সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
এক এগারোর পর আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সরকারি বিরোধী আন্দোলনে যে ভুমিকা তৈমূর আলম খন্দকার রেখেছিলেন সেই ভুমিকা পরবর্তী কমিটির কেউই রাখতে পারেনি। তৈমূর আলম খন্দকার যখন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি পদে দায়িত্ব পালণ করেছিলেন তখন বিরোধী দলীয় রাজনীতিতে বিএনপিতে বলা যায় সেটাই ছিল স্বর্ণযুগ।
২০১১ সালে তৎকালীন সদর মডেল থানা পুুলিশের সেকেন্ড অফিসার আতিয়ার রহমানের লাঠির আঘাতে পিছপা হননি তৈমূর আলম খন্দকার। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতির পদ থেকে তৈমূর আলম খন্দকারকে সরিয়ে নারায়ণগঞ্জে বিএনপিকেই এখন মৃতপ্রায় অবস্থা করে তোলা হয়েছে। ওই সময় শহর বিএনপির কমিটি ও ছিল জেলা বিএনপির কমিটি। মুল দায়িত্বটি পালন করেছিলেন তৈমূর আলম খন্দকার। ওই সময় জেলা বিএনপির সেক্রেটারির পদে ছিলেন কাজী মনিরুজ্জামান। কিন্তু তার নিষ্ক্রিয়তার মাঝেও জেলা বিএনপিকে একাই টেনে নিয়েছিলেন তৈমূর আলম খন্দকার। বর্তমানে জেলা ও মহানগর বিএনপির দুটি কমিটি থাকলেও তৈমূর আলম খন্দকারের শূন্যতা পূরণ করতে পারেনি তারা।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, তৈমূর আলম খন্দকার কেন্দ্রীয় নেতাদের বাসায় যান না। তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে তহুরী নিয়ে হাত মিলান না। বিশেষ সুবিধা তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের হাতে তুলে দেননি। নিজ কমিটি বহাল রাখতে কিংবা তার অনুগত বিশ^স্থ নেতাকর্মীদের কোন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পদে বসাতে তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে মাথা নত করতে নারাজ। যে কারনে কেন্দ্রীয় নেতারা তৈমূর আলম খন্দকারের প্রতি বিরাগভাজন ছিলেন। আবার উল্টো দিকে এ জেলায় যারা কমিটির নেতৃত্বে এসেছেন তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে লিয়োজো মেইনটেন করে চলেছেন। লিয়োজো করেই মুলত কমিটি ভাগিয়ে আনলেও মুলত তৈমূর আলম খন্দকারকে মাইনাস করে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে ভিড়িয়েছেন। কিন্তু তৈমূর আলম খন্দকারের চেয়ে বেশি ভুমিকা তো দুরের কথা তৈমূর আলম খন্দকারের ভুমিকায়ও তারা আসতে পারেননি।
নেতাকর্মীরা আরও জানিয়েছেন, কয়েক মাস পূর্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে যাদেরকে পদে রাখা হয়েছে কমিটি গঠনের আগে ও পরে অধিকাংশ নেতাদের রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয়তা নেই। যে সব নেতারা তৈমূর আলম খন্দকারের নেতৃত্বে রাজপথে সক্রিয় ভুমিকা রেখেছিলেন উল্টো তাদেরকে শাস্তি স্বরুপ কমিটিতে রাখা হয়নি। তৈমূরকে মাইনাস করতে গিয়ে তার সঙ্গে রাজপথে সক্রিয় নেতাকর্মীদেরকেও মাইনাস করা হয়েছে। ফলে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি আরও ছোট হয়ে আসছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছেন কাজী মনিরুজ্জামান মনির ও সেক্রেটারি পদে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক মামুন মাহামুদ। মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম ও সেক্রেটারি পদে এটিএম কামাল দায়িত্ব পালন করছেন। কাজী মনির একজন শিল্পপতি তিনি গাছাড়াভাবেই দলের কর্মসূচি পালন করেন। অধিকাংশ কর্মসূচিতে তাকে দেখাও যায়না। একইভাবে মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালামের অবস্থা। এক সময়কার রাজপথের সক্রিয় নেতা এটিএম কামাল এখন রাজপথ ছেড়ে আমেরিকা আসা যাওয়ার মাঝে রয়েছেন। জেলা বিএনপির রাজনীতি হয়ে গেছে এখন রূপগঞ্জমূখী। মহানগর বিএনপির রাজনীতি কালিরবাজার আবুল কালামের চেম্বার কেন্দ্রীক। মাঝে সাজে তাদেরকে শহরে কর্মসূচি পালনে দেখা গেলে সেটা চাষাড়া বালুর মাঠের গলির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তৈমূর আলম খন্দকার চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে সচল রয়েছেন। সেই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের নেতাকর্মীদের নিয়েও থাকছেন সক্রিয়।
এখন তৈমূর আলম খন্দকারের ভুমিকায় আসার আলোচনায় তারই ভাই মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। নারায়ণগঞ্জের আন্দোলন সংগ্রামে সবচেয়ে বেশি ভুমিকা রয়েছে মহানগর যুবদলের। অন্যান্য অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের চেয়ে মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরাই সবচেয়ে বেশি মামলার শিকার ও নির্যাতিত। এটা খোরশেদ বিরোধীতারাও স্বীকার করেন।
এমন পরিস্থিতিতে মহানগর বিএনপির গুরুত্বপূূর্ণ পদে খোরশেদকে না রেখে তাকে অসম্মানজনকভাবে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে। তার উপরে রাখা হয় বিএনপির রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় এবং সিটি কর্পোরেশনের একজন কাউন্সিলেরর ব্যক্তিগত সহকারীকে। মুলত তৈমূর আলম খন্দকারের ভাই হওয়ার কারনেই তাকে নিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপি এমন অপরাজনীতি খেলেছেন বলেও নেতাকর্মীদের অভিযোগ। নেতাকর্মীরা আশা দেখছেন সামনের কমিটিতে মহানগর বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদেই আসছেন খোরশেদ। তাহলেই তৈমূর আলম খন্দকারের সঙ্গে রাজপথের সক্রিয় নেতাকর্মীরা পাবেন একজন অভিভাবক। খোরশেদ পারবেন তৈমূর আলমের শূণ্যতা পুরণে।