সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার আওয়ামীলীগের একক নিয়ন্ত্রক এখন স্থানীয় তিন বারের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু। এখানে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে এমপি বাবুর সঙ্গে বেশ লড়াই করেছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজ। বর্তমানে আড়াইহাজারে তার রাজনৈতিক অস্তিত্ব বেশ সংকটে পড়েছে। এখানে অনেক আগেই অস্তিত্ব হারিয়েছেন সাবেক এমপি এমদাদুল হক ভূঁইয়া ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাবেক সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সাবেক রাষ্ট্রদূত মমতাজ হোসেন। মমতাজ হোসেন গত নির্বাচনে নিজে মনোনয়ন প্রত্যাশা করলেও এমদাদুল হক ভূঁইয়া কাজ করেছিলেন ইকবাল পারভেজের পক্ষেই।
এদিকে উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার ওই নির্বাচনের আগে এমপি বাবুর কঠোর বিরোধীতা করলেও ইকবাল পারভেজের সঙ্গ ছেড়ে এখন তিনি গাঁ ভাসিয়েছেন এমপি বাবুর সঙ্গে। এদিকে এমপি বাবু নির্বাচিত হলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতিও। ফলে আড়াইহাজারে এমপি বাবুর অবস্থান যত পাকাপোক্ত হচ্ছে ততই ইকবাল পারভেজের রাজনৈতিক অস্তিত্ব সংকটের দিকে পড়ছেন।
অন্যদিকে আড়াইহাজার আওয়ামীলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা বলছেন- জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে আড়াইহাজারে ইকবাল পারভেজের জনপ্রিয়তাই ছিল বেশি। বিশাল বিশাল শোডাউন করেছিলেন তিনি। নেতাকর্মীরাও তার দিকে ভিড়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন না পাওয়ায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনিও কিছুটা হতাশ। আড়াইহাজারে নেতাকর্মীরা এমপি বাবুর বিরোধীতা পরিরর্তনের শ্লোগান তুলে ইকবাল পারভেজের দিকেই ভিড়েছিলেন নেতাকর্মীরা। এমনকি আড়াইহাজারের বেশ কজন প্রভাবশালী নেতাও ইকবাল পারভেজের পক্ষে কাজ করেছিলেন। মাঠের পরিস্থিতি অনেকটা শক্ত করেছিলেন ইকবাল পারভেজ।
নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, জাতীয় নির্বাচনের পর ইকবাল পারভেজ নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত খোজ খবর রাখছেন। তবে নির্বাচনের আগে তিনি যেভাবে নেতাকর্মীদের সাহস জুগিয়েছিলেন এবং খোজ খবর নিতেন সেটা থেকে তিনিও সরে গেছেন। এমন পরিস্থিতিতে তৃতীয় বারের মত নজরুল ইসলাম বাবু এমপি নির্বাচিত হয়ে আড়াইহাজারের পুরো রাজনীতি তার দিকেই নিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে এমপি নজরুল ইসলাম বাবুকে সভাপতি নিবাচিত করা হয়। নেতাকর্মীদের দাবি- আবারো ইকবাল পারভেজ ঠিক সময়ে আড়াইহাজারের নেতাকর্মীদের নিয়ে তার অস্তিত্বের জানানি দিবেন।
এর আগে আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পদে শাহজালাল মিয়া ও সেক্রেটারি পদে অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ ভূঁইয়া দায়িত্ব পালন করেছেন। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এই দুজনও চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু মনোনয়ন পান মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার যিনি ইকবাল পারভেজের পক্ষে কাজ করেছিলেন। নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে শাহজালাল মিয়া মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করলেও পরবর্তীতে তিনি মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেন এবং হেলো সরকার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ফলে শাহজালাল মিয়া ও আব্দুর রশিদ ভূ্ইঁয়ার রাজনীতিও সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। জাতীয় নির্বাচনের আগে শাহজালাল মিয়া ও রশিদ ভূঁইয়ার সঙ্গে এমপি বাবুর সম্পর্কের টানাপোড়ানও হয়েছিল। এই দুুজনকে সরিয়ে এমপি বাবু নিজেই উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে বসলেন।