সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
আদালতের নির্দেশ অমান্য করে নারায়ণগঞ্জ শহরের রহমতউল্লাহ মুসলিম ইন্সটিটিউটের ভবন ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগে ভায়োলেশন মিস মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভী ও জেলা প্রশাসক জসিমউদ্দিন সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে সমন জানি করেছেন আদালত।
বিবাদীদের আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর স্বয়ং উপস্থিত হয়ে অথবা উকিলের মাধ্যমে জবাব দিতে বলা হয়েছে। ভেঙ্গে ফেলা ওই ভবনের ১৪ জন দোকানদার মালিক ওই ভায়োলেশন মামলাটি দায়ের করেন।
২৮ আগস্ট বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সহকারী জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক মো: শাকিল আহমেদ এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট অমিতাভ।
মেয়র আইভী ও জেলা প্রশাসক সহ মামলায় বিবাদী করা হয়েছে- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), নেজারত ডেপুটি কালেক্টর, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডেপুটি ডিরেক্টর, সমাজ সেবা কার্যালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, রহমতউল্লাহ মুসলিম ইন্সটিটিউটের এডহক কমিটির সদস্য রাশেদুল ইসলাম রাশু, আবদুস সাত্তার ও নুরুল ইসলামকে। তাদের প্রত্যেককে জবাব দিতে বলা হয়েছে ওই আদেশে।
এদিকে নোটিশ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সিইও এহতেশামুল হক বলেছেন, আমরা নোটিশ পেয়েছি, আদালতে জবাব দিব।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাসুম বিল্লাহ বলেন, নোটিশ এখনো হাতে পাই নাই। আদালত থেকে এখনো পৌছায়নি। যদি পৌছায় তাহলে আমরা জবাব দেবো। আদালতের নিদের্শনা অবশ্যই বাস্তবায়ন করা হবে।
মামলার বাদী দোকান মালিকরা হলেন বাবুল আহমেদ, লাল মিয়া, জীবন সরকার, মহিউদ্দিন আহমেদ, রিপন পারভেজ, আবুল কালাম ঢালী, রিনা আহমেদ, দুলাল মিয়া, বিমল চন্দ্র সূত্রধর, তাইবা আহমেদ, জসিমউদ্দিন খান, মিয়া খালেকুজ্জামান ও তপন কান্তি পাল।
মামলায় উল্ল্যেখ করা হয়- ২০০৮ সালে ভবনের দোকান মালিকরা সিটি মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভী সহ তৎকালীন এডহক কমিটির বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেই মামলায় ভবন ভাঙ্গার বিষয়ে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত। কিন্তু গত ২০ জুন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ভবনটি গুড়িয়ে দেয়। এবার দোকান মালিকরা আদালতের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগে একটি ভায়োলেশন মামলা দায়ের করে। সে মামলায় সিটি মেয়র ও জেলা প্রশাসক সহ ১০ জনকে আদালতে জবাব দেয়ার আদেশ দেন।
জানাগেছে, গত ২০ জুন বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের ২নং রেল গেইট সংলগ্ন রহমতউল্লাহ মুসলিম ইনস্টিটিউট ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিন হায়াত আইভীর ব্যক্তিগত সহকারী আবুল হোসেনের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন নাসিকের পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক শ্যামল পাল। হঠাৎ ভবনটি ভেঙে দেওয়ায় ওই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। এসময় ঘটনাস্থলে অনেককে কান্না করতে দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, তিন তলাবিশিষ্ট ভবনটিতে কনফেকশনারি, ফ্রিজ, এসি, সেলাই মেশিন, টেইলার, সুতা, রাবারের দোকান সহ প্রায় ৩৫টি দোকান ছিল। প্রতিটি দোকানেই লাখ টাকার পণ্য ছিল। ব্যবসায়ীদের দাবি তাদের কোনো সময় দেওয়া হয়নি। সকাল বেলা ভবন ভাঙার জন্য এক্সভেটার নিয়ে এসে সরাসরি ভাঙা শুরু করে। ব্যবসায়ীরা কোনো মালামাল সরাতে পারেননি। এতে করে ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। ওই সময় তারা দাবি করেছিলেন আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ভবনটি ভেঙ্গে দিয়েছেন।