সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অতিবাহিত হয়েছে প্রায় এক বছরেরও বেশি সময়। আর এ দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করতে সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার বিএনপির নেতাকর্মীদের শিকার হতে হয়েছে বিভিন্ন ধরণের হামলা মামলার। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-(আড়াইহাজার) আসনে প্রাথমিকভাবে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন, সাবেক এমপি আতাউর রহমান খান আঙ্গুুর ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ।
কিন্তু ওই নির্বাচনে নজরুল ইসলাম আজাদকে চূড়ান্তভাবে মনোনিত করা হলেও নির্বাচনের পর থেকে আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান অদৃশ্য কারনে। ওই নির্বাচনে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন না পেয়ে রাজনীতিতে নেই আতাউর রহমান আঙ্গুরও। তবে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন না পেলেও নিয়মিত আড়াইহাজার বিএনপির নেতাকর্মীদের খোজ খবর নিচ্ছেন মাহমুদুর রহমান সুমন। সেই সঙ্গে তিনি প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের খবর নিচ্ছেন।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন- দীর্ঘদিন আড়াইহাজার বিএনপির নিয়ন্ত্রণ ছিল সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর ও তারই ভাই কেন্দ্রীয় বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এএম বদরুজ্জামান খান খসরুর উপর। খসরুর মৃত্যুর পর তার স্থলে নেতাকর্মীদের আগলে রাখেন সুমন। কিন্তু সেই স্থলে আঙ্গুর নেতাকর্মীদের ছায়া দিয়ে রাখেননি।
নেতাকর্মীরা আরও বলছেন- একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নজরুল ইসলাম আজাদের উদয়ের কারণে দুই ভাইয়ের রাজনীতি শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল। তার ফলশ্রুতিতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নীতি নির্ধারকরা আজাদকে চূড়ান্তভাবে ধানের শীষ প্রতীক মার্কা দিয়েছিলেন। বর্তমান জেলা বিএনপির নেতৃত্বে বড় পদে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ না থাকলেও জেলা বিএনপির নিয়ন্ত্রন অনেকটা পরোক্ষভাবে তার ছিল। সব জায়গায় তিনি তদারকি করতেন।
বিএনপির নেতাকর্মীরা আরও বলছেন- জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে আড়াইহাজার বিএনপির একচ্ছত্র রাখতে আমরণ কাজ করে গেছেন প্রয়াত এএম বদরুজ্জামান খান খসরু। তিনি তার আপন ছোট ভাই আঙ্গুরকে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি পদ থেকে এনে এমপি বানিয়েছেন আড়াইহাজার বিএনপি। পরে ১/১১ এর সময় দুই ভাইয়ের বিরোধে আঙ্গুর খসরুর সঙ্গ ছড়ে চলে যান। বিএনপির সহ-সভাপতি মীরজুল হাসান নয়ন মোল্লা ও সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লার কোন নিজস্ব কর্মী বাহিনী না থাকলেও তারা ছিলেন খসরুর নেতৃত্বে।
তাছাড়া মীরজুল হাসান নয়ন মোল্লা বর্তমানে রাজনীতি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন বলে দাবিও করলেও স্বপদে বহাল আছেন আজোবধি। বর্তমান জেলা বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন অনু ও তার স্ত্রী কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তার ছিলেন খসরুর নেতৃত্বে। কিন্তু হঠাৎ করে আড়াইহাজার বিএনপির সংগঠক খসরুর মৃত্যুর পর আড়াইহাজার বিএনপিতে হঠাৎ করে জাগানিয়া দেন আজাদ। খসরুর মৃত্যুর পর নেতাকর্মীরা অভিভাবক খসরুর নেতৃত্বের অভাবে অনেকে যোগদান করেন আজাদ বলয়ে।
এদিকে আড়াইহাজার বিএনপির প্রয়াত সভাপতি এএম বদরুজ্জামান খান খসরুর মৃত্যুর পর আড়াইহাজার বিএনপির নেতাকর্মীরা খসরুর ছেলে মাহমুদুর রহমান সুমনকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেন। আড়াইহাজারের রাজনীতিতে তিনি আগে থেকেই পুরোদস্তর ছিলেন।
নেতাকর্মীদের মতে, খসরুর শূন্যস্থান পূরণ করছেন তারই ছেলে সুমন। যার ফলে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর আজাদ বলয় ছেড়ে আড়াইহাজার বিএনপির আনোয়ার হোসেন অনু, পারভীন আক্তার, মিরজুল হাসান নয়ন মোল্লার মত শীর্ষ স্থানীয় নেতাকর্মীরা যোগদান করেন সুমন বলয়ে।
অন্যদিকে আরও জানাগেছে, আড়াইহাজার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবুর অস্ত্র মামলায় সাঁজা দেওয়ার পর সাধারণ সম্পাদক পান আবুল কাশেম ফকির। তিনিও মূলধারা সুমনের সঙ্গে সমন্বয় করে রাজনীতি করছেন। বর্তমানে সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোরশেদ মোল্লা আড়াইহাজার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থাকলেও সুমনের দিকেই তার সমর্থন।