র‌্যাবের অভিযানে ফতুল্লায় জিএমবির সক্রিয় ৪ এহসার সদস্য গ্রেপ্তার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব-১১) এর ফতুল্লার সাইনবোর্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে জেএমবির সক্রিয় ৪ এহসার সদস্য গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান উগ্রবাদী বই ও লিফলেট উদ্ধার করা হয়। ৭ মার্চ শনিবার বিকেলে র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল ইমরান উল্লাহ সরকার এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, গোপন সূত্রে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল গত ৬ মার্চ শুক্রবার দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন সাইনবোর্ড এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির ৪জন সক্রিয় এহসার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- চট্টগ্রামের হাটহাজারী এলাকার মাশরুর আনোয়ার চৌধুরী ওরফে লোন উলফ ওরফে ট্রুথ সিকার, একই এলাকার মোহাম্মদ কাওসার আলম ওরফে ফরহাদ নূও, চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ এলাকার আসিফ ইবতিয়াজ মোহাম্মদ রিবাত ও কুমিল্লার বরুড়ার হাফেজ মোঃ রাকিবুল ইসলাম। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ উগ্রবাদী বই ও উগ্রবাদী লিফলেট উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব আরও জানায়, মাশরুর আনোয়ার চৌধুরী ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ¡বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম হতে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ অনার্স ও মাষ্টার্স পাশ করে। সে ২০১৪ সালে অনলাইনে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে জসিম উদ্দিন রাহমানী ও আনোয়ার আল আওলাকী সহ বিভিন্ন উগ্রবাদী লেখকের বক্তব্য শুনে উগ্রবাদের দিকে ধার্বিত হয়।

এরপর ২০১৬ সালে কথিত এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জেএমবিতে যোগদান করে। মারুশর চট্টগ্রামে একটি আন্তজার্তিক হোটেলের পারচেজ ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন গ্রেপ্তারকৃত মোহাম্মদ কাওসার আলম ওরফে ফরহাদ নূর, হাফেজ মোঃ রাকিবুল ইসলামসহ আরও ৮-১০ জন যুবককে জেএমবিতে যোগদান করায়।

র‌্যাবের হাতে ইতোপূর্বে গ্রেপ্তারকৃত ইঞ্জিনিয়ার বুলবুল, জহিরুল ইসলাম পলাশ ও মাসুদ গাজীর সাথেও মাশরুর আনোয়ার চৌধুরীর সাংগঠনিক যোগাযোগ ছিল। মাশরুর আনোয়ার চৌধুরী গত ৪ মাস আগে পূর্বের চাকুরি ছেড়ে ঢাকায় এসে অপর একটি আন্তর্জাতিক হোটেলে পারচেজ ম্যানেজারের পদে যোগদান করে সংগঠনের কার্যক্রমকে তরানি¡ত করতে উচ্চ পর্যায়ের কিছু জেএমবি নেতাদের সাথে যোগাযোগ ও গোপন বৈঠকে মিলিত হয়। মাশরুর আনোয়ার চৌধুরী সম্প্রতি অনলাইনে টাইম বোমা তৈরীর বিভিন্ন কৌশল রপ্ত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে যে, বাংলাদেশে খেলাফত প্রতিষ্ঠা ও ইসলামী শাসন কায়েম করার জন্য ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে তাদের নাশকতা করার পরিকল্পনা ছিল।

র‌্যাব জানায়, মোহাম্মদ কাওসার আলম ওরফে ফরহাদ নূর চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ¡বিদ্যালয় (চুয়েট), চট্টগ্রাম হতে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে এবং আসিফ ইবতিয়াজ মোহাম্মদ রিবাত চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ¡বিদ্যালয় (চুয়েট), চট্টগ্রাম হতে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে। মোহাম্মদ কাওসার আলম ওরফে ফরহাদ নূর ও আসিফ ইবতিয়াজ মোহাম্মদ রিবাত ঘনিষ্ট বন্ধু ছিল। মাশরুর আনোয়ার চৌধুরীর মাধ্যমে তারা দুজনে ২০১৭ সালে জেএমবিতে যোগদান করে। এযাবৎ কালে তারা জেএমবির দাওয়াতি শাখার কাজ করে আসছিল।

এদিকে হাফেজ রাকিবুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিল। অনলাইনের মাধ্যমে উপরোক্ত জেএমবি সদস্যদের সাথে রাকিবুলের পরিচয় ঘটে। রাকিবুলের পরিচয়ের সূত্র ধরেই মাশরুর আনোয়ার চৌধুরী, মোহাম্মদ কাওসার আলম ওরফে ফরহাদ নূর ও আসিফ ইবতিয়াজ মোহাম্মদ রিবাতসহ আরো কিছু জেএমবি সদস্য ফতুল্লা সাইনবোর্ড এলাকায় গোপন বৈঠকে মিলিত হলে র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল তাদের সেখান থেকে গ্রেপ্তার করে।