সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
প্রাতিষ্ঠানিক কোন বিদ্যা অর্জন করতে পারেননি আজহারুল ইসলাম মান্নান। যে কারনে তার চাল-চলন ভাষা সবই আনস্মার্ট। অনেকটা সহজ সরল, যার ভেতরে রাজনৈতিক কোন প্রতিহিংস্বা এখনও পরিলক্ষিত হয়নি। খুব খেটে খাওয়া মানুষের পাশ থেকে আজকে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য হয়েছেন আজহারুল ইসলাম মান্নান। যে কারনে সব শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে তিনি কথাবার্তায়ও সাধারণ।
এসব বিষয় নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মুখে মাঝে সাজে সমালোচনাও শোনা যায়। কিন্তু এই আজহারুল ইসলাম মান্নানই সোনারগাঁয়ের হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মীদের একমাত্র ভরসা। নেতাকর্মীদের বিপদে আপদে এমনকি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যায়ও এগিয়ে যান মান্নান। রয়েছেন তিনিই একমাত্র রাজপথে। কিন্তু কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সোনারগাঁয়ে সুবিধাবাদীদের উৎপাত বেড়ে যায়। যারা বছরব্যাপী প্রবাসে আরামে আয়েশে কাটান তারাও দলের শীর্ষ পদ ধরে রাখতে লবিংয়ে নেমে যান। কিন্তু রাজপথে দেখা মিলেনা ছিটেফুটেও। তবে কমিটি গঠনের আওয়াজ শুরু হলে সবখানেই দেখা যায় এদের।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন- সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির নেতৃত্বে আসতে বেশকজন নেতা জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদের দ্বারস্থ হয়েছেন। সেই স্থান ছাপিয়ে কেউ কেউ কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও ধর্ণা দিচ্ছেন। মুলত যেসব নেতারা রাজপথে সক্রিয় ছিলেন না তারাই এখন লবিং করে কমিটির শীর্ষ পদে আসতে চেষ্টা করছেন। কিন্তু রাজপথে সক্রিয় আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে হামলা মামলা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তারা কেউ লবিং করছেন না। তারা তাকিয়ে আছেন মান্নানের দিকে। তবে ইতিমধ্যে সেই মান্নানের কর্তৃত্ব খর্ব করার চেষ্টায় নেমেছেন একটি গ্রুপ। যারা এক সময় সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিমের তল্পীবাহক ছিলেন। তারাই চাচ্ছেন সোনারগাঁও বিএনপির শীর্ষ দুটি পদ ভাগিয়ে নিতে, যাতে করে মান্নানের রাজনীতি ইতি টানা যায়।
আরেকটি সূত্রে জানাগেছে, উপজেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি খন্দকার আবু জাফর স্বপদে বহাল থাকতে ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছেন। যদিও রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে একেবারেই নিষ্ক্রিয়। বছরের বেশির ভাগ সময় প্রবাসে কাটান। এবার তাকে সভাপতি রেখে উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেন মাঠে নেমেছেন। মোশারফ হোসেনের বন্ধু হলেন জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ। মোশারফ হোসেন চাচ্ছেন সেক্রেটারি পদে আসতে। বর্তমান সময়ে জেলা বিএনপির সেক্রেটারির দুই পাশে দেখা যাচ্ছে জাফর ও মোশারফকে।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের দাবি- আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সোনারগাঁয়ের হাজার হাজার নেতাকর্মী মামলার শিকার হয়েছেন। এসব নেতাকর্মীদের বিপদে এগিয়ে এসেছেন একমাত্র মান্নান। বিএনপির মনোনয়ন যিনি এমপি ও মন্ত্রী হয়েছিলেন সেই রেজাউল করিম নেতাকর্মীদের পাশে এসে দাড়াননি। এমনকি উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্বে থেকেও নেতাকর্মীদের বিপদে দেখা যায়নি আবু জাফরকেও। এখন জাফর হয়েছেন সক্রিয়। আর গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান কালামের পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে ভোট প্রার্থনা করা মোশারফ রয়েছেন কঠোর সমালোচনায়।
মান্নানের এমন ভুমিকায় সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন পান এবং নেতাকর্মীদের কঠোর পরিশ্রমের ফলে সোনারগাঁবাসীর ভোটে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন মান্নান। কিন্তু ডজন ডজন রাজনৈতিক মামলায় আসামি হলে এবং আদালতে চার্জশিট তার বিরুদ্ধে দাখিল করা হলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় তাকে একাধিকার চেয়ারম্যানের পদ থেকে বরখাস্ত করেন। ওই সময় তৎকালীন উপজেলা পরিষদের দুই ভাইস চেয়ারম্যান শাহআলম রূপম ও নাসিমা আক্তার চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসতে রীতিমত লড়াইয়ে নেমে যান। গত জাতীয় নির্বাচনে মান্নান পান দলের মনোনয়ন। কিন্তু নির্বাচন সারাদেশের মত সোনারগাঁয়েও একই হয়েছে। পরাজিত হয়েছেন মান্নান। কিন্তু নেতাকর্মীদের পাশ থেকে সরে যাননি তিনি। এমনকি রাজপথে সক্রিয় রয়েছেন আগের মতই। সোনারগাঁয়ে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী মামলার শিকার,্এসব নেতাকর্মীদের একমাত্র ভরষা মান্নান। কারন মান্নানের সহযোগীতায় নেতাকর্মীদের জামিনের পিছনে ভুমিকা।