সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজল। মহানগর বিএনপির নেতা হয়েও তিনি নিয়মিত আড়াইহাজারে গিয়ে রাজনীতি করছেন। দলের চেয়ে তিনি এখন ব্যক্তি কেন্দ্রীক রাজনীতিতে জড়িত। তার কাছে বেগম খালেদা জিয়ার চেয়েও বড় নেতা এখন নজরুল ইসলাম আজাদ।
এর কারন হিসেবে নেতাকর্মীরা বলছেন, গত বছরের ১৪ মে নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। ওইদিন আজাদের পাশে কয়েকশ নেতাকর্মীকে দেখা যায়। কিন্তু একই দিন সারাদেশে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে পালনের কেন্দ্রীয় বিএনপির ঘোষণা থাকলেও সেই কর্মসূচি পালন করেননি ওই সব নেতারা।
ওই দিন আজাদের পাশে মনিরুল ইসলাম সজলও ছিলেন। কিন্তু বিকেলেই মহানগর বিএনপির নারায়ণগঞ্জ শহরের বালুর মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন না সজল। ওইদিনই নেতাকর্মীরা মন্তব্য করেছিলেন, সজলের কাছে বেগম খালেদা জিয়ার চেয়ে আজাদই বড় নেতা। আজাদের সামনে আদালতপাড়ায় শোডাউন দিলেও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আসেননি তিনি।
তবে সেই ব্যতয় এখনও হয়নি। সজল মহানগরীর রাজনীতিতে নিস্ক্রিয় হয়ে আড়াইহাজারে গিয়ে আজাদের পাশে রাজনীতি করছেন। কয়েক মাসে কেন্দ্রীয় বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর বেশকটি কর্মসূচি ছিল যেখানে সজলকে দেখা যায়নি। কিন্তু ৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় যুবলীগ নেতা আমজাদ হোসেন হত্যা মামলায় আজাদ হাজিরা দিতে আসলে সেখানে গিয়ে আজাদকে মুখ দেখালেন মনিরুল ইসলাম সজল।
কিন্তু সম্প্রতি শহরে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কোন কর্মসূচিতেই ছিলেন না সজল। বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অভিযোগ- সজল এখন দলের নয় ভাইয়ের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। একই সঙ্গে তার কাছে বেগম খালেদা জিয়ার চেয়ে আজাদ বড় নেতা।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার যুবলীগ নেতা আমজাদ হোসেন হত্যা মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ সহ ৪০ জন আসামি যারা সকলেই বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত।
৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শেখ রাজিয়া সুলতানার আদালতে এ হাজিরা দেন নেতাকর্মীরা। এদিন আজাদ আদালতে আসলে সেখানে মনিরুল ইসলাম সজলকে দেখা যায় আসামি হওয়া নেতাকর্মীদের সঙ্গে ফটোসেশন করতে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লা জানান, যুবলীগ নেতা আমজাদ হত্যা মামলায় নজরুল ইসলাম আজাদ সহ ৪০জন আসামি আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল কিন্তু কোন সাক্ষী আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় আসামিরা হাজিরা দেন। আগামী বছেরর ২০ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে পাঁচরুখী এলাকায় আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে যুবলীগ নেতা আমজাদ হোসেন নিহত হন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী বিলকিস বেগম বাদী হয়ে সজীবকে প্রধান আসামি এবং নজরুল ইসলাম আজাদ, তার ছোট ভাই রাকিবুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবু সহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ ও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আড়াইহাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।