দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, যদি আল্লাহ সহায় হন তাহলে আগামী ৩০ডিসেম্বর ভোটের দিন রাতেই এই আসনটি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে চাই। সেজন্য আপনারা সকলে একত্রে কাজ করে সিংহ প্রতীককে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে হবে।
২১ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেলে সোনারগাঁও উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নের উলিপুরা বাজারে নির্বাচনী উঠান বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করে ভোট প্রার্থনা করেন। উঠান বৈঠক শেষেও তিনি রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছেন।
কায়সার হাসনাত আরো বলেন, আমি আপনাদের সুখে রাখতে চাই। আপনাদের সুখে দুঃখে সাথে থাকতে চাই। আমি যতদিন ক্ষমতায় ছিলাম ততদিন এ সোনারগাঁয়ে কাউকে হামলা মামলা দিয়ে ঘরছাড়া করিনি। আমি সোনারগাঁয়ে সকল রাজনৈতিক দল মতাদর্শের মধ্যে সহাবস্থানের রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলাম। আমি যদি আগামীতে ক্ষমতায় আসি তাহলে সকল রাজনৈতিক দলের লোকদেন দিয়ে এক ছাদের নিচে বসবাস করবো। যেখানে থাকবেনা কোন হানাহানি মারামারি ও ক্ষমতার অপব্যবহার। সেজন্য আমাকে সিংহ মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- মোগরাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুর ইসলাম নান্নু, সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার, সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কহিনুর ইসলাম রুমা ও রোকসানা মেম্বার সহ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী এবং স্থানীয় মান্যগণ্য ব্যক্তিবর্গ সহ বিভিন্ন শ্রেনি পেশার লোকজন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এ আসনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ তার মহাজোটের শরীক দল জাতীয়পার্টিকে এ আসনটি ছেড়ে দিলে মোশারফ হোসেন মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেন। মোশারফ হোসেন কায়সার হাসনাতের আপন চাচা। ওই নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এমপি নির্বাচিত হন লিয়াকত হোসেন খোকা।
এবার মোশারফ হোসেনও মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। মোশারফ হোসেন এখন মাঠে নেমেছেন ভাতিজা কায়সার হাসনাতের পক্ষে। মোশারফ হোসেন একটি সমাবেশে বলেছেন, এমপি খোকা আপনি বাড়ি গিয়ে ঘুমান। সোনারগাঁয়ে আপনার ১০ পারসেন্ট ভোটও নাই। আপনি ১০ পারসেন্ট ভোট পেলেই আমরা ধরে নিব আপনি এমপি হয়ে গেছেন। তাই খেলা বাদ দিয়ে বাড়ি গিয়ে ঘুমান। আপনি যে খেলা খেলতে চান সেই খেলা আমরা ৬০ বছর আগেই শেষ করে এসেছি।’
এ আসন থেকে জাতীয়পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন এরশাদের পালিত মেয়ে ও কেন্দ্রীয়মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক অনন্যা হুসেইন মৌসুমী। তিনিও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। তবে তার মনোনয়ন বাতিল হলে তিনি আপীল করেন। আপীলেও তার মনোনয়ন বাতিল করা হলে তিনি এখন আর নির্বাচনী আলোচনায় নেই। কারো পক্ষেই এখনও তিনি মাঠে নামেননি। সোনারগাঁও উপজেলা জাতীয়পার্টির সভাপতিও ছিলেন তিনি। গত ২০ নভেম্বর ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাজকে কেন্দ্র করে মৌসুমীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামাল দায়ের করে এমপি খোকা অনুগামী উপজেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি ফজলুুল হক মাস্টার। ওই মামলার পর দিন সোনারগাঁও উপজেলা জাতীয়পার্টি থেকে মৌসুমীকে বাদ দিয়ে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে জেলা জাতীয়পার্টি।