সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
স্বাধীনতা পদকপ্রাাপ্ত ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা মরহুম একেএম শামসুজ্জোহার ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত দোয়ায় হাজার হাজার জনতার স্রোত নেমেছে। ২০ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার বাদ আসর উত্তর চাষাঢ়ায় হীরা মহলে উক্ত দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দোয়ায় একেএম শামসুজ্জোহা আত্মার মাগফেরাত কামনা, তাঁর সহধর্মিনী মিসেস নাগিনা জোহা, বড় ছেলে প্রয়াত নাসিম ওসমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। পাশাপাশি এমপি সেলিম ওসমান ও এমপি শামীম ওসমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া প্রার্থনা করা হয়।
দোয়া অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, সাবেক নারী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বেগম বাবলী, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমএ সালাম, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নওশেদ আলী, আলীরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি সহ সকল ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের সদস্যবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, মরহুম একেএম সামসুজ্জোহা ছিলেন ভাষা সৈনিক স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত (মরনোত্তর) ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর। তিনি মহান ভাষা আন্দোলন, ১১ দফা, ৬ দফা, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক। তিনি ১৯৭০ সালে গণপরিষদ ও ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয় লগ্নে ১৯৭১ সনের ১৬ ডিসেম্বর জাতির জনকের পরিবারকে (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ) বন্দী দশা থেকে মুক্ত করতে গিয়ে ঢাকায় হানাদার বাহিনী কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ‘বায়তুল আমান’-এ জন্ম হওয়া বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। মহান ভাষা আন্দোলনে তাঁর পরিবারে ৫ জন সদস্য এক সাথে কারাবন্দী হয়েছিলেন।
স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে তিনি আদমজী জুট মিলসহ চিত্তরঞ্জন কটন মিলস্, আর্দশ কটন মিল লক্ষ্মী নারায়ণ কটন মিলস, লতিফ বাওয়ানী কটন মিলস, ঢাকা কটন মিলস পুনর্গঠন করেছিলেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু স্ব-পরিবারে নিহত হওয়ার পর তিনি খুনি চক্রের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ ক্লথ মার্চেন্টস এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ টাউন কো-অপারেটিভ ব্যাংকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
উল্লে¬খ্য, মরহুম একেএম শামসুজ্জোহার সহধর্মিনী মরহুম নাগিনা জোহা ছিলেন ভাষা সৈনিক। তিনি রতœগর্ভা মা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। তাঁর ৩ ছেলের মধ্যে বড় ছেলে প্রয়াত নাসিম ওসমান ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন ৪বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য, মেঝ ছেলে সেলিম ওসমান একই আসনে দ্বিতীয় মেয়াদে সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন এবং ছোট ছেলে শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে তৃতীয় মেয়াদে সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।