাহার বেগম, মোসলেহা কামাল, বর্তমান আহ্বায়ক রহিমা শরীফ মায়া, সদস্য সচিব রুমা আক্তার।

এদিকে গত ২৪ ডিসেম্বর তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের নেতৃত্বাধীন জেলা বিএনপির কমিটির বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের মাধ্যমে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এর আগে ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীনকে আহ্বায়ক, অধ্যাপক মামুন মাহামুদকে ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক ও গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ২০২৩ সালের ১৮ জুন জেলা বিএনপির সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় গিয়াসউদ্দীন সভাপতি ও গোলাম ফারুক খোকন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হোন।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, তৈমূর আলম খন্দকারকে বিএনপি থেকে বহিষ্কারের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতৃত্বশূণ্যতা দেখা দিলে ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর সাবেক এমপি বিএনপির রাজনীতিতে নিস্ক্রিয় মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীনকে আহ্বায়ক ও জেলা যুবদলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব এবং জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহামুদকে ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক (সাইনিং পাওয়ারসহ) করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় বিএনপি। এর আগে ২০০৯ সাল থেকে বিএনপির রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে গিয়াসের কোনো ভুমিকা ছিল না।

এর আগে ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঘোষিত জেলা বিএনপির কমিটিতে তৈমুর আলম খন্দকারকে আহ্বায়ক ও মামুন মাহামুদকে সদস্য সচিব করে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় বিএনপি। তৈমূর আলমকে বহিষ্কারের পর কিছুদিন ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন মনিরুল ইসলাম রবি এবং এরপর নাসির উদ্দীন। এর আগে ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর জেলা বিএনপির সম্মেলন তৈমূর আলম খন্দকারকে সভাপতি ও কাজী মনিরুজ্জামান মনিরকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ২০১৭ সালে এই কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে কাজী মনিরুজ্জামানকে আহ্বায়ক ও মামুন মাহামুদকে সদস্য সচিব করা হয়।