সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
কোন স্বামীকে তার স্ত্রীর ইচ্ছায় তালাক প্রদান করলে তারপরেও কেন স্ত্রী দেনমোহর পাবেন এমন প্রশ্ন রেখে তা বাতিল চেয়ে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন করা হয়েছে।
২৩ জুন রবিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে স্ত্রী ডিভোর্স দিলে দেনমোহরের টাকা পাবে কেন? এমন প্রশ্ন রেখে তা বাতিল দাবি বাংলাদেশ মেন’স রাইটস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মানববন্ধনটি করা হয়।
উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান জেএইচ খান শাহীন, মহাসচিব প্রকৌশলী ফারুক শাজেদ শুভ, ঢাকা মহানগর কমিটির লিটন গাজী, মাজেদ ইবনে আজাদ, সাকসেস হিউম্যান রাইটস সোসাইটির চেয়ারম্যান মোঃ সোবহান বেপারী, নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মীর আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ তথ্য ও মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মোঃ রাশেদুজ্জামান, হাকিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর প্রমুখ। উক্ত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান শেখ খায়রুল আলম।
সংগঠনের চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের দেশে সাধারণত বিয়ের সময় পাত্রী পক্ষ জোরপূর্বক পাত্রকে সাধ্যের অতিরিক্ত টাকা কাবিন নামায় ধার্য করতে বাধ্য করেন। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব কাবিন হয় বাকিতে। অর্থাৎ দেখা গেল কনে পক্ষের দাবী অনুযায়ী, কাবিন করা হল ১০ লাখ। এর মধ্যে গহনা ও অন্যান্য জিনিস বাবদ ২ থেকে ৩ লাখ টাকা পরিশোধ দেখিয়ে পুরোটাই বাকি রাখা হয়। যদিও ইসলামী বিধান হল বিয়ের সময়ই দেনমোহর পুরোটা পরিশোধ করা। তবে এই কথা শুনে কে? বাকি থাকা বা বাড়তি এই দেনমোহর পরে কাল হয়ে দাড়ায়।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন কেস স্টাডি থেকে জানা গেছে, অতিরিক্ত দেনমোহরের কারণে স্বামী তার স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনের অনৈতিক দাবী মেনে নিতে বাধ্য হন।
তিনি বলেন, পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারার আয়াত নং-২২৯ অনুসারে যদি কোন স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে মুক্ত হতে চান তবে কোন কিছুর বিনিময় হতে হবে, যা তার মোহরানার অতিরিক্ত হবে না। তাই ইসলাম অনুসারে দেখা যায়, স্ত্রী কর্তৃক স্বামী ক্ষতিগ্রস্থ হলে স্ত্রী স্বামীকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য। কিন্তু আমাদের দেশীয় আইন অনুযায়ী স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাক প্রদান করা হলেও স্বামীকে দেনমোহর প্রদান করতে হয়, যা ইসলামের সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই আইনটিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে কিছু সংখ্যক দুঃশ্চরিত্র নারী বিয়ের নামে কাবিনের ব্যবসা করছে। ঐ সমস্ত নারীরা বিয়ে করে এবং ১ মাস পরে স্বামীকে তালাক দিয়ে কাবিনের টাকা আদায় করছে। এই রকম অনেক অভিযোগ আমাদের কাছে আছে। আমরা নিরুপায়। কারণ আইনে আছে স্বামীকে কাবিনের টাকা পরিশোধ করতে হবে। লন্ডন প্রবাসী এক নারী প্রতি বছর বাংলাদেশে এসে বিয়ে করে কাবিনের ২০ লাখ টাকা নিয়ে যায়। যার শিকার হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার দেলপাড়া গ্রামের একজন ভুক্তভোগী ভাই। অনেক নারী কাবিনের ব্যবসা করে কোটিপতি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে। তমা নামের বি গ্রেডের এক নায়িকা কাবিনের ব্যবসা করে কোটিপতি হয়েছে। এই প্রতিবেদনে আমার সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়েছে। গত ৪ মার্চ বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার শেষের পাতায় ‘বিয়ে তার পেশা’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাই বহু বিবাহ রোধে বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন ডিজিটালাইজেশন করা হোক। এভাবে চলতে পারে না। বাংলাদেশ মেন’স রাইটস ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে এই আইনটির সংশোধনের দাবী জানাচ্ছি।