সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের রাজনীতিতে এক সাগর প্রধানেই নাস্তানাবুদ সংগঠনটির সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দীন মন্তু। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে নেতাকর্মীদের নিয়ে রীতিমত শহরে শোডাউন করেছেন সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান। যার সঙ্গ দিয়েছেন সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন।
এর আগে তাদের সঙ্গেই ছিলেন সহ-সভাপতি সানোয়ার হোসেন যিনি প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতিবাদী হয়ে ওঠলেও কিছুদিন পরেই ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় তিনি ঝিমিয়ে যান। তবে হাল ছাড়ছেন না সাগর প্রধান। তিনি একাই মহানগর যুবদলের ব্যানার নিয়ে ঠাঁয় লড়ছেন রাজপথে, তেমনি সংগঠনটির সভাপতি ও সেক্রেটারির বিরুদ্ধে ‘অরাজনৈতিক’ কর্মকান্ডের প্রতিবাদে। সাগর প্রধান নিজেই অভিযোগ তুলেছিলেন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে শীর্ষ দুই নেতার ‘অরাজনৈতিক’ কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করছেন তিনি। তিনি তার নিজের পদের জন্য প্রতিবাদ করছেন। তিনি কর্মীদের মুল্যায়নের জন্য প্রতিবাদ করছেন।
নেতাকর্মীদের দাবির মতে, নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি রাজপথে ভুমিকা মহানগর যুবদলের। যে সংগঠনের প্রায় সকলেই একাধিক মামলার আসামি। জেল খেটেছেন যুবদলের কয়েকশ নেতাকর্মী। যে কারনে মহানগর যুবদলের দিকে দৃষ্টি সবার। কিন্তু এমন একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে দেখা গেল একই দিন মহানগর যুবদলের ব্যানার দুটি। একদিকে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিন সকালে সভাপতি খোরশেদ ও সেক্রেটারি মন্তু কর্মসূচি পালন করেছেন। আবার একই দিন বিকেলে সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও সিনিয়র সহ-সভাপতি পৃথকভাবে একই ব্যানারে কর্মসূচি পালন করেছেন।
তবে সাগর প্রধান নিয়মিত দাবি করে আসছেন, তিনি সকলকে নিয়ে বসে মত দ্বিমতের সুরাহ করার জন্য সভাপতি ও সেক্রেটারির প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। এমনকি তিনি বিষয়টি সমাধানের জন্য সাত দিনের আল্টিমেটামও দিয়েছিলেন। কিন্তু সভাপতি ও সেক্রেটারি দীর্ঘ সাত মাস পেরিয়ে গেলেও কোন কর্ণপাত করেননি। যে কারনে তিনি বাধ্য হয়েই পৃৃথকভাবে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এর আগে বন্দরের একটি অনুষ্ঠানে সভাপতি ও সেক্রেটারিকে সমাধানের জন্য আল্টিমেটাম দেন। তাদের দাবি ছিল সকলকে নিয়ে বসে তাদের মতামত শোনা এবং তার সমাধান করার। সেই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পর কমিটি গঠনের বিষয়েও তারা বিরোধীতা করেন। কিন্তু এসবের সমাধান না হওয়ার কারনে সাগর প্রধান এখন মহানগর যুবদলের ব্যানার নিয়ে পৃথকভবে কর্মসূচি পালনে মাঠে নেমেছেন। যদিও বন্দরের ওই অনুষ্ঠানে মনোয়ার হোসেন শোখন, সানোয়ার হোসেন ও আহাম্মদ আলীও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তাদের আল্টিমেটাম আমলে না নিলেও সানোয়ার হোসেনকে ম্যানেজ করেছেন সভাপতি ও সেক্রেটারি।
আরও জানাগেছে, মহানগর যুবদলের সুপার ফাইভ কমিটিতে সভাপতি হন মাকসুুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন, সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দীন মন্তু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান ও সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশু। ওই সময় মনক্ষুন্ন ছিলেন সানোয়ার হোসেন। কারন এর আগের আহ্বায়ক কমিটিতে তিনি সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকলেও সুপার ফাইভ কমিটিতে তিনি ছিলেন না। তবে সুপার ফাইভ কমিটি গঠনের পর এই ৫ জন নেতাকে ঐক্যবদ্ধ দেখা যায়। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পরপরই তাদের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হয়। যেখানে কমিটির অধিকাংশ নেতারা রয়েছেন সভাপতি ও সেক্রেটারির সঙ্গে সেখানে সাগর প্রধান এখন শোখনকে নিয়েই পৃথকভাবে মাঠে নেমেছেন। যদিও সাগর প্রধান বারবার দাবি করছেন তিনি বিরোধ চান না। তিনি চান সকলকে নিয়ে বসে মত দ্বিমতের কথাগুলো শোনা এবং তার সমাধান করা।