সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান বাচ্চু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজকে দল থেকে বহিস্কারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আড়াইহাজারের সকল জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ওই সংবাদ সম্মেলনে ইকবাল পারভেজকে আওয়ামীলীগে দৃষ্কৃতকারী ঐক্য বিনষ্টকারী দুর্নীতিবাজ এবং মিজানুর রহমান বাচ্চুকে পাগলা বাচ্চু হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার।
২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে আড়াইহাজার পৌর বাজারে অবস্থিত ‘আড়াইহাজার ক্লাব’ কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলেনে এমনটা দাবি করেন হেলো সরকার। হেলো সরকার তার লিখিত বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী দুস্কৃতিকারী হিসেবে উল্লেখ করে তাদের বহিস্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার আওয়ামীলীগ নেতা ইকবাল পারভেজের দুর্নীতি তুলে ধরে বলেন, ইকবাল পারভেজ সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খানের মুহুরি হিসেবে একসময় কাজ করতো। সাবেক প্রতিমন্ত্রীর দাপটেই বয়স জালিয়াতি করে রাজউকের সহকারি পরিচালক হিসেবে চাকুরিতে যোগ দেয়। তিনি পাঁচ বছর চাকরি করে পরিত্যক্ত সম্পত্তি, বিশেষ করে গুলশান, বনানী ও মতিঝিলে বিভিন্ন সিন্ডিকেটের যোগসাজশে ভূঁয়া মালিক সাঁজিয়ে ফাইল গায়েব করে দিতো। এভাবে মূল্যবান সম্পত্তি বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা বানিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যায়। দুদকের তদন্তের পর ২০১৬ সালে ডিসেম্বর মাসে তাকে জেল হাজতে পাঠায় আদালত।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান বাচ্চুকে পাগলা বাচ্চু হিসেবে আখ্যায়িত করে হেলো সরকার বলেন, এক সময় জাসদের গণবাহিনীর কমান্ডার ছিলেন তিনি। ১৯৭৩ সালে জাসদ থেকে পাগলা বাচ্চু সংসদ নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। দুর্নীতিবাজ ও ষড়যন্ত্রকারী জনবিচ্ছিন্ন ইকবাল পারভেজ ও মিজানুর রহমান পাগলা বাচ্চু খোলস পাল্টে বিশেষ সুবিধা দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদ বাগিয়ে নেয়।
হেলো সরকার আরও অভিযোগ তুলে বলেন, তারা এখন নামে-বেনামে সংসদ সদস্যের (এমপি নজরুল ইসলাম বাবু) নামে দুদকে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। তাকে হেয়প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া, খোরশিদ আলম সরকার, মাহবুবুর রহমান রোমান, আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, নারী ভাইস চেয়ারম্যান ঝর্ণা রহমান, আড়াইহাজার পৌর মেয়র সুন্দর আলী, গোপালদী পৌর মেয়র আব্দুল হালিম সিকদার, বিশ্বনন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া, দুপ্তারা ইউনিয়ন পরিষদেও জেয়ারম্যান সাহিদা মোশারফ, ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাক মিয়া, ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তালেব মোল্লা, মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমান উল্যাহ আমান, সাতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অদুদ মাহমুদ, হাইজাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হোসেন, উচিৎপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিমউদ্দিন মোল্লা, খাগকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইলাম স্বপন, থানা যুবলীগের সভাপতি আহমেদুল কবির উজ্জল, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম ভূঁইয়া, থানা ছাত্রীগের সভাপতি মামুন অর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক আছলাম পাঠান, থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সৈয়দ ইসমাইল ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির সহ আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এখানে উল্লেখ্যযে, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ইকবাল পারভেজের পক্ষে নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে কাজ করেছিলেন হেলো সরকার ও মিজানুর রহমান বাচ্চু। ওই নির্বাচনে বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর বিরোধীতা করেছিলেন হেলো সরকার। এমনকি বাবুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সভা সমাবেশে জোড়ালো বক্তব্য দিয়েছিলেন হেলো সরকার। ইকবাল পারভেজ ওই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন। পরবর্তীতে এ আসনে তৃতীয় বারের মত মনোনয়ন পান নজরুল ইসলাম বাবু। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এমপি বাবুর সমর্থন ছিল শাহজালাল মিয়ার পক্ষে। কিন্তু নির্বাচনে কেন্দ্র থেকে হেলো সরকার নৌকা প্রতীক নিয়ে আসলে শাহজালাল মিয়া নির্বাচন থেকে সরে দাড়ালে হেলো সরকার চেয়ারম্যান হন এবং এমপি বাবুর সঙ্গে রাজনীতিতে সক্রিয় হন।