দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছেন, সবাই আমার মেয়াদকাল সাড়ে ৪ বছর বলেও আসলে আমি মাত্র ৪ বছর কাজ করতে পেরেছি। বাকি ৬ মাস একটি দলের আন্দোলনের কারনে রাজনৈতিক অস্থিরতা, নিজের অসুস্থ্যতা এবং নভেম্বর, ডিসেম্বর ২ মাস কাজ করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সময় নষ্ট হচ্ছে। তাই এখন থেকে কথা কম বলে আর কাজ বেশি করতে চাই। আর অতীতে আমার যে ভুল হয়েছে ভবিষ্যতে আমি আর সেই ভুল করতে চাই না। অতীতের মত ভবিষ্যতেও আমি গোলামী করে যেতে চাই। তবে আর শুধুমাত্র নেতাদের সাথে কথা বলবো না এখন থেকে যাদের জন্য গোলামী করবো সেই আপনাদের প্রত্যেকের সাথে কথা বলবো। আপনাদের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়ন কাজ করবো।
৮ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে বন্দর ইউনিয়নবাসীর উদ্যোগে কুশিয়ারী এলাকায় হাজী আব্দুল মালেক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত ১৬ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পাশাপাশি অতীতে কাজ করতে গিয়ে অজান্তে কোন ভুলে কারো মনে কষ্ট পেয়ে থাকলে তিনি এ জন্য সকলের উদ্দেশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহম্মেদ এর সভাপতিত্বে উক্ত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এমপি সেলিম ওসমানের সহধর্মিনী মিসেস নাসরিন ওসমান। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর এমপি সেলিম ওসমানের কোন সভা মঞ্চে প্রথমবারের মত যোগ দিয়েছেন বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল।
বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুল আলোচনা সভায় যোগ দেওয়ায় এমপি সেলিম ওসমান তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাদের মধ্যে এমন সুসম্পর্ক যেন অটুট থাকে সকলের কাছে সেই দোয়া কামনা করেন। সভায় আতাউর রহমান মুকুল এসেছেন এতেই সেলিম ওসমান খুশি হয়েছেন বলে ঘোষণা দেন এবং উনাকে আজকে কোন বক্তব্য দিতে হবেনা বলে মন্তব্য করেন। কারন ২ নভেম্বর ময়মনসিংহপট্টি মাঠে বন্দরের সর্বস্তরের জনগনের উদ্যোগে ‘দল যার যার সেলিম ওসমান সবার’ স্লোগানে আয়োজিত সমাবেশে আতাউর রহমান মুকুলই নির্বাচনে প্রার্থী হতে সেলিম ওসমানকে সব থেকে বেশি চাপ দিয়ে ছিলেন তাই নতুন করে আর কিছু বলার প্রয়োজন নেই। কারন যারা আমার সাথে কাজ করেছেন রশিদ ভাই, জাহের ভাই, আতাউর রহমান মুকুল কেউ আমাকে ছেড়ে যাবেন না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মিসেস নাসরিন ওসমান বলেন, আমি এমপি সেলিম ওসমানের পক্ষে ভোট চাইতে আসি নাই। আপনার উনার জন্য শুধু দোয়া করবেন। উনি যেন সুস্থ্য থাকেন আল্লাহ যেন উনাকে দীর্ঘ হায়াত দান করেন। উনাদের প্রতি আপনাদের বন্দরের মানুষের ভালবাসা আমি দেখেছি। আপনারা যদি মনে করেন অতীতের মত ভবিষ্যতেও সেলিম ওসমানকে আপনারা পাশে পাবেন, উনাকে দিয়ে এলাকার উন্নয়ন হবে, সাধারণ মানুষ উপকৃত হতে পারবেন তাহলে আপনারা একটু বিবেচনা করে দেখবেন, আমি বলবো না উনাকে ভোট দেন। আসলে মার্কাটাই বড় ব্যাপার না। মার্কাটা হাতে নিয়ে কে দাড়িয়ে আছেন সেটাই বিবেচনা করে দেখতে হবে। আপনার ভোট আপনি দিবেন যাকে খুশি তাকে দিবেন। আপনারা শুধু উনার জন্য দোয়া করবেন। পাশাপাশি আপনারা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করবেন উনি যেন আগামীতেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিম ওসমান আরো বলেন, আমাদের সকলের উচিত নারীদের সম্মান করা। প্রতিটি স্বামী যদি তার স্ত্রীর সাথে বন্ধুর মত সুসম্পর্ক রাখেন তাহলে দেখবেন সব কিছুতেই আপনারা সফল হবেন। আমি কখনো এলাকার মানুষের জন্য ভাল কোন কাজের জন্য অনুদান দিয়ে বাসায় ফিরলে আমার জন্য আমার স্ত্রী সহ আমার তিন মেয়ে আমার পছন্দের ভাল ভাল খাবার রান্না করে উপহার দেন। এতো ভাল ভাল খাবার উপহার পাওয়ার লোভে আমি আরো বেশি ভাল কাজ করতে চাই।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের আর ঘরে বসে থাকলে চলবে না। আপনারা নিজেরাই একেক জন সেলিম ওসমান হয়ে প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করবেন এবং সবাইকে বুঝাবেন আগামী আবারো কেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং উনার মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করা প্রয়োজন।
মত বিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম.এ রশিদ, মহানগর আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন, জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক আফজাল হোসেন, মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান, জেলা আওয়ামী মহিলালীগের সভানেত্রী ড. শিরীন বেগম, মহানগর আওয়ামী মহিলালীগের সভানেত্রী ইসরাত জাহান খান স্মৃতি, জেলা মহিলা পার্টির সভানেত্রী আঞ্জুমান আরা ভূইয়া, মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা।