এক মঞ্চে ওঠে ঐক্যের শ্লোগানে মহানগর ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলে গ্রুপিং কোন্দল বিভক্তি আলোচনা সমালোচনা ও বিতর্ক মাটিচাপা দিয়ে এবার এক মঞ্চে ওঠেছেন সকল শীর্ষ নেতারা। সেই সঙ্গে উপস্থিত হয়েছেন তাদের অনুগামী নেতাকর্মীরাও। যে কারনে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা এবং ছাত্রদলের সাবেক নেতৃত্বাধানকারী নেতারাও মহানগর ছাত্রদলের এমন ভুমিকাকে প্রশংসা করেছেন। ছাত্রদলের সাবেক নেতারা বলেছেন- এভাবেই মহানগর ছাত্রদল ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামীতে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্রের মুক্তির আন্দোলনে ভুমিকা রাখবে।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জে এবার ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ব্যাপক অংশগ্রহণে পালন করেছে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৮তম শাহাদাত বার্ষিকী। একই সঙ্গে কারাগারে থাকা বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থ্যতা কামনা ও তার মুক্তির দাবিও করা হয় জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকীর কর্মসূচিতে। এই কর্মসূচিতে প্রথম দফায় ছাত্রদলের বিরোধ মিটিয়ে বিতর্ক মাটি দিয়েছেন মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রহমান বাবু।

গত ২১ মে নারায়ণগঞ্জ শহরের একটি রেস্তোরায় মহানগর ছাত্রদলের যেসব নেতারা মহানগর ছাত্রদলের ব্যানারে ইফতার ও দোয়া মাহফিল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহমেদ ও সেক্রেটারি মমিনুর রহমান বাবুকে ছাড়াই করেছিলেন সেইসব নেতাদেরকেও সম্পৃক্ত করেছেন সাহেদ ও বাবু। মহানগর ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখে উপস্থিত বিএনপির শীর্ষ নেতারা নেতৃত্বের প্রশংসাও করেছেন। সেই সঙ্গে আগামীতে এমন কর্মসূচির অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদের রাজপথের আন্দোলনে দেখতে চান বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মুল দলের নেতারা।

১ জুন শনিবার নারায়ণগঞ্জ শহরের হোসিয়ারী মিলনায়তনে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৮তম শাহাদাত বার্ষিকী এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থ্যতা কামনা ও তার মুক্তির দাবিতে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুুষ্ঠিত হয়।

ছবি- বক্তব্য রাখছেন মহানগর বিএনপির সেক্রেটারি এটিএম কামাল।

অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রহমান বাবুর পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সেক্রেটারি এটিএম কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম মজনুু, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান রোজেল, মাসুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর যুবদলের সভাপতি কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, মহানগর বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজল, মহানগর বিএনপি নেতা মাহাবব উদ্দীন তপন, জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন সিকদার, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউসার আশা, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি, সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সজীব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান শান্ত।

ছবি- সভাপতির বক্তব্য রাখছেন মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহমেদ।

এ ছাড়াও এ অনুষ্ঠানে এসে সংহতি প্রকাশ করে গেছেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত আইনজীবী নেতা ও মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। তিনি অন্য একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকায় মহানগর ছাত্রদলের অনুষ্ঠানে এসে সকলের সঙ্গে সাক্ষাত করে যান।

ছবি- অনুষ্ঠান পরিচালান করছেন মহানগর ছাত্রদলের সেক্রেটারি মমিনুর রহমান বাবু।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আবুল কালাম মহানগর ছাত্রদলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ২০০৬ সালের পর আজকে ২০১৯ সাল। যেখানে দীর্ঘ ১৩ বছরে মধ্যে নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদলের এ রকম সমাবেশ হয়েছে কিনা আমার জানা নাই। এটা দেখে আমরা মনে করি আমরা যারা বিএনপি করি এঁটা দেখে আমাদের শেখার বিষয় আছে। আমরা যারা পদ আনার জন্য নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি করি, আমাদের যে গ্রুপ রয়েছে, ব্যক্তির রাজনীতি করি, ওমুকের গ্রুপ, তুমুকের দল, কিন্তু আজকে ছাত্রদল প্রমাণ করে দিয়েছে যে অংক কাকে বলে।

ছবি- বক্তব্য রাখছেন মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাফিউদ্দীন রিয়াদ।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রদলের আজকের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে নেতাকর্মীরা জিয়াউর রহমানের প্রতি অন্ধ হয়ে গেছেন। বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি অন্ধ ভক্ত হয়ে গেছেন। নতুবা এমন জমায়েত হতো না। কিন্তু আজকে এই সরকার রাজপথের এমন পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন যেখানে এইসব নেতাকর্মীদের আত্মবিকাশ প্রকাশের সুযোগ নাই। এইযে গণতন্ত্রের অবক্ষয় এ থেকে উত্তোরণের জন্য বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির কোন বিকল্প নাই। তিনিই একমাত্র পারবেন গণতন্ত্রের মুক্তি ঘটাতে।

ছবি- বক্তব্য রাখছেন মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলামিন প্রধান।

বিশেষ অতিথি এটিএম কামাল বলেন, আমরা যা করতে পারিনি আজকে মহানগর ছাত্রদল সেটা করে দিয়েছে। জেলা বিএনপি, মহানগর বিএনপির সকল অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের একটি মঞ্চে বসিয়েছে মহানগর ছাত্রদল। এটা তাদের জন্য একটি সফলতা। আজকে এই দিনে আমরা একসাথে বসেছি, আর এই বসা থেকেই শুরু হবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন। সেই আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধভাবে সূচনা হবে এখান থেকেই। আমরা সেই আশাবাদ ব্যক্ত করি।

আব্দুস সবুুর খান সেন্টু বলেন, বিএনপির ভ্যানগার্ড ছাত্রদল আগামী আন্দোলনে অগ্রণী ভুমিকা পালন করবে। আজকের এই ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি আগামী আন্দোলনে উৎসাহ জাগাবে।

ছবি- বক্তব্য রাখছেন মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুর রহমান সাগর।

এসময় মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সেক্রেটারি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মহানগর ছাত্রদল নেতা রাফিউদ্দীন রিয়াদ, আলামিন প্রধান, রাকিবুর রহমান সাগর, মাহামুদুর রহমান সুমন, মাকুসুদুল রহমান, জুয়েল রানা, দর্পন প্রধান, মোক্তাদির আহমেদ হৃদয়, নাদিম পারভেজ অন্তু, রাসেল আহমেদ সহ ছাত্রদলের কমিটির দুচারজন ছাড়া বাকি সবাই।