দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও পৌরসভার মেয়র সাদেকুর রহমানকে আটক করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ১৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার গভীর রাতে সোনারগাঁও গোয়ালদি এলাকার মেয়রের বাসা থেকে আটক করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে মেয়র সাদেকুর রহমানকে নেয়া হয়েছে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
মেয়র সাদেকুর রহমানকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ডিবির পরিদর্শক এনামুল হক। তিনি জানিয়েছেন মেয়র সাদেকুর রহমানকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে। আটক মেয়র একই সঙ্গে বাংলাদেশ ক্যামিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতির পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
জানাগেছে, গত শনিবার সোনারগাঁও পৌরসভার লোক ও কারুশিল্প যাদুঘরের সামনে নসিমন চালককে ব্যাপক মারধর করেন মেয়র সাদেকুর রহমান। ওই মারধরের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায় যা মিডিয়াতেও তোলপাড় শুরু হয়। নসিমন চালকের গাড়িতে থাকা বাঁশ মেয়র সাদেকুর রহমানের গাড়িতে ঘষা লাগে। ওই কারনে গাড়ি থেকে নেমে মেয়র সাদেকুর রহমান কয়েক দফা মারধর করেন। নির্মম নির্যাতনের ওই ভিডিও চিত্র ফেসবুকে ভাইরাল হলে মানুষ ধিক্কার জানিয়ে বিচার দাবি করেন।
ভিডিও চিত্রে দেখা যায়- হাউ মাউ করে কাঁদছে এক শিশু ও তার মামা নসিমন চালক জামাল। তবুও নাছোরবান্দা বদমেজাজী মেয়র সাদেকুর রহমান অমানবিকভাবে জনসম্মুখে নির্যাতন করে যাচ্ছেন। যা বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। সোনারগাঁও পৌরসভার মেয়র সাদেকুর রহমান চালককে লাঠি দিয়ে মারধর করছেন আর বলছেন, এমনে চালায় গাড়ি?
এমন একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়ে। জামাল একটি নসিমন চালক। সে কোন চোর ছিনতাইকারীও ছিল না। ভিডিওতে দেখা যায় সোনারগাঁও পৌরসভার লোক ও কারুশিল্প যাদুঘরের সামনে এই চালককে মারধর করছেন মেয়র। জামালের ভাগনে শিশুটি হাউ মাউ করে কাঁদলেও মেয়র সাদেকুর রহমান তার মারধর চালিয়ে যায়। আল্লাহগো আল্লাহগো বলে কাঁদলেও থামেনি মেয়র। এ এক বর্বরতাকে হার মানিয়েছে তার এই অমানবিক নির্যাতন। মেয়র কখনও লাথি মেরেছেন, কখনও হাতে থাকা লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন। আর বলছেন গাড়ি এভাবে চালায়? বিশেষ করে ওই শিশুর অসহাত্বেও কান্নাটাই প্রতিটি মানুুষের হৃদয়ে কষ্টের ছোয়া লেগে যায়। তারা চোর ছিনতাইকারী পকেটমার ছিলনা। ওই সময় আশপাশের লোকজন মেয়রকে নিবৃত করার চেষ্টা করলেও তিনি থামেননি। চালকও হাউ মাউ করে কেঁদে কেঁদে মেয়র সাদেকুর রহমানের পায়ে ধরছিল কিন্তু তবুও মেয়র মারধর করছেন। মেয়রের সঙ্গে চালককে মারতে দেখা গেল কন্ঠ শিল্প রিপনকেও। অথচ রিপন একজন সাংস্কৃতিকমনা ব্যক্তি। চালককে বাঁচানোর চেষ্টা না করে উল্টো মেয়রের নির্যাতনের দিকে ঠেলে দিতেও দেখা গেল ভিডিওতে তাকেও। এভাবেই সমাজে গরীব মার খায়। অসহায়ের অসহায়ত্বও মানুষের মনে নাড়া দেয়না।
জানাগেছে, সোনারগাঁও আমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১৮ বছর তিনি চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তারপর তিনি টানা দুই মেয়াদে মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এলাকায় বেশ জনপ্রিয় হলেও তিনি বদমেজাজী একজন মেয়র হিসেবেই পরিচিত। তিনি আইন কানুন তোয়াক্কা করেন না। ওই সময় থেকেই তিনি বিচার শালিশির নামে দূর্বল মানুষের উপর নির্যাতন করে আসছিলেন। তবে বয়সের ভারে নুব্জ হলেও তেজ কমেনি এই মেয়রের। নিজেই এখন রাস্তা ঘাটে অসহায় শিশু কিশোরদের মারধর করতে শুরু করে দিলেন। গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে তিনি মেয়র পদে নির্বাচন করে জয়ী হন। এর আগের নির্বাচনে তিনি বিএনপি জামাতের সমর্থনে মেয়র নির্বাচিত। নির্বাচিন হওয়ার পর তিনি মেয়রের চেয়ারে বসেন না। গড়ে তুলেছেন পঞ্চপান্ডব। এই পাঁচ জনের নিয়ন্ত্রনে চলে সোনারগাঁও পৌরসভা কার্যালয়টি।