হাসনাত পরিবারের সঙ্গে ‘ভাও’ দিতে চাচ্ছেন এমপি খোকা!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কারনে সোনারগাঁয়ের ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী পরিবার সেই হাসনাত পরিবারকে অসহায় করে তুলেছিলেন জাতীয়পার্টির বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। হাসনাত পরিবারের বাড়ির ভিতরে দল ক্ষমতাকালীন সময়ে পুলিশ বিজিপির হানার ঘটনাটি ছিল ন্যাক্কারজনক। যার জন্য লিয়াকত হোসেন খোকাকেই দায়ী করেছিলেন হাসনাত পরিবার। নির্বাচনের আগে কঠোর মোশারফ হোসেন এমপি খোকাকে নিয়ে কঠোর বক্তব্য দিয়েছিলেন।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও নৌকার প্রার্থী মোশারফ হোসেনকে পরাজিত করতে মাঠে নেমেছিলেন এমপি খোকা। সেই খোকা এবার হাসনাত পরিবারের সঙ্গে ‘ভাও’ দিতে চাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। এমপি খোকার নির্দেশে যখন মোশারফ হোসেনের রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় তখনি নেতাকর্মীরা এমন মন্তব্য করেন। তারা বলছেন সোনারগাঁয়ে এমপি খোকা রাজনীতিতে টিকে থাকতেই এখন হাসনাত পরিবারের সঙ্গে ভাও দেয়ার চেষ্টা করছেন।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার নির্দেশে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনের রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৪ মে শুক্রবার উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় এ দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

আয়োজকরা বলছেন- মোশারফ হোসেন গত কয়েকদিন যাবত গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। অন্যদিকে এমপি খোকা পবিত্র ওমরাহ হজ পালনের উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার রাতে সৌদি আরব যান। তার নির্দেশে শুক্রবার উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনের রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনায় কামনায় দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এমপি খোকার ভাতিজা জাবেদ রায়হানের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এ দোয়া ও ইফতার মাহফিলে উপজেলা জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

দোয়া ও ইফতার মাহফিলে জাবেদ রায়হান বলেন, আমার চাচা এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা সোনারগাঁয়ে প্রতিহিংসার রাজনীতিকে দাফন করে সুস্থ্যধারা ও উন্নয়ণমুখী রাজনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে আসছেন। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনের অসুস্থতার খবর শুনে তার জন্য দোয়া, মিলাদ ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করার নির্দেশ দিয়েছেন। শুক্রবার তিনি সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে পবিত্র হেরেম শরীফে নামাজ আদায় করে মোশারফ হোসেনসহ গোটা সোনারগাঁবাসীর জন্য দোয়া করেছেন। আপনারাও তার জন্য দোয়া করবেন।

এদিকে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন- সোনারগাঁয়ে এমপি খোকার রাজনীতি পুরোপুরি নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন খোকা। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হন আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। নির্বাচনে কায়সার হাসনাত সমর্থকদের উপর হামলা মামলা নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে। নির্বাচনের মাত্র ৭২ ঘন্টা পূর্বে কায়সার হাসনাতের বাড়িতে পুুলিশ হানা দেয়। অভিযোগ তোলা হয় নির্বাচনে ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছিল। কঠোর বাধার মুখে নির্বাচন থেকে সরে যান কায়সার হাসনাত। ফলে আবারো এমপি হন খোকা।

অন্যদিকে গত ৩১ মার্চ সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান মোশারফ হোসেন। তিনি কায়সার হাসনাতের আপন চাচা। ওই নির্বাচনে এমপি খোকা প্রকাশ্যে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালামের পক্ষে কাজ করেন। এমপি খোকার ঘঠিত জনপ্রতিনিধি ঐক্য ফোরাম কালামকে সমর্থন ঘোষণা করে। এসব কারনে খোকার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে নির্বাচন কমিশণ নির্বাচনে এলাকা ছাড়তে খোকাকে নির্দেশ দেন। নির্বাচনে মোশারফ হোসেনই বিজয়ী হন। এখন সোনারগাঁয়ে খোকার রাজনীতি টিকিয়ে রাখতে মোশারফ হোসেনের অসুস্থ্য নিয়ে এমপি খোকা রাজনৈতিক ফায়দা লুটে নেয়ার চেষ্টা করছেন। মোশারফ হোসেনের জন্য দোয়া মাহফিল করে হাসনাত পরিবারের সঙ্গে ভাও দেয়ার চেষ্টা করছেন বলে নেতাকর্মীদের দাবি।