সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
জোরালো গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের কমিটি। আংশিক কমিটি অথবা সভাপতি ও সেক্রেটারির নাম ঘোষণা করে তাদের উপর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। আংশিক কমিটি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সভাপতি সেক্রেটারি প্রত্যাশি সহ জেলা যুবলীগের কমিটির বিভিন্ন পদে আসার আলোচনায় রয়েছেন নারায়ণগঞ্জের যুবলীগের একঝাঁক নেতা। যেখানে সভাপতি পদে এহসানুল হাসান নিপু ও সেক্রেটারি পদে জোরালো আলোচনায় রয়েছেন বার সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া।
শীর্ষ পদের উপরোক্ত দুই নেতা ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে আলোচনা রয়েছেন ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মোহাম্মদ শরীফুল হক, সেক্রেটারি আব্দুল মান্নান, জেলা যুবলীগ নেতা জানে আলম বিপ্লব, মামুন আহমেদ ইমন ও সানোয়ার হোসেন জুয়েল সহ প্রায় একঝাঁক যুবলীগ নেতা। এদের ছাড়াও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির বেশকজন নেতাও আলোচনা রয়েছে যারা জেলা যুবলীগের বিভিন্ন পদে অধিষ্ট হতে পারেন।
এ ছাড়াও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সেলিম হোসেন দিনার, আলী হোসেন সজীব, সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, সেক্রেটারি আলী হায়দার, রূপগঞ্জ যুবলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান সহ আরও বেশকজন জেলা যুবলীগের নতুন কমিটির বিভিন্ন পদে স্থান করে নিতে পারেন।
নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের চাহিদা হলো ক্লিন ইমেজের নেতাদের দিয়ে জেলা মহানগর উপজেলা কমিটি গঠন করা। নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সভাপতি পদে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে অনেক আগেই পারফেক্ট এহসানুল হাসান নিপু। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তার সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক পদে ক্লিন ইমেজের অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া পারফেক্ট।
ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ ছাড়িয়ে কেন্দ্রীয় যুবলীগের টেবিলে এই নেতার নাম জমা পড়েছে। অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি। যেকোন সময় এহসানুল হাসান নিপুকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসীন মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক পদে রেখে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের কমিটি ঘোষণা আসতে পারে। কেন্দ্রীয় যুবলীগের কাছে আইনজীবীদের এমনিতেই বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। সেই সুবাধে মোহসীন মিয়ার সম্ভাবনা আরো বেশি। নিপু ও মোহসীনকে নিয়ে জেলা যুবলীগের কমিটি হলে নারায়ণগঞ্জ যুবলীগ পাবে ভিন্ন ইমেজ।
জানাগেছে, দীর্ঘ ১৫ বছর পরে গঠিত হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের কমিটি। আসন্ন এই কমিটিতে সভাপতি হিসেবে অনেকটা নিশ্চিত হয়ে আছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু। সাধারণ সম্পাদক পদে যে কজনের নাম ওঠেছে তাদের প্রতি স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও এমপিদের আগ্রহ নেই। যে কারনে তৃণমূলের পছন্দের শীর্ষে রয়েছেন ক্লিনম্যান ইমেজের সদা হাস্যোজ্জল আইনজীবী নেতা বর্তমান বার সভাপতি মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া।
সূত্রে প্রকাশ, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী অ্যাডভোকেট মোহসীন মিয়া তার মেধা আর যোগ্যতা দিয়ে হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি। এর আগে তিনি আইনজীবী সমিতিতে দুইবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দুইবার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় সর্বজন গ্রহণযোগ্য এই আইনজীবী নেতাকে নিয়ে সচ্ছ ইমেজে ফিরতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগ। অনেকটা ঘুণে ধরা যুবলীগের কমিটিতে ফিরতে যাচ্ছে প্রাণ।
ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপির একেএম শামীম ওসমানের আস্থা অর্জন করেছেন তিনি। আইনজীবী সমিতিতে তাকে যতবার মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন এবং আইনজীবীদের কল্যাণে ব্যাপক উন্নয়নমুলক কাজ করেছেন। যে কারনে জেলার অন্যান্য এমপি ও আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের সুদৃষ্টিতে মোহসীন মিয়া। সেই সঙ্গে যুবলীগের নেতাকর্মীদের মাঝেও তাকে নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে অনেকটা বৈরী সময়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের কমিটি গঠন করা হয়। সম্মেলনে আবদুল কাদির সভাপতি ও অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ওই সম্মেলনে ছিল আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের অবস্থান। এছাড়াও সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দিতাকারী জাকিরুল আলম হেলালকে করা হয় সিনিয়র সহ-সভাপতি, আসিফ হোসেন মানুকে সহ-সভাপতি ও শাহ নিজামকে করা হয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এদের মধ্যে ইতোমধ্যে শাহনিজাম মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জাকিরুল আলম হেলালকে সাংগঠনিক সম্পাদক।
অন্যদিকে আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলকে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। এছাড়াও জেলা যুবলীগ সভাপতি আবদুল কাদির জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন হতে কেন্দ্রীয়ভাবে লবিং করেছিলেন। কিন্তু শেষতক শহীদ বাদলকে সাধারণ সম্পাদক ও কাদির হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
এর আগে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন জেলা যুবলীগের সভাপতি আবদুল কাদির ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল। সেই থেকে যুবলীগের বিভক্তি শুরু হয়। তবে ওই সংগঠনটি বিএনপির জোট সরকার আমল থেকে শুরু করে ১/১১ এর কঠিন সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে বেশ ভূমিকা রেখেছিল। জেলা যুবলীগ এখন অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক কর্মকান্ডে গতি ফেরাতে তরুণ নেতৃত্ব দিয়ে ঢেলে সাজানোর প্রকৃয়া চলমান। আর এই তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সভাপতি পদে সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু এবং সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহসীন মিয়ার নাম রয়েছে অগ্রভাগে। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন কর্মসূচিতে জেলা যুবলীগের প্রতিনিধিত্ব করছেন এ দুই উদীয়মান নেতা। তাছাড়া তৃণমূল পর্যায়ে বেশ জনপ্রিয় এ দুই নেতা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি একেএম শামীম ওসমানেরও আস্থাভাজন। তাই জেলা যুবলীগের আগামী কমিটির নেতৃত্বে নিপু ও মোহসীন মিয়ার আসার অপেক্ষা করছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা।