দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে মহাজোট মনোনিত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী জাতীয় পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকাকে নিয়ে মাঠে নেমেছেন সোনারগাঁও আওয়ামীলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা। কিন্তু ভোটারদের কাছে লাঙ্গল প্রতীকটি আগ্রহী করে তুলতে পারছেনা আওয়ামীলীগের এ অংশের নেতাকর্মীরা।
যে কারনে স্থানীয়রা বলছেন- সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের এসব নেতাকর্মীরা মাঠে নামলেও নির্বাচনের মাঠে লাঙ্গল চষতে পারছেনা। এখানে আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত সিংহ প্রতীকে স্বতন্ত্র নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় আওয়ামীলীগের সকল শ্রেণির নেতাকর্মীদের কাছে লাঙ্গলের গ্রহনের যোগ্যতা তুলে ধরতে পারেননি। এখানে লাঙ্গলের জয়ের আশা ক্ষীণ। অন্যদিকে কায়সার বলছেন, এ আসনে তিনি নির্বাচিত হয়ে ভোটের দিন রাতেই শেখ হাসিনাকে আসনটি উপহার দিবেন।
জানাগেছে, এমপি খোকার নির্বাচনী প্রচার প্রচারনায় সোনারগাঁও আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইঁয়া, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান আহমেদ মোল্লা বাদশা, উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট নূরজাহান বেগম লাঙ্গলের পক্ষে মাঠে নেমেছেন। তবে সেটা শুধুমাত্র ফটোসেশন ছাড়া আর কিছুই নয়। অনেকটা নিয়ম রক্ষার্থে তারা মহাজোটের প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নেমেছেন। বিশেষ করে কালামের সঙ্গে কায়সার হাসনাতের দূরত্ব থাকায় তিনি চাচ্ছেন এখানে খোকা ও কায়সার হাসনাতের দুজনেই পরাজয়। এতে কালামের রাজনীতি এখানে টিকে থাকবে।
এছাড়া সোনারগাঁ পৌরসভার মেয়র সাদেকুর রহমান, পিরোজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, কাঁচপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ ওমর, বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ডা. আব্দুর রউফ, বারদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহিরুল হক, নোয়াগাও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউসুফ দেওয়ান, জামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হা-মীম শিকদার শিপলু, শম্ভুপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রব, সনমান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ ও সাবেক চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন সাবু নির্বাচনী প্রচারনায় সক্রিয় আছেন। যে কারনে এখানে আশা ছাড়েনি খোকার সমর্থকেরা। তারা এখণও শেষ চেষ্টা করছেন নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ভোটের লড়াই বাড়াতে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এ আসনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ তার মহাজোটের শরীক দল জাতীয়পার্টিকে এ আসনটি ছেড়ে দিলে মোশারফ হোসেন মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেন। মোশারফ হোসেন কায়সার হাসনাতের আপন চাচা। ওই নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এমপি নির্বাচিত হন লিয়াকত হোসেন খোকা।
এবার মোশারফ হোসেনও মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। মোশারফ হোসেন এখন মাঠে নেমেছেন ভাতিজা কায়সার হাসনাতের পক্ষে। মোশারফ হোসেন একটি সমাবেশে বলেছেন, এমপি খোকা আপনি বাড়ি গিয়ে ঘুমান। সোনারগাঁয়ে আপনার ১০ পারসেন্ট ভোটও নাই। আপনি ১০ পারসেন্ট ভোট পেলেই আমরা ধরে নিব আপনি এমপি হয়ে গেছেন। তাই খেলা বাদ দিয়ে বাড়ি গিয়ে ঘুমান। আপনি যে খেলা খেলতে চান সেই খেলা আমরা ৬০ বছর আগেই শেষ করে এসেছি।’
এ আসন থেকে জাতীয়পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন এরশাদের পালিত মেয়ে ও কেন্দ্রীয়মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক অনন্যা হুসেইন মৌসুমী। তিনিও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। তবে তার মনোনয়ন বাতিল হলে তিনি আপীল করেন। আপীলেও তার মনোনয়ন বাতিল করা হলে তিনি এখন আর নির্বাচনী আলোচনায় নেই। কারো পক্ষেই এখনও তিনি মাঠে নামেননি। সোনারগাঁও উপজেলা জাতীয়পার্টির সভাপতিও ছিলেন তিনি। গত ২০ নভেম্বর ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাজকে কেন্দ্র করে মৌসুমীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামাল দায়ের করে এমপি খোকা অনুগামী উপজেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি ফজলুুল হক মাস্টার। ওই মামলার পর দিন সোনারগাঁও উপজেলা জাতীয়পার্টি থেকে মৌসুমীকে বাদ দিয়ে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে জেলা জাতীয়পার্টি।