সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়া বালুর মাঠে একটি মসজিদের পেছনে মদের বার বন্ধ করে দিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর। ওই মদের বার চলা রেস্টেুরেন্টের লাইরেন্স দিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। এ বিষয়ে এমপি সেলিম ওসমান বলেছেন, আমি বলবো ওই প্রতিষ্ঠানটি একটি ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করবেন বলে। আর ট্রেড লাইসেন্সটি দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। যখন মদ বিক্রির অভিযোগ উঠলো তখন সিটি কর্পোরেশন থেকে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হলোনা? যেখানে রাতের আধারে বিনা নোটিশে ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করে দেয়, উনারা সেখানে ওনারা কেন মদের বারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন না? সাধারণ কোন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে গেলে চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য হতে হয়, তারা সেটি করেননি এমনকি কোন আবেদনও করেননি।
এর আগে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় ব্লু-পেয়ার রেস্টুরেন্টের বেতরে মদের বারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে সাময়িক বন্ধ করে দেওয়ায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও দোয়া করেছেন ওলামা পরিষদ নেতৃবৃন্দরা।
একই সঙ্গে উক্ত বারটি স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা এবং ভবিষ্যতে নারায়ণগঞ্জ শহরের কোথাও এমন কোন প্রতিষ্ঠান যাতে হতে না পারে সেজন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনের কাছে দাবী রেখেছেন তারা।
১৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের সাথে নারায়ণগঞ্জের ওলামা পরিষদের নেতৃবৃন্দদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
পরিপ্রেক্ষতে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেন, আপনারা আন্দোলনে নামার আগে প্রথমে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করা উচিত ছিল। তাদের প্রশাসনের সিদ্ধান্ত এবং ব্যবস্থা গ্রহণে অনেক সুবিধা হতো। পত্রিকায় দেখেছি আপনারা এ সমস্যা সমাধানের জন্য নারায়ণগঞ্জ-৪ ও ৫ আসনের সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। গতকাল (বুধবার) আমি আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদলকে সাথে নিয়ে পুলিশ সুপারের সাথে আলোচনা করেছি। সেখানে বলেছি যদি আপনারা মদ বিক্রির প্রমাণ পান তাহলে ব্যবস্থা নিবেন। উনারা ব্যবস্থা নিয়েছেন। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
প্যারাডাইজ ভবনের মালিককে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি নিজের টাকায় বিল্ডিং বানিয়েছেন। সেখানে মদের বার ভাড়া দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের মানুষ এখন আপনাকে ধিক্কার জানায়। আপনাকে বলছি কোন সন্ত্রাসীর কাছে বাড়ি ভাড়া দিবেন না। আপনি তাদের সাথে কথা বলেন। প্রয়োজনে আপনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন আমার কাছ থেকে রেস্টুরেন্ট ভাড়া নিয়ে এখন অবৈধভাবে মদের বার চালানো হচ্ছে। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ব্যবস্থা নিবে আমরা সবাই আপনাকে সহযোগীতা করবো। বাড়িওয়ালা বাড়ি ভাড়া দেওয়া দেওয়ার সময় ভাড়াটিয়াদের সকল তথ্য সংরক্ষন করবেন। বিধান অনুযায়ী সেগুলো প্রশাসনের কাছে সরবরাহ করবেন। তাহলে দেখবেন নারায়ণগঞ্জ শহরে অনেক অপরাধ কর্মকান্ড কমে গেছে।
ওলামাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি আপনাদের সকলের কাছে কৃতজ্ঞা প্রকাশ করছি আপনারা আমাদের দুই ভাইয়ের উপর আস্থা রেখেছেন। আপনারা একটি ভাল কাজ করে দেখিয়েছেন। ইসলাম শান্তির ধর্ম। কোন বিশৃঙ্খলা কাম্য নয়। যতদিন বাচবো আপনাদের সাথে নিয়ে শান্তির জন্য কাজ করবো। আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে আপনারা যেমন ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা চিন্তা করে এমন একটি প্রশংসনীয় কাজ করেছেন। ঠিক তেমনি ভবিষ্যত প্রজন্মকে সঠিক পথ দেখাতে আপনারা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলতে পারেন। তাদেরকে ইসলামের আলোকে বিভিন্ন দিক নিদের্শনা দিতে পারেন। কিভাবে রোজা রাখতে হবে কিভাবে এবাদত করতে হয়। কোন কাজটা ইসলামে হারাম করা হয়েছে। কোন উত্তেজনা নয় আপনারা নারায়ণগঞ্জে শান্তি বজায় রাখুন। আমিও আপনাদের সাথে একমত। নারায়ণগঞ্জ শহরের ওই জায়গায় এমন একটি প্রতিষ্ঠান চলতে দেওয়া হবেনা। যা কিনা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম অপরাধ মূলক কাজের দিকে উৎসাহিত করবে। ব্লু-পেয়ার ওই বারটি স্থায়ী ভাবে বন্ধ করতে হবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন প্রতিষ্ঠান গড়ে না উঠে সেই ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য আমি নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অনুরোধ রাখছি।
ডিআইটি মসজিদের খতিব ও হেফাজতে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মাওলানা আব্দুল আউয়ার এর সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মোহাম্মদ বাদল। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান, হেফাজতে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান রহমান সহ প্রায় ৩ শতাধিক ওলামা কেরামগণ।