সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সমিতির গঠিত নির্বাচন কমিশন ইস্যূতে তলবী সভা দাবি করে ৩১৭ জন আইনজীবীর স্বাক্ষরিত আবেদনপত্র জমা দেয়া হয়েছে। এই আবেদনের অনুলিপি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে পাঠানো হবে বলেও জানান আবেদনকারীরা।
১৩ জানুয়ারি সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আনিসুর রহমান এবং আইনজীবী সমিতির বরাবর এই আবেদন জমা দেন আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। এবার মোট ভোটার রয়েছেন ৯শতাধিক এবং সমিতিতে আইনজীবী রয়েছেন প্রায় ১২’শ। তলবী সভা ডাকার শর্তে রয়েছে আবেদনকারীরা সমিতির ৫১ ভাগ সদস্য হতে হবে।
তলবী সভা চেয়ে আবেদনে তারা দাবি করেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্রের ১৪ ধারা ( অনুচ্ছেদ) অনুযায়ী গত ৯ জানুয়ারি সাধারণ সভায় সদস্যের স্বাক্ষর না নিয়া এবং মোট সদস্য সংখ্যায় ৩/১ অংশের উপস্থিতি নিশ্চিত না করিয়া এবং সাধারণ সদস্যদের লিখিত সম্মতি না নিয়া অবৈধভাবে গঠনতন্ত্রের বিধান না মেনে সম্পূর্ণ অগঠনতান্ত্রিকভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্রের ১৫ধারা (অনুচ্ছেদ) অনুযায়ী জরুরী ভিত্তিতে তলবী সভা ডাকার আবেদন।
তবে এদিকে আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্রের ১৫নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- যদি সাধারণ সম্পাদক বা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েসাধারণ সভা আহ্বান করিতে অবহেলা করেন বা ব্যর্থ হন, তাহা হইলে সমিতির ৫১ ভাগ সদস্য কর্তৃক নির্দিষ্ট এজেন্ডা উল্লেখ করে লিখিতভাবে সমিতির সাধারণ সম্পাদক বা সাধারণ সম্পাদকের অনুপুস্থিতিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বরাবর তলবী সভা আহ্বানের অনুরোধ করিতে পারিবেন। যদি তলবী সভা আহ্বান করার অনুরোধ করা স্বত্ত্বেও সাধারণ সম্পাদক বা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তলবী সভা আহ্বান করিতে ব্যর্থ হয়, দরখাস্তকারীগণ তলবী সভা আহ্বান করিতে পারিবে এবং তলবী সভার যে কোন সিদ্ধান্ত সমিতি কার্যকরী পরিষদ কার্যকর করিতে বাধ্য থাকিবেন।
আবেদনে জমা দেয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন- অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির, অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকির ও অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান সহ অন্যান্য আইনজীবীরা।
তবে এর আগেই গত ১২ জানুয়ারি রবিবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে ৫ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী- নির্বাচন কমিশন থেকে আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ ও মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে পারবেন। ছুটির দিনেও খোলা থাকবে।
নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের যাচাই বাছাই ও প্রাথমিক বৈধ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হবে আগামী ১৬ জানুয়ারি। মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন ১৭ জানুয়ারি থেকে ১৯ জানুয়ারির সকাল ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
চূড়ান্ত বৈধ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হবে ২০ জানুয়ারি সোমবার। ২৯ জানুয়ারি বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে। ভোট গ্রহণ করা হবে আইনজীবী সমিতির নির্মাণাধীন বার ভবনের নিচ তলায়।
নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র ক্রয় করতে প্রার্থীদের যোগ্যতার মধ্যে রয়েছে সভাপতি পদে ১৫ বছর এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আইন পেশায় কোন আইনজীবীর ১২ বছর হতে হবে।
এছাড়াও কোষাধ্যক্ষ পদে আইন পেশায় ১০ বছর এবং আপ্যায়ণ সম্পাদক, লাইব্রেরী বিষয়ক সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক, সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক, আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক পদে ৫বছর আইন পেশায় নিয়োজিত থাকতে হবে। কার্যকরী সদস্য পদে কমপক্ষে ৩ বছর আইন পেশায় নিয়োজিত থাকতে হবে।
নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করতে কমিশন বরাবর সভাপতি পদে প্রার্থীকে দিতে হবে ১৫ হাজার টাকা এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ পদে ১০ হাজার টাকা, বিভাগীয় সম্পাদক পদে ৮ হাজার টাকা ও সদস্য পদে ৫ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। আইনজীবী সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুজ্জামানের কাছ থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ ও দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অ্যাডভোকেট আখতার হোসেন এবং নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রয়েছেন অ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন, অ্যাডভোকেট মেরিনা বেগম, অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিম ও সুখচাঁদ সরকার।