সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় একটি বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। আর অগ্নিকান্ডে রুমের ভেতরে থাকা শম্পা আক্তার (২২) নামে গার্মেন্টসকর্মী নিহত হয়েছেন। আর অগ্নিকান্ডে একটি বাড়ির টিনের তৈরি ২০টি রুম পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা দাবি করেন।
২২ নভেম্বর শুক্রবা সন্ধায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মুসলিমনগর নয়াবাজার এলাকার ইলিয়াস সরদারের বাড়িতে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকান্ডে নিহত শম্পা আক্তার জামালপুরের মাদারগঞ্জ থানার ফৈটামারী এলাকার সোহরাব মিয়ার মেয়ে। আর সুমনের স্ত্রী।
এদিকে শম্পা আক্তারকে রুমে তালাবদ্ধ করে স্বামী নামাজ পড়তে গিয়ে এসে দেখেন পুরো বাড়ি পুড়ে ছাই এবং স্ত্রী শম্পাও পুড়ে ছাই হয়ে যায়। স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে আগুনের তাপে তার রুমে যেতে পারেনি। পরে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে স্বামী সুমন।
অগ্নিকান্ডের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাহিদা বারিক ও ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ওসি আসলাম হোসেন। ইউএনও ঘটনার খোজখবর নেন এবং অগ্নিকান্ডে নিহতের স্বামী ও পরিবারের খোজখরর নিয়ে তাদেরকে শান্তনা দেন।
এসময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা অনুদান দেয়া হয়। আর অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়ে খোজ খবর নিয়ে অনুদান দেয়ার চিন্তা ভাবনা রয়েছে।
প্রত্যক্ষর্শী ও ফায়ার সার্ভিস সুত্রে জানা গেছে, ফতুল্লার মুসলিমনগর নয়াবাজার এলাকার ইলিয়াস মিয়ার বাড়িতে টিনের তৈরি ২য় তলা বাড়ি করা হয়। নিচে ১০টি এবং ২য় তলা ১০টি রুম তৈরি করে ভাড়া দেয়া হয়। শুক্রবার সন্ধায় ২য় তলা হতে হঠাৎ করে আগুন লেগে খুব অল্পসময়ের মধ্যে পুরো বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকান্ডে পুরো বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। বাড়িতে বসবাসকারী ভাড়াটিয়ারা তাদের ঘর হতে বের হতে পারলেও তাদের ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারেনি। অগ্নিকান্ডের সংবাদ পেয়ে ফতুল্লার বিসিক ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হলেও এরমধ্যে পুরো বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আর বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষে থাকা শম্পা আক্তার নামের এক গার্মেন্টসকর্মী নিহত হয়।
নিহত শম্পা আক্তার ও তার স্বামী শাসনগাও এলাকার ক্রোনী গ্রুপের অবন্তি কালার নামে একটি গার্মেন্টে চাকরী করার সুবাধে চলতি মাসের এক তারিখে ঐ বাড়িতে ভাড়া আসে।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আরেফিন জানান, টিনের দিয়ে ২য় তলা ভবন করে ভাড়া দেয়া হয়। অগ্নিকান্ডের পর ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। কিভাবে আগুন রেগেছে এখনো তা নির্ধারণ করা যায়নি। আর অগ্নিকান্ডে বাড়ির সবাই বের হতে পারলেও একটি কক্ষে তালাবদ্ধ থাকায় এক নারী বের হতে না পাড়ায় মারা যায়। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন নিহত নারীর লাশ উদ্ধার করলেও নারী পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
ইউএনও নাহিদা বারিক জানান, অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তের খোজখবর নেয়া হয়। আর আগুনে পুড়ে নিহত হওয়া নারীর পরিবারের খোজ খবর নেয়া হয় এবং তাদেরকে শান্তনা দেয়া। স্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী সুমন অচেতন হয়ে পড়ে। তারও খোজখবর নেয়া হয়। পরে অগ্নিকান্ডে নিহত নারীর পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে নগদ ২০ হাজার টাকা অনুদান দেয়া হয়।