সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লায় বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাহিদা বারিক। তিনি সদর উপজেলার পক্ষ হতে অর্ধশতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করেন।
২ আগস্ট শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কার্যালয়ে অর্ধশতাধিক পরিবারকে চাল বিতরণ করা হয়।
অগ্নিকান্ড ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে চাল বিতরণকালে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত প্রশাসক (রাজস্ব) মো: সেলিম রেজা। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
এসময় ইউএনও নাহিদা বারিক বলেন, অগ্নিকান্ডের সংবাদ পেয়ে ভোর চারটায় তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে যান জেলা প্রশাসক মো: জসিম উদ্দিন স্যার। পরে জেলা প্রশাসক স্যার অগ্নিকান্ডে সূত্রপাত সহ নানা ধরণের খোজখবর নেন এবং অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। আর সকাল ৬টার দিকে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে খোজ খবর নিয়ে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি করে তাদের প্রত্যেক পরিবারকে সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়। পরে দুপুরে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ৪৮টি পরিবারকে সদর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে প্রতিটি পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়।
এর আগে ১ আগস্ট বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় জেলা কারাগার সংলগ্ন একটি বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসময় আগুনে প্রায় ৭০/৮০টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে অল্পের জন্য ভয়াবহ আগুন থেকে রক্ষা পেয়েছে একটি সিএনজি পাম্প ও জেলা কারাগার সহ জেলা রেজিস্ট্রি অফিস। ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জের ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট এক ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়। তবে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ ও বস্তিবাসীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের কাছে সিএনজি পাম্প সংলগ্ন জলাধারের উপর মুলি বাশ ও টিন দিয়ে তৈরি ভাসমান অবস্থায় গড়ে উঠা এই বস্তিতে বেশ কয়েকটি টং দোকান, ঝুটের গুদাম ও বাড়ি সহ প্রায় ৭০/৮০ টি স্থাপনা পুড়ে যায়। এ বস্তিতে কয়েকমাস আগেও ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় অন্তত ৩০/৩৫টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এছাড়াও প্রতি বছর এ বস্তিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। আর আগুন লাগার সাথে সাথে মূহুর্তের মধ্যে পুরো বস্তি এলাকা ছড়িয়ে পড়ে।
এসময় ধোয়ায় আশপাশের প্রায় দুই তিন কিলোমিটার এলাকা ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। বস্তিবাসীরা সহ শত শত মানুষ মধ্য রাতে লিংক রোডে এসে অবস্থান নেয়। আতঙ্ককে ছোটাছুটি করতে থাকেন বস্তির লোকজন। বস্তির পাশেই একটি সিএনজি স্টেশন থাকায় মানুষ আরো বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
আগুনের খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের মন্ডলপাড়া, হাজীগঞ্জ ও আদমজী ফায়ার স্টেশনের সাতটি ইউনিটের দমকল বাহিনীর কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। এসময় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে এক ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। ঢাকা থেকে আসা এবং দূরপাল্লার অর্ধ শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারি পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, সাতটি ইউনিটের এক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে। তবে আগুনে কেউ হতাহত হয়নি। আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান তদন্তের পর নিশ্চিত করে বলা যাবে।