পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকুরীর নামে প্রতারণা, ২৪ প্রতারক গ্রেপ্তার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

রাজধানীর উল্টরা থেকে ভূয়া এমএরএম কোম্পানীর নামে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ২৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১১)। ওই সময় প্রতারণার শিকার ১০১ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। ২৫ নভেম্বর সোমবার সন্ধায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান র‌্যাব-১১ এর কোম্পানী কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন চৌধুরী।

তিনি জানান, র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ২৪ নভেম্বর বিকেলে ডিএমপি ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১০নং সেক্টর এলাকায় ‘লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামক ভুয়া এমএলএম কোম্পানীতে অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় ১০১ জন প্রতারিত ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। অভিযানের সময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমান নথিপত্র জব্দ করা হয়।

র‌্যাব আরও জানায়, অতীতে বিভিন্ন এমএলএল কোম্পানী প্রতারণার মাধ্যমে দেশের সাধারণ জনগণের নিকট হতে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে। এরই প্রেক্ষিতে সরকার পরবর্তীতে বিভিন্ন এমএলএম কোম্পানীর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। তদুপরি বিভিন্ন এমএলএম কোম্পানী নানা পন্থায় এখনো প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং বেকার যুব সমাজকে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

প্রতারিত ও ভূক্তভোগী কয়েকজনের কাছ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে এবং অনুসন্ধানে প্রাপ্ত অভিযোগের সত্যতার ভিত্তিতে র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল ডিএমপি ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১০নং সেক্টরের ৭নং রোড হতে ‘লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামক এমএলএম কোম্পানীতে অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের ২৪ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মোঃ নজরুল ইসলাম (২৮), মোঃ গোলাম কিবরিয়া (৩৮), মোঃ সিদ্দিকুর রহমান (৩৭), বিপুল চৌধুরী (২৮), সালমান ফারসি (২০), মোঃ সেলিম রেজা (২৭), মোঃ খায়রুজ্জামান টিটু (২৫), মোঃ আলী আকবর (২২), সুজন মিয়া (২৫), মোঃ কামরুল আহসান (৪৯), মোঃ রুহুল আমিন (২১), মোঃ সুমন মুন্সী (৩১), মোঃ ইসমাইল হোসেন (২৩), মোঃ রেজাউল করিম (২৫), মোঃ ইসমাইল হোসেন (২২), মোঃ আরিফুল ইসলাম যাদু (২৬), মোঃ আল আমিন (২১), মোঃ মোবারক হোসেন (২০), মোঃ মাহাবুর রহমান (২৬), মোঃ মেহেদী হাসান (২২), মোঃ মাইদুল ইসলাম (২৬), মোঃ সোহাগ (২৯), রাকিব শেখ (২৪) ও মোঃ সাদ্দাম হোসেন (২৫)।

র‌্যাব আরও জানায়, উক্ত ‘লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামক ভুয়া এমএলএম কোম্পানী মাসিক ১৬ হাজার ও তদুর্ধ টাকা বেতনের প্রতিশ্রুতি সহ লোভনীয় অফার দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে চাকুরী প্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীদের ফাঁদে ফেলে। ভর্তির শুরুতে কোম্পানীর আর্থিক লাভ ও পণ্য বিক্রির কমিশনের আশ¡াসে বাধ্যতামূলক জামানত হিসাবে জন-প্রতি ৫৫ হাজার বা তদুর্ধ্ব টাকা গ্রহণ করে।

পরবর্তীতে প্রশিক্ষণের নামে সপ্তাহ খানেক কালক্ষেপন করে প্রত্যেককে নতুন ২ জন সদস্য সংগ্রহের শর্ত প্রদান করে। নতুন সদস্য সংগ্রহ করে দিলে সংগৃহিত টাকার সামান্য কমিশন প্রদান করে। নতুন সদস্য দিতে না পারলে কুট-কৌশলের আশ্রয় নিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে খালি ষ্ট্যাম্প ও আপোষনামায় জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে তাড়িয়ে দেয়। প্রতিবাদ করলে ভাড়াটিয়া লোকজন দ্বারা আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতনও করে থাকে।

র‌্যাব জানায়, অভিযানকালে ভুয়া এমএলএম কোম্পানীর প্রশিক্ষণের নামে সেমিনার কক্ষ হতে প্রতারণার শিকার ১০১ জন ভূক্তভোগীদের উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও উক্ত কোম্পানীর অফিস থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৮টি মনিটর, বিপুল সংখ্যক নথিপত্র ও নগদ ৩১ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।