সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে উপজেলার ইসলামপুর এলাকায় এক শারীরিক প্রতিবন্ধী ফেক্সিলোড ও বিকাশ ব্যবসায়ী শাহআলমকে কুপিয়ে পিটিয়ে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন সহ ২লাখ ১২হাজার টাকার মালামাল ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার দেড় মাস পর মামলা গ্রহণ করেছে থানা পুলিশ।
এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকায় রমিজ উদ্দিনের বাড়ির ভাড়াটিয়া একই ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামের নুর হোসেনের ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহআলম মেঘনা ইসলামপুর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে পরিবারের সাথে বসবাস করে আসছিলেন। গত ১৪ অক্টোবর রাত ১১টায় ওই ব্যবসায়ী প্রতিদিনের মত তার দোকান বন্ধ করে বাড়ির দিকে রওনা হন। এসময় আগে থেকে প্রস্ততি থাকা ইসলামপুর এলাকার ফজলুল হকের ছেলে ছিনতাইকারী রুবেল, ডালিম, রিপন সহ আরো অজ্ঞাত কয়েকজন মিলে তার বাসার সামনে আসা মাত্র এলোপাথারি ছুরিকাঘাত করে।
শাহআলমের অভিযোগ- এক পর্যায়ে শাহআলম ছিনতাইকারী রুবেলকে ঝাপটে ধরলে ছিনতাইকারী রুবেল মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করলে তার ডাকচিৎকারে পাশের ভাড়ির ভাড়াটিয়া জলিলও তার ছেলে সজিব ছিনতাইকারী রুবেলকে দেখতে পায়। পরে ইটের আঘাতে অজ্ঞান হয়ে পরে থাকে শাহআলম। ছিনতাইকারীরা তাকে মৃত ভেবে তার কাছে থাকা নগদ ১লাখ ৫৭ হাজার টাকা, ৯টি মোবাইল ফোন সেট পেনড্রাইভ, সিমকার্ড সহ মোট ২লাখ ১২হাজার টাকার মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে জলিলও তার ছেলে সজিব আরোও কয়েকজন শাহআলমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
ঘটনার ওই দিন রাতে পুলিশ অভিযুক্ত রুবেলকে সোনারগাঁ টহলরত পুলিশের এসআই আমিনুল দিপু গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে। পরে অন্য একটি মামলায় তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। পরের দিন শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহআলম বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহআলম কথা হলে তিনি আরও অভিযোগ করেন- তিনি থানায় অভিযোগ করার পর মামলা না নিয়ে সোনারগাঁ থানার এসআই আমিনুল বিষয়টি এলাকায় মীমাংসার করার জন্য বলে থানা থেকে বের করে দেন। পরে পিরোজপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার সেলিম রেজাকে বিষয়টি জানালে ১নভেম্বর একটি আপোষ মীমাংসার মাধ্যমে সঠিক যাচাই বাছাই করে সত্যতা পায় তারা ছিনতাই করেছে বলে শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহআলমকে কিছু জরিমানা দিতে। কিন্তু ছিনতাইকারীরা জরিমানা না দিয়ে উল্টো পিরোজপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার সেলিম রেজার বিরুদ্ধে ওই দিন রাতে থানায় একটি অভিযোগ দিলে পুলিশের এসআই মাসুদ রানা মেম্বার সেলিম রেজাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসলে আষাড়িয়ারচর এলাকায় তাকে ছেড়ে দেয়।
এ ব্যাপারে এসআই মাসুদ রানা বলেন, আমি সেলিম মেম্বাকে গ্রেপ্তার করিনি। তার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম।
এ ব্যাপারে পিরোজপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার সেলিম রেজা বলেন, আমি সঠিক বিচার করার পরেও আমাকে বিনা কারনে পুলিশ হয়রানী করেছে। রোববার বিকেলে পিরোজপুর ইউনিয়নের চেয়ানম্যান মাসুদুর রহমান মাসুম ছিনতাইয়ের ঘটনার বিচারশালিসের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু চেয়ারম্যান বলেন যেহেতু এটি একটি পুলিশ কেইছ তাই আমি বিচার না করে পুলিশকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। অভিযোগ রয়েছে ছিনতাইকারী প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না।
এ ঘটনায় শাহআলম বাদী হয়ে ৪জনকে আসামী করে ২৪ নভেম্বর রবিবার রাতে সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, হামলার ঘটনায় একটি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসামিদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।