সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
গত ২৩ মে বৃহস্পতিবার একটি লেখা গণমাধ্যমে সরবরাহ করেছেন নারায়ণঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ডের জনপ্রিয় কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। যা ইতিমধ্যে বেশকটি মিডিযাতে প্রকাশিত হয়েছে। তার লেখায় তিনি ওয়ার্ডবাসীকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন রেখেছেন ‘আমরা আর কবে মানুষ হবো’? অর্থাৎ তিনি এই ওয়ার্ডের মানুষকে অমানুষ করলেন। যেহেতু তিনি প্রশ্ন রেখেছেন আমরা আর কবে মানুষ হবো? তবে তিনি কথাটি চরম ক্ষোভের সহিত প্রকাশ করেছেন। জনপ্রিয় এই কাউন্সিলরের লেখাটি নিম্মে তুলে ধরা হলো-
কাউন্সিলর খোরশেদ তার লেখায় ওয়ার্ডবাসীর উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমত ও নারায়ণগঞ্জবাসীর সহযোগিতায় প্রা দেড় দশক যাবৎ আমি আপনাদের ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে আপানাদের সেবায় নিয়োজিত আছি।’
‘নিজেকে দূর্নীতি ও প্রভাবমুক্ত রেখে অবিরাম চেষ্ঠা করে চলছি ওয়ার্ডবাসীর সর্ব্বোচ সেবা নিশ্চত করার জন্য। বিনিময়ে আপনাদেরও ভালবাসায় ও ¯েœহ সিক্ত হয়েছে। তবে একটি বিষয়ে আপনাদের কাউন্সিলর হিসেবে আমাকে ব্যথিত করছে বরাবর। সেটি হলো গৃহস্থালি আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলা ও ড্রেন-রাস্তা যতœ সহকারে ব্যবহার না করা প্রসঙ্গে।’
‘একজন কাউন্সিলর হিসাবে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি আমার চেষ্টা ছিল ১৩নং ওয়ার্ডটিকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন, বাসযোগ্য ও মানবিক ওয়ার্ডে পরিনত করার। তাই চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি অত্র ওয়ার্ডে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য আমি যতটুকু চেষ্টা ও প্রচার প্রচারণা চালাই তা সারা দেশের কোন জনপ্রতিনিধি করে কিনা আমার জানা নেই।’
‘গত কয়েক বছর যাবৎ গৃহস্থালী আবর্জনা পলিথিনে ভরে রাস্তা ঘাটের যত্রতত্র ও বৈদ্যুতিক খুটির নীচে ফেলে রাখার একটি বাজে প্রবণতা দেখা দিয়েছে। অনেক অনুরোধ, প্রচার প্রচারনা করেও কোনভাবেই প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক নিয়োজিত এনজিওর গাড়ী একটি নির্দিষ্ট সেবা মূল্যের বিনিময়ে ঘরে ঘরে গিয়ে গৃহস্থলী আবর্জনা সংগ্রহ করার পরেও কিছু মানুষ রাস্তা ঘাটে আবর্জনা ফেলে জনজীবনকে দূবির্ষহ করে তুলছে।’
‘এই অপকর্মটি যে শুধু অসচেতন মানুষরাই করছেন তা নয়। শিক্ষিত, সচেতন, সমাজপতি ও ধার্মিকরা সমহারে এই কাজটি করছে। অনেক অনুরোধ করেও যখন কাজ হচ্ছে না তখন আমি মহান আল্লাহতালার দোহাই দিয়ে জনগণের হাতে পায়ে ধরে বিল বোর্ড, ফ্যাস্টুন লাগিয়ে অনুরোধ করেও কোন সুফল পাচ্ছি না।’
‘নিরুপায় হয়ে যে সব স্থানে আবর্জনা ফেলা হয় সেসব জায়গায় ফুল গাছের টব লাগিয়ে বাগান করে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছি। কিছু জায়গায় সফলতা পেলেও কিছু জায়গায় চরমভাবে ব্যার্থ হচ্ছি। জনগণের কোন সহযোগিতাই পাচ্ছি না।’
‘গত এক সপ্তাহে গলাচিপা ও আল্লামা ইকবাল রোডের সংযোগ স্থলে দুইবারে ৬টি ফুলের টব লাগানো হলেও যেখানে আবর্জনা ফেলা তো বন্ধ হয়নি। বরং উক্ত স্থান থেকে দুই দিনে ৬টি ফুলের টব চুরি করে নিয়ে গেছে কে বা কারা। এমনকি আল্লাহর দোহাই দেয়া ফ্যাষ্টুনটিও সরিয়ে ফেলেছে।’
‘‘আমরা নিজেদের পরিবেশ যদি নিজেরা ভাল না রাখি, তবে কে পরিস্কার রাখবে? নিজের গৃহস্থলী আবর্জনা দিয়ে যদি জনগণের চলাচলের রাস্তা ঘাট নষ্ট করি তবে আমাদের শিক্ষিত, সচেতন ও ধার্মিক হয়ে কি লাভ? শিক্ষা ও ধর্ম তবে আমাদের কি শিক্ষা দিলো ? লজ্জা ও ব্যার্থতায় আমার মাথা নীচু হয়ে যায় এত বছরে আমি কি করতে পারলাম ? হাজার হাজার ভোটার আমার পক্ষে আনতে পারলেও, প্রশ্ন থেকে যায় কতজন মানুষকে ভালো কাজের পক্ষে আনতে পারলাম? সকল ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে জানতে ইচ্ছা করে ‘আমরা আর কবে মানুষ হবো’?’’
‘পরিশেষে আল্লাহর দোহাই দিয়ে আপনাদের পায়ে ধরে অনুরোধ করে বলতে চাই দয়া করে যততত্র গৃহস্থলী বর্জ্য রাস্তা ঘাটে না ফেলে নাসিক নির্ধারিত এনজিওর গাড়ীতে আবর্জনা দিন। ড্রেনের উপর ইট বালু রাখবেন না, রাখতে হলে ড্রেনের স্লাবের উপর পলিথিন বিছিয়ে রাখুন। একটি বাসযোগ্য, সুন্দর ও মানবিক ওয়ার্ড তথা নারায়ণগঞ্জ গড়তে সহায়তা করুন।’