সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে দুই বোনকে ধর্ষণ চেষ্টা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপত্তিজনক ছবি পোস্ট করার অভিযোগে ভূয়া সেনা সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১)। ৮ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে র্যাবের মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দীন এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল গত ৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাইনবোর্ড এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে দুই বোনকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা এবং ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি পোষ্ট করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত আসামী মোঃ আলমগীর খাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব আরও জানান, মোঃ আলমগীর হোসেনের বাড়ী নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানাধীন কাটা কুশিয়া এলাকায়। সে ২০১২ সালে ঢাকা সেনানিবাসস্থ কচুক্ষেত আর্মি স্টোরে চাকুরী নেয়। সেখানে চাকুরীকালীন সময়ে সে সেনাবাহিনীর ভূয়া আইডি কার্ড ও ট্রাওজার সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে সে বিভিন্ন সময়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করতো।
এরই ধারাবাহিকতায় সে সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে মিথ্যা পরিচয়ে ফেসবুক আইডি খুলে ভিকটিমদের সাথে ভাই-বোনের সম্পর্ক গড়ে তুলে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী গত বছরের ২৫ ডিসে¤¦র ভিকটিমের বাড়িতে কৌশলে অবস্থান করে। ভিকটিমের বাড়ীতে অবস্থানকালীন সময়ে ভাই-বোনের সম্পর্কে সুবাদে ভিকটিমের বিভিন্ন আপত্তিকর ছবি তার মোবাইলে ধারণ করে। সে ঐদিন রাত বারোটার সময় কৌশলে ভিকটিমকে তার কাম-প্রবৃত্তি চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় এবং ধর্ষণের চেষ্টা করে। একই সাথে এই বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য ভিকটিমকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাদের বাড়ী হতে চলে যায়।
পরবর্তীতে আসামী আলমগীর বিভিন্ন সময়ে ভিকটিমদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেয় এবং বলে তার কথামতো তার সাথে ঘুরতে না গেলে ভিকটিমের আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দিবে। আলমগীর গত ৩০ ডিসেম্বর ভিকটিম দুই বোনকে বিভিন্ন কৌশলে ফুসলাইয়া ও অভিনব কায়দায় ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অপহরণপূর্বক ব্লার্ক মেইল করে তাদেরকে ঢাকা হতে বরিশালগামী কীর্তনখোলা লঞ্চের কেবিনে উঠিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা করে। রাত আনুমানিক ১১টার দিকে আসামী আলমগীর লঞ্চের কেবিনের ভিতর পর্যায়ক্রমে ভিকটিম দুই বোনকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে তাদের পরণের জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলে ও জোড়পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ভিকটিমদের মারধর ও হত্যার চেষ্টা করে।
এছাড়াও সে উভয় ভিকটিমের সাথে জোরপূর্বক আপত্তিকর ছবি তার মোবাইলে ধারণ করে। পরদিন ভোরে ভিকটিমদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ছিনতাই করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ভিকটিমদেরকে তাদের নিজ বাড়ীতে ফেরত পাঠানো হয়।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-১১ কর্তৃক গোয়েন্দা নজরদারী ও গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা পেয়ে র্যাব-১১ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল গত ৭ জানুয়ারি বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাইনবোর্ড এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত আসামী মোঃ আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামী বর্ণিত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে।