সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। মামলার ঘটনায় এক বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি।
৯ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহামুুদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়- ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটি মানহানীর মামলা দায়ের করা হয়। বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে লন্ডনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তারেক রহমানের অত্যন্ত যৌক্তিক কিছু বক্তব্যে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এই মানহানীর মামলাটি দায়ের করা হয় যা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত এবং এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চলমান সরকারি গভীর ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়- লন্ডনে চিকিৎসার জন্য অবস্থানরত তারেক রহমান বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের আশা-আকাংখার ধারক ও বাহক। ওনার বক্তব্যে বাংলাদেশের জনসাধারণের চাওয়া-পাওয়া, চিন্তা চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। তারেক রহমান একজন মহানায়ক, বাংলাদেশী চেতনার জন্য লড়াইরত একজন বীর নেতৃত্ব। বাংলাদেশের স্বৈরশাসক তারেক রহমানে এতটাই ভীত যে তারেক রহমান কোন কথা বললেই তাদের পায়ের তলার মাটি কেপে উঠে, তাই ঠুনকো মিথ্যা মামলা দিয়ে তারেক রহমানকে নাজেহাল করার চেষ্টা করে। নারায়ণগঞ্জে দায়ের করা এই মিথ্যা মামলাটাও সেই ধরণের একটি মামলা। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে এই মামলাটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং সাথে সাথে মামলাটি প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য জোরালো দাবী জানাচ্ছি।’
এদিকে জানাগেছে, লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত। মামলায় লন্ডনে বসবাসকারী আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে।
৯ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালত (‘ক’) অঞ্চল আমলী আদালতে আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও জয়বাংলা মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মলীগের কার্যকরী কমিটির আহ্বায়ক আকরাম হোসেন বাদল মামলাটি দায়ের করেন।
পরে এই আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মিল্টন হোসেন অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলায় তারেক জিয়া সহ যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস ও সাধারণ সম্পাদক কওছর এম আহমেদকেও আসামি করা হয়।
বাদী তার মামলায় অভিযোগ করেন, লন্ডনের একটি অনুষ্ঠানের সংবাদ গত ১৯ আগস্ট ২০১৯ এনটিভি, নিউজ টুয়েন্টিফোর ও বিডিনিউজে মামলার ২ ও ৩ নং বিবাদীর সহায়তায় প্রচারিত হয়। এতে দেখা যায়, ১ নং বিবাদী তারেক রহমান তার বক্তব্যে সেদিন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটাক্ষ এবং স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করে মানহানিকর কথাবার্তা বলেন।
‘তিনি বলেছেন, শেখ মুজিব প্রেসিডেন্ট আর নজরুল ইসলাম ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকলে সংবিধান গঠিত না হওয়া পর্যন্ত। শেখ মুজিব ১০ তারিখে আসলেন আর ১২ তারিখে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন কোন সংবিধান নাই। তাহলে আমরা কি বলতে পারি শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। বলতে গেলে শেখ মুজিব স্বাধীনতা চাননি।
আমরা কি এটাও বলতে পারি না যে, শেখ মুজিব এসে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন সেটা অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭২ সালে এসে শেখ মুজিব প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন আর আজকে তার কন্যা যেভাবে অবৈধভাবে নির্বাচিত শেখ মুজিবও সেদিন অবৈধভাবে জোর করে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন। যেভাবে আজকে জোর করে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেছেন শেখ হাসিনা।’
বাদী পক্ষের আইনজীবী ও জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল হুদা বলেন, বিবাদীগণ বঙ্গবন্ধু ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে মিথ্যা বানোয়াট ও মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে ৫০০ ও ৫০১ ধারায় অপরাধ করেছেন।
তিনি আরও জানান, আদালত তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। মামলার আগামী শুনানি আগামী ১০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছেন আদালত। এমামলায় বাদীসহ আরো ৩ জন্য স্বাক্ষী রয়েছেন।