সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।
১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানানো হয়, নারায়ণগঞ্জ জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত কর্তৃক ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দন্ডবিধি ৫০০/৫০১ ধারায় রুজুকৃত মামলা গ্রহণপূর্বক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করায় বিএনপি চেয়ারপাসরনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এ্যাডঃ তৈমূর আলম খন্দকার বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন যে, কোন প্রকার তদন্ত ছাড়া এ ধরণের মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পিছনে রয়েছে সরকারের অযাচিত প্রভাব। বিচার বিভাগ বিশেষ করে নি¤œ আদালত এখন সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিনত হওয়ায় ফলে দ:বি: ৫০০/৫০১ ধারায় মামলায় এ্যাপিলেট ডিভিশন জামিন দিলেও ব্যারিষ্টার মঈনুল হোসেনের জামিন বাতিল হয়েছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আনিত এই মামলাও সরকার কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্ট গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারী করেছে।
তৈমূর আলম খন্দকার আরও বলেন, আদালতকে দলীয়করণ করার কারণেই কিছু ব্যক্তি শুধুমাত্র পত্রিকায় নাম প্রচারের উদ্দেশ্যে এ ধরণের মামলায় বাদী হওয়া ছাড়াও কিছু চমক সৃষ্টি করার জন্য এ ধরণে মামলা রুজু হচ্ছে যার সংস্কৃতি ইতোপূর্বে ছিল না, যা বর্তমান সরকার আমলে চালু হয়েছে।
তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, সরকারের একমাত্র চোখের কাটা জিয়া পরিবার। তারেক রহমান জিয়া পরিবার তথা বিএনপির বাতিঘর। এ বাতিঘরটি নিভিয়ে ফেলার সকল প্রচেষ্টার মধ্যে এ ধরণের মামলাও একটি অপচেষ্টা মাত্র যা সময়ের ব্যবধানে জনতার রোষে তাসের ঘরের মতো উড়ে যাবে, ইনশাহআল্লাহ।
এদিকে লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত। মামলায় লন্ডনে বসবাসকারী আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে।
৯ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালত (‘ক’) অঞ্চল আমলী আদালতে আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও জয়বাংলা মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মলীগের কার্যকরী কমিটির আহ্বায়ক আকরাম হোসেন বাদল মামলাটি দায়ের করেন।
পরে এই আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মিল্টন হোসেন অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলায় তারেক জিয়া সহ যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস ও সাধারণ সম্পাদক কওছর এম আহমেদকেও আসামি করা হয়।
বাদী তার মামলায় অভিযোগ করেন, লন্ডনের একটি অনুষ্ঠানের সংবাদ গত ১৯ আগস্ট ২০১৯ এনটিভি, নিউজ টুয়েন্টিফোর ও বিডিনিউজে মামলার ২ ও ৩ নং বিবাদীর সহায়তায় প্রচারিত হয়। এতে দেখা যায়, ১ নং বিবাদী তারেক রহমান তার বক্তব্যে সেদিন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটাক্ষ এবং স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করে মানহানিকর কথাবার্তা বলেন।
‘তিনি বলেছেন, শেখ মুজিব প্রেসিডেন্ট আর নজরুল ইসলাম ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকলে সংবিধান গঠিত না হওয়া পর্যন্ত। শেখ মুজিব ১০ তারিখে আসলেন আর ১২ তারিখে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন কোন সংবিধান নাই। তাহলে আমরা কি বলতে পারি শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। বলতে গেলে শেখ মুজিব স্বাধীনতা চাননি।
আমরা কি এটাও বলতে পারি না যে, শেখ মুজিব এসে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন সেটা অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭২ সালে এসে শেখ মুজিব প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন আর আজকে তার কন্যা যেভাবে অবৈধভাবে নির্বাচিত শেখ মুজিবও সেদিন অবৈধভাবে জোর করে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেন। যেভাবে আজকে জোর করে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেছেন শেখ হাসিনা।’
বাদী পক্ষের আইনজীবী ও জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল হুদা বলেন, বিবাদীগণ বঙ্গবন্ধু ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে মিথ্যা বানোয়াট ও মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে ৫০০ ও ৫০১ ধারায় অপরাধ করেছেন।
তিনি আরও জানান, আদালত তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। মামলার আগামী শুনানি আগামী ১০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছেন আদালত। এমামলায় বাদীসহ আরো ৩ জন্য স্বাক্ষী রয়েছেন।