সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের একটি আদালতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ওই মামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত আইনজীবী নেতা ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।
সাখাওয়াত হোসেন খান এক বিবৃতিতে এ মামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আমি একজন আইনজীবী হিসেবে মনে করি ৫০০ ও ৫০১ ধারার মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা যায়না। এ ক্ষেত্রে মামলা গ্রহণ করে বিচারক আসামিদের সমন দিতে পারেন। সমন পেয়ে তারা উপস্থিত না হলে তখন গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়টি আসতে পারে। কিন্তু বিচারক এ ধারার মামলা গ্রহণ করার সাথে সাথেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে প্রমান করেছে শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে এই মামলা দায়ের হয়েছে এবং বিচারকও অতিউৎসাহী হয়ে রাজনৈতিক প্রভাবে গ্রেপ্তারির পরোয়ানা জারি করেছেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার দেশ থেকে বিএনপি নির্মূল করার জন্য একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করছে। কারন সরকার বিএনপিকে ভয় পায়। আর এ জন্য বিচার বিভাগকে তারা ব্যবহার করছে।
সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাই বিএনপির চেয়ারপারসন ও তিনবারের সফল প্রধাণমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটকে রেখেছে। এখন তারা বাংলাদেশের আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। কারন এই অবৈধ সরকার বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ভয় পায়। কিন্তু এই জালিম সরকারের কোন ষড়যন্ত্রই তারেক রহমানের ক্ষতি করতে পারবে না। দেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে সকল ষড়যন্ত্র বানের পানির মতো ভেসে যাবে এবং বাংলার রাজপুত্র তারেক রহমান বীরের বেশে দেশে আসবেন ও দেশের মানুষকে স্বৈরাচারী দু:শাসন থেকে মুক্ত করবেন।
এদিকে জানাগেছে, লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত। মামলায় লন্ডনে বসবাসকারী আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে।
৯ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালত (‘ক’) অঞ্চল আমলী আদালতে আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও জয়বাংলা মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মলীগের কার্যকরী কমিটির আহ্বায়ক আকরাম হোসেন বাদল মামলাটি দায়ের করেন।
পরে এই আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মিল্টন হোসেন অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলায় তারেক জিয়া সহ যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস ও সাধারণ সম্পাদক কওছর এম আহমেদকেও আসামি করা হয়।
বাদী তার মামলায় অভিযোগ করেন, লন্ডনের একটি অনুষ্ঠানের সংবাদ গত ১৯ আগস্ট ২০১৯ এনটিভি, নিউজ টুয়েন্টিফোর ও বিডিনিউজে মামলার ২ ও ৩ নং বিবাদীর সহায়তায় প্রচারিত হয়। এতে দেখা যায়, ১ নং বিবাদী তারেক রহমান তার বক্তব্যে সেদিন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটাক্ষ এবং স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করে মানহানিকর কথাবার্তা বলেন।
‘তিনি বলেছেন, শেখ মুজিব প্রেসিডেন্ট আর নজরুল ইসলাম ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকলে সংবিধান গঠিত না হওয়া পর্যন্ত। শেখ মুজিব ১০ তারিখে আসলেন আর ১২ তারিখে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন কোন সংবিধান নাই। তাহলে আমরা কি বলতে পারি শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। বলতে গেলে শেখ মুজিব স্বাধীনতা চাননি। আমরা কি এটাও বলতে পারি না যে, শেখ মুজিব এসে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন সেটা অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭২ সালে এসে শেখ মুজিব প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন আর আজকে তার কন্যা যেভাবে অবৈধভাবে নির্বাচিত শেখ মুজিবও সেদিন অবৈধভাবে জোর করে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন। যেভাবে আজকে জোর করে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেছেন শেখ হাসিনা।’
বাদী পক্ষের আইনজীবী ও জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল হুদা বলেন, বিবাদীগণ বঙ্গবন্ধু ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে মিথ্যা বানোয়াট ও মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে ৫০০ ও ৫০১ ধারায় অপরাধ করেছেন।
তিনি আরও জানান, আদালত তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। মামলার আগামী শুনানি আগামী ১০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছেন আদালত। এমামলায় বাদীসহ আরো ৩ জন্য স্বাক্ষী রয়েছেন।