সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের ছাত্রলীগ যখন নানা প্রসংশনীয় কাজ করে সুনাম রক্ষা করছেন তখন খোদ এক আওয়ামীলীগ নেতা সেই ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্ক করলেন। নতুন করে এই বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেছেন, আজ ছাত্রলীগের অবস্থা দেখলে কষ্ট হয়। যাদের চৌদ্দ পুরুষ আওয়ামীলীগ করে নাই, তারা আজকে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে চলে আসছে। যারা মাধ্যমিক স্কুল কিংবা কলেজের গন্ডি পেরোয়নি তারাও ছাত্রলীগের নেতৃত্বে চলে আসে। এই যদি হয় অবস্থা তাহলে ৭৫’র পর আরেকটা ৭৫ এর অবস্থা হওয়া ক্ষীণ নয়। আমরা ১৯৭৫ সালে ১৫ তারিখে বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি শেখ হাসিনাকে আর হারাতে চাইনা।’
এর আগে আনোয়ার হোসেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু সেদিন বলেছিলেন সোনার বাংলা গড়তে হলে হলে সোনার মানুষ দরকার। স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত এসে আজও আমরা সোনার মানুষ তৈরী করতে পারি নাই। তাই আমরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রতিবাদ করতে পারি নাই। এখনও আমরা সোনার বাংলায় সোনার মানুষ তৈরী করার চেষ্টা পর্যন্ত করি না। কেননা, এখন রাজনীতি ব্যবহার করে অনেকে দলীয় পদ নিয়ে সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি করে বেড়ায় আর আমরা তাদের প্রশ্রয় দেই। আমাদের এখনও শিক্ষা হয় নাই। আমরা সোনার মানুষ তৈরী করতে হলে ভাল মানুষ দেখে নেতৃত্ব তৈরী করতে হবে।
১৭ আগস্ট শনিবার নারায়ণগঞ্জ বন্দরের সোনাকান্দা এলাকায় থানা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবেদ হোসেনের বাসভবনের সামনে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি তরুণ প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে বলেন, স্বাধীন বাংলার মাটিতে রাজাকারদের গাড়িতে মুক্তিযুদ্ধের পতাকা, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি গোলাম আজমের মত লোকদের বাংলাদেশে আমদানী করেছিল কারা করেছিল? তারা কিন্তু এখনও মরে নাই। আমাদের মধ্যেই বিরাজমান। তারা আমাদের মিটিংয়ে আসে, তারাই আমাদের মিছিলে আসে। তারা শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু শ্লোগান দেয়। আর শ্লোগান দেয় আমার ও অন্যান্য ভাইদের। অনেক জামাত শিবির ও বিএনপির লোকেরা আওয়ামীলীগের সমাবেশে মিছিল নিয়ে যাচ্ছে আমার শ্লোগান দেয়, ভাইদের শ্লোগান দেয় তাদের চিহিৃত করতে হবে। আমার নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন আমাদের দলে অনেক ত্যাগী কর্মী রয়েছে তাদের মূল্যায়ন করুন। অন্য দলের লোকদের আমদানী আমাদের দরকার নাই। কিন্তু আমরা কেউ কেউ নিজের শ্লোগান ও পেশিশক্তি বৃদ্ধি করার জন্য ওইসব জামাত-বিএনপির লোকদের দলে আমদানী করি। জননেত্রী শেখ হাসিনার ক্লিয়ার কথা ওইসব লোকদের ছাড় দেয়া হবেনা। আসুন এই শোকের মাসে প্রতিজ্ঞা করি শেখ মুজিবকে হারিয়েছি শেখ হাসিনাকে হারাতে চাই না।
বন্দর থানা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবেদ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা।
মহানগর আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাবিব আল মুজাহিদ পলুর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন- মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক জিএম আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদা মালা, ২৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা সামসুজ্জামান, মুছাপুর ইউনিয়ণ আওয়ামীলীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, বন্দর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, ২০নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা এমএ কাউয়ুম, ২২নং ওয়ার্ড শ্রমিকলীগ সভাপতি দেওয়ান মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক রনি প্রধাণ, মহানগর যুব মহিলালী নেত্রী নুরুন্নাহার সন্ধ্যা, ২১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেত্রী রাশিদা বেগম, ২৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেত্রী সিমলা, ২১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা মনিরুজ্জামান খোকন, বন্দর উপজেলা যুবলীগ নেতা মাহমুদুল হাসান জুয়েল প্রমূখ।
পরিশেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া পাঠ করা হয়। দোয়া শেষে দুস্থ্যদের মাঝে রান্না করা খিচুরী বিতরণ করা হয়।