সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে এসপি হারুনের বদলি হয়েছে মাত্র দুই সপ্তাহ না পেরুতেই এবার থানার ভিতরেই এক বাদীকে মারধর করেছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী। এসপি হারুনের আমলে থানার ভিতরে তো দুরের কথা জেলার কোথাও কোন মামলার বাদীর উপর হাত তোলার সাহস পায়নি। তবে এই ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ কি ভুমিকা রেখেছে তা দেখার বিষয়।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, ফতুল্লা থানাধীন কুতুবপুরের বউবাজার এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের দুই পক্ষের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চলছে উত্তেজনা। এরই সূত্র ধরে ১৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে শীর্ষ সন্ত্রাসী মীর হোসেন মীরু বাহিনীর সদস্যরা মুরাদ নামের এক ব্যবসায়ীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেয়।
মুরাদের ভাই সেলিম এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় বৃহস্পতিবার রাতে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এ অভিযোগের ব্যাপারে তদন্তকারী অফিসার এসআই মিজান বাদী সেলিমকে শুক্রবার রাতে থানায় আসতে বলেন।
বাদী সেলিম শুক্রবার রাতে থানায় প্রবেশের সময় জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল আলীর সাথে দেখা হয়। এ সময় মীর সোহেল ও তার সাথে থাকা শাহীন থানা গেটের সামনে সেলিমকে মারধর করে।
এক পর্যায়ে তাকে টেনে হিচড়ে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হাসানুজ্জামানের রুমে তাকে নিয়ে যায়। সেখানে উল্টো পুুলিশ আওয়ামীলীগ নেতার পক্ষ নিয়ে হাসানুজ্জামান তাকে শাসিয়েছে বলে অভিযোগ। সেলিমের উপর থানার ভেতরে অনাকাঙ্খিত ঘটনায় কুতুবপুরের সন্ত্রাসী মীরুর বিরুদ্ধে রাতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে এলাকাবাসী।
তবে অপর একটি সূত্র জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যার পর বউবাজার এলাকায় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে দুই গ্রুপ। রাতে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় কমপক্ষে ৪ জন আহত হয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, ফতুল্লা কুতুবপুরের সন্ত্রাসী মীর হোসেন মীরুর বাহিনী বৃহস্পতিবার বিকেলে কুতুবপুর বউবাজার এলাকায় মুরাদ নামে এক ব্যবসায়ীর মাথায় পিস্তল তাক করে হুমকি ধামকি দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে।
এ ঘটনায় এদিন রাতেই মুরাদের ভাই চাঁদ শিকদার সেলিম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। থানায় অভিযোগ দায়েরের পর এসআই মিজান ঘটনাস্থলে আসেন এবং শুক্রবার রাতে তাকে থানায় আসতে বলেন। সেই অনুযায়ী সেলিম শুক্রবার রাতে থানায় আসে।
সেলিম আরও অভিযোগ করেন, ওসি তদন্তের রুমে নেওয়ার পর তিনি আমাকে উল্টো ধমকাচ্ছিলেন আর বলছিলেন ‘থানায় আপনার কাজ কি, কেন এসেছেন!’
সেলিম বলেন, এভাবে থানার ভেতরই যদি আমাদের উপর হামলা করে তাহলে বাইরে আমাদের নিরাপত্তা কতটুকু এবার বুঝে নেন।
এ ব্যাপারে মীর সোহেল আলীর স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে ধাক্কাধাক্কির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি সেলিমকে থানায় দেখে আমার অফিসে ডেকেছি কি হয়েছে তা বসে কথা বলার জন্য। এর বেশি কিছু হয়নি।
ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা জানা নেই। আমি সে সময় থানায় ছিলাম না।