সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জে এবার বিএনপির ভিতর থেকে নতুন বিএনপির সৃষ্টি করলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব। তার এই সংগঠনের নাম দিয়েছেন ‘তৃণমূল বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন নারায়ণগঞ্জ জেলা’। ২৮ মে মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ শহরের হোসিয়ারী মিলনায়তনে একটি ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে এই প্রথম এমন ব্যানারে কোন কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেল নারায়ণগঞ্জে। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ।
তবে ‘আসল বিএনপি’ ও ‘তৃণমূল বিএনপি’ নামক সংগঠনের উদ্ভব ঢাকায় হয়েছিল। যা বেশ তোলপাড় শুরু হয়। যে কারনে নারায়ণগঞ্জে যখন ‘তৃণমূল বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন নারায়ণগঞ্জ জেলা’ নামের ব্যানারে কর্মসূচি পালন করা হলো তখন সেই কর্মসূচিতে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি করা হয় তা নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে এই নামের ব্যানারে কর্মসূচি পালন করা হলেও সেখানে উপস্থিত অতিথি সকলেই বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত।
তবে এই নামে বিএনপির কোন অঙ্গ সহযোগী সংগঠন রয়েছে কিনা তা জানতে জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির ও সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে কাজী মনিরের ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায় এবং মামুন মাহামুদ ফোনটি রিসিব করেননি। তবে এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান রোজেলের কাছে জানতে চাওয়া হয় ‘ তৃণমূল বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন নারায়ণগঞ্জ জেলা’ নামে বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠন রয়েছে কিনা। তিবি বলেন, ‘আমার জানামতে এ নামে বিএনপির কোন সংগঠন নেই।’
তবে এ বিষয়ে ভিন্মমত পোষণ করেন মাসুকুল ইসলাম রাজীব। তিনি বলেন, ‘আসলে তৃণমূল বলতে এখানে বুঝানো হয়েছে যেসব নেতাকর্মীদের পদ পদবী নাই এবং যারা দায়িত্বশীল শীর্ষ কোন পদে নাই তাহলে তারা যদি কোন কর্মসূচি পালন করতে চায় তাহলে তারা কোন ব্যানারে কর্মসূচি পালন করবে? যদি জেলা বিএনপির ব্যানারে করা হয় তাহলে বিতর্ক সৃষ্টি হবে। এই বিতর্ক এড়াতেই রুট লেভেলের নেতাকর্মীকেই তৃণমূল বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন বুঝানো হয়েছে অন্য কিছু নয়। এটাকে ভিন্নদিকে নেয়ার কোন সুযোগ নেই। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই বিএনপির নেতাকর্মী।’
জানাগেছে, ২৫ মে সিদ্ধিরগঞ্জে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে মাসুকুল ইসলাম রাজীব উপস্থিত ছিলেন। তার সঙ্গে জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মতের বিরোধ রয়েছে। যে কারনে মাসুকুল ইসলাম রাজীব জেলা বিএনপির কাউন্টার একটি প্লাটফর্ম দাড় করানোর চেষ্টা করছেন বলে অনেকেই জানিয়েছেন। মঙ্গলবার রাজীবের অনুষ্ঠানটি মহানগরীতে অনুষ্ঠিত হলেও এবং তিনি জেলা বিএনপির নেতা হলেও জেলা কিংবা মহানগর বিএনপির শীর্ষ কোন নেতাকে দাওয়াত করেননি। কিন্তু আড়াইহাজারের রাজনীতিতে জড়িত নজরুল ইসলাম আজাদ এবং সেই আজাদকেই করা হয় প্রধান অতিথি।
অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত হয়েছিলেন তারা মুুলত বিএনপির নয় ‘আজাদ ভাই’ এর রাজনীতি করেন। কারন গত বছরের ১৪ মে যেদিন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নারায়ণগঞ্জে কর্মসূচি পালন করার কথা সেইদিন আজাদ আদালতে এসেছিলে হাজিরা দিতে। কিন্তু আজাদকে চেহারা দেখাতে এসব নেতাদের অনেকেই সহ কয়েকশ নেতাকর্মী আজাদের পাশে দাড়ান আদালতপাড়ায়। কিন্তু বিকেলেই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিতে আসেননি তাদের একজনও! আজাদ অনুগামী নেতাদের কাছে খালেদা জিয়ার চেয়ে আজাদই বড় বলে মন্তব্য করেছিলেন বিএনপিরই অনেক নেতাকর্মী।
জানাগেছে,‘তৃণমূল বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন নারায়ণগঞ্জ জেলা’ এর আয়োজনে এ ইফতার মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজল, জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, মহানগর যুবদল সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ মহিলা দলের আহ্বায়ক নুুরুন্নাহার বেগম, মহানগর মহিলাদলের সদস্য সচিব ও কাউন্সিলর আয়েশা আক্তার দিনা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, নারায়ণগঞ্জ মহানগর সেচ্ছাসেবকদল সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত ইসলাম রানা, নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহমেদ, মহানগর যুবদল নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি, আড়াইহাজার যুবদলের আহ্বায়ক জুয়েল আহমেদ ও নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদল সিনিয়র সহ সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ প্রমূখ।