সান নারায়গঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লায় সাংবাদিক পরিচয়দানকারী ৯ প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১ জুলাই সোমবার পৃথক দুটি স্থান থেকে এই ৯ প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ জানায়, গত ৩০ জুন রবিবার নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা মডেল থানাধীন কুতুবপুর রঘুনাথপুর এলাকায় মৃত গোলাম জিলানীর মেয়ে সুপ্রিয়া বেগমের বাসায় তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানার শেকেরপাড়া এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে রুহুল আমিন, ফতুল্লার পূর্ব ইসদাইর এলাকার মৃত এমএম আব্দুল লতিফের ছেলে বাবু সরদার, পূর্ব ইসদাইর বুড়ির দোকান এলাকার মৃত সিদ্দিক মিয়ার ছেলে শরীফ, কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার থানার বায়তী উত্তরপাড়া এলাকার মৃত হায়দার খানের ছেলে মোঃ সাইফুল ইসলাম, বন্দর থানার বাগবাড়ি এলাকার শাহ জালালের ছেলে ফয়সাল গ্যাসের সংযোগ সহ চুলা দেখতে চায়।
বাসার মালিক আসামীদের নিকট পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে আসামীগণ পরিচয়পত্র না দেখিয়ে বলে যে, ‘আপনার গ্যাস সংযোগটি অবৈধ, গ্যাসের সংযোগটি আমরা বন্ধ করে দিব, যদি সংযোগটি চালু রাখতে চান তাহলে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে।
উক্ত ব্যক্তিদের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় বাড়ীর মালিক সুপ্রিয়া বেগমের ভাই গোলাম মেহেদী হাসান তুহিন স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় বর্ণিত ব্যক্তিদের আটক করে ফতুল্লা থানা পুলিশকে সংবাদ দেয়।
ফতুল্লা থানা পুলিশ এসে উক্ত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তাদের উপরোক্ত নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে। পুলিশ কর্তৃক আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা পলাতক আসামী চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থানার মোহাম্মদপুর এলাকার মৃত সোলেমান মজুমদারের ছেলে মোঃ ইরান মজুমদার পলাতক আসামীর মদদ ও পরামর্শক্রমে অভিযুক্তরা তিতাস গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোঃ নারায়ণগঞ্জের কর্মকর্তা সেজে উক্তরূপ কাজ করেছে মর্মে স্বীকার করে। আসামীদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। আসামীদের ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
অন্যদিকে একই দিন নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা মডেল থানায় কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার অশ্বদিয়া এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে মোঃ সেলিম নিজামী, ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার রাজগাতি পূর্বপাড়া এলাকার তাহের উদ্দীনের ছেলে মোঃ শফিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার নূরবাগ এলাকার আবেদ আলী আকন্দের ছেলে ইউসুফ, কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার অশ্বদিয়া এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে মাসুদ মিয়া নিজেদেরকে দৈনিক ‘গণজাগরণ ও অপরাধের খোঁজে’ পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ফতুল্লা মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আজিজুল হকের কাছে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করে। অন্যথায় তারা তাদের পত্রিকার মাধ্যমে লেখালেখি করে বিভিন্ন ধরণের ক্ষতি করার হুমকি দেয় এবং গোপনে ভিডিও ধারণ ও কথা রেকডিং করার চেষ্টা করে।
এক পর্যায়ে পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আজিজুল হকের সন্দেহ হলে তাদের পত্রিকার কাগজপত্র সহ পরিচয়পত্র দেখাতে বললে তারা কোন প্রমাণ সাপেক্ষ কাগজপত্র ও পরিচয়পত্র দেখাতে পারেনি। কথিত সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা নিজেদেরকে ভূয়া সাংবাদিক বলে স্বীকার করে।
অভিযুক্তরা পরস্পর একই উদ্দেশ্যে তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাস নং- ঢাকা মেট্রো-চ-৫৩-১৬১০ এর গায়ে ‘অপরাধের খোঁজে’ পত্রিকার ষ্টিকার লাগিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রতারণাপূর্বক গোপনে ভিডিও ধারণ করে চাঁদা দাবী ও আদায় করে মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে। তারা ধর্তব্য অপরাধে জড়িত থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়।