সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কাজ করতে গিয়ে সমালোচিত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন সদ্য প্রত্যাহৃত নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তার বিদায় সংবর্ধনায় অঝর কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি বলেছেন, প্রকৃত সত্য তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন্সের মিলনায়তনে জেলা পুলিশের দেওয়া বিদায়ী সংবর্ধনায় এ কথা বলেন এসপি হারুন। বক্তব্যের একপর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের কাছে চাঁদাবাজির অভিযোগে এসপি হারুনকে গত সোমবার নারায়ণগঞ্জ থেকে পুলিশ সদর দপ্তরে (ট্রেনিং রিজার্ভ) সংযুক্ত করা হয়।
বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, র্যাব-১১-এর অধিনায়ক কর্নেল কাজী শামসের উদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম প্রমুখ।
গত ৩ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এসপি হারুনকে পুলিশ সদর দপ্তরে বদলি করা হলেও নতুন পুলিশ সুপার না আসায় তিনি নারায়ণগঞ্জে অবস্থান করেন।
বুধবার (৬ নভেম্বর) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে এসেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। ওই অনুষ্ঠানে প্রথম দিকে এসপি হারুনকে একটু দেখা গেলেও পরে আর দেখা যায়নি।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এসপি হারুনের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শুরু হবে শিগগির।
নানা কর্মকাণ্ডে বিতর্কিত এসপি হারুন অর রশিদ গাজীপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ আসার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমানের সঙ্গে তার বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে নানা সময়ে। এ নিয়ে চাপা উত্তেজনা ছিল নারায়ণগঞ্জে।
এরই মধ্যে এসপি হারুনের বিরুদ্ধে উঠল আম্বার গ্রুপের চেয়ারম্যান শওকত আজিজ রাসেলের স্ত্রী ফারাহ রাসেল ও ছেলে আনাব আজিজকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ।
শওকত আজিজ রাসেল জানান, তাকে ফাঁসানোর জন্য তার গাড়িটি আগেই ঢাকা ক্লাবের সামনে থেকে নারায়ণগঞ্জ নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন রাসেলের ঢাকার বাড়ি থেকে তার স্ত্রী ফারাহ রাসেল ও ছেলে আনাব আজিজ তুলে নিয়ে যায়। পরে গাড়িতে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলে নাটক সাজিয়ে পরদিন জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন এসপি হারুন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১ নভেম্বর রাত পৌনে ১টায় নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড চৌরঙ্গী ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে শওকত আজিজ রাসেলের গাড়িতে তল্লাশি করে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ চালক সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় গাড়িতে থাকা শওকত আজিজ রাসেলের স্ত্রী ফারা রাসেল ও ছেলে আনাব আজিজকে।
পরে দুপুরের দিকে রাসেলের বাবা পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ হাশেম ও বড় ছেলে আজিজ আল কায়সার টিটু এসপি অফিস থেকে ছেলের বউ ও নাতিকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেন। তবে শওকত আজিজ রাসেল ও গাড়ি চালক সুমনকে আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা দায়ের করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
সাইনবোর্ড চৌরঙ্গী ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে রাসেলের স্ত্রী ও ছেলেকে গাড়িসহ আটকের দাবি করা হলেও রাসেলের বাসার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তার বাসা থেকে স্ত্রী ও ছেলেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।