সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর জেলা যুবদলের অধিকাংশ কর্মসূচিতে ছিলেন না রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া। তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ অনুুগামী হিসেবে পরিচিত। এবার তিনি জেলা যুবদল ও জেলা ছাত্রদলের ব্যানারে নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন যেখানে জেলা যুবদল ও ছাত্রদলের সভাপতি সেক্রেটারির কেউ ছিলেন না। তাহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে রফিক ভূঁইয়ার এই ব্যানার তাহলে কোন জেলা যুবদল ও জেলা ছাত্রদল!
জানাগেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের একটি আদালতে মামলা দায়ের ও ওই মামলা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দায়েরের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল ও ছাত্রদলের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া।
তিনি দাবি করেছেন ১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের দিকনির্দেশনায় নারায়ণগঞ্জের মাসদাইর পৌর কবরস্থান এলাকায় পঞ্চবটি রোডে এ বিক্ষোভ মিছিল বের করেছেন।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নেতাকর্মীরা বলেন, এ সকল মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বানোয়াট মামলা দিয়ে তারেক রহমানের জনপ্রিয়তাকে নষ্ট করতে পারবে না এই সরকার। আমরা এই মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বানোয়াট মামলার দায়েরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
অবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করছি। সেই সাথে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানাচ্ছি ।
বিক্ষোভ মিছিলে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা আবদুল জব্বার, মোক্তার হোসেন, যুবদল নেতা রিজবী আহমেদ ন্যান্সী, ইমরান কাউসার, মো. সেলিম, মো. শাহিন, সাইফুল ইসলাম, আব্দুস সালাম, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈনুল হাসান রবিন, জেলা ছাত্রদল নেতা সামাউন ইসলাম স্বর্ণা, ওমর ফারুক শোভন, মো. মোহসীন, মামুন, আকাশ ও সোহাগ প্রমুখ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালনের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলে সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু সান নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আজকে আমাদের কোন কর্মসূূচি ছিল না। আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের উদ্যোগে এখনও কোন কর্মসূচি পালন করিনি। আমরা কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা পাওয়া পর কর্মসূচি পালন করব। যদি কেউ জেলা যুবদলের ব্যানারে কর্মসূচি পালন করে থাকে তাহলে সেটা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ। এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
অন্যদিকে আবারো আড়াইহাজার বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে কর্মসূচি পালন করেছেন নজরুল ইসলাম আজাদ অনুগামী নেতাকর্মীরা।
১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে আড়াইহাজারের সাতগ্রাম ইউনিয়নের পাচরুখীতে উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও অঙ্গসংগঠনের ব্যানারে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেন আজাদ অনুগামী নেতাকর্মীরা।
নারায়ণগঞ্জ জলা বিএনপির সহসভাপতি লুৎফর রহমান আব্দুর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন-জেলা বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আনোয়াার হোসেন অনু, সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক জুয়েল হোসেন, সদস্য সাদেকুর রহমান, আফজাল হোসেন ভূঁইয়া, বিএনপি নেতা মতিউর রহমান মতি, জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, আড়াইহাজার থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আজহারুল ইসলাম লাভলু, মনির হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মনির, স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা আহসান উল্লাহ, আলমগীর, আড়াইহাজার থানা ছাত্রদল নেতা আসাদুজ্জামান আসাদ, মীর মেহেদী হাসান রানা, নাজমুল ইসলাম রনি, মো. অপু ও জহিরুল মোল্লা প্রমুখ।
এদিকে লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত। মামলায় লন্ডনে বসবাসকারী আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে।
৯ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালত (‘ক’) অঞ্চল আমলী আদালতে আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও জয়বাংলা মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মলীগের কার্যকরী কমিটির আহ্বায়ক আকরাম হোসেন বাদল মামলাটি দায়ের করেন।
পরে এই আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মিল্টন হোসেন অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলায় তারেক জিয়া সহ যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস ও সাধারণ সম্পাদক কওছর এম আহমেদকেও আসামি করা হয়।
বাদী তার মামলায় অভিযোগ করেন, লন্ডনের একটি অনুষ্ঠানের সংবাদ গত ১৯ আগস্ট ২০১৯ এনটিভি, নিউজ টুয়েন্টিফোর ও বিডিনিউজে মামলার ২ ও ৩ নং বিবাদীর সহায়তায় প্রচারিত হয়। এতে দেখা যায়, ১ নং বিবাদী তারেক রহমান তার বক্তব্যে সেদিন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটাক্ষ এবং স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করে মানহানিকর কথাবার্তা বলেন।
তিনি বলেছেন, শেখ মুজিব প্রেসিডেন্ট আর নজরুল ইসলাম ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকলে সংবিধান গঠিত না হওয়া পর্যন্ত। শেখ মুজিব ১০ তারিখে আসলেন আর ১২ তারিখে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন কোন সংবিধান নাই। তাহলে আমরা কি বলতে পারি শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। বলতে গেলে শেখ মুজিব স্বাধীনতা চাননি।
আমরা কি এটাও বলতে পারি না যে, শেখ মুজিব এসে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন সেটা অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭২ সালে এসে শেখ মুজিব প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন আর আজকে তার কন্যা যেভাবে অবৈধভাবে নির্বাচিত শেখ মুজিবও সেদিন অবৈধভাবে জোর করে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন। যেভাবে আজকে জোর করে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেছেন শেখ হাসিনা।
বাদী পক্ষের আইনজীবী ও জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল হুদা বলেন, বিবাদীগণ বঙ্গবন্ধু ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে মিথ্যা বানোয়াট ও মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে ৫০০ ও ৫০১ ধারায় অপরাধ করেছেন।
তিনি আরও জানান, আদালত তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। মামলার আগামী শুনানি আগামী ১০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছেন আদালত। এমামলায় বাদীসহ আরো ৩ জন্য স্বাক্ষী রয়েছেন।