সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি একেএম শামীম ওসমান অবশ্যই গডফাদার বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী। তিনি শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্যে করে এও বলেছেন, ‘আপনি নিজেই প্রমান করেছেন আপনি সন্ত্রাসীদের গডফাদার।’ তবে মেয়র আইভী সব সময় এমপি শামীম ওসমানকে নিয়ে এমন ধরণের মন্তব্য করলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সেই সঙ্গে আওয়ামীলীগের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হয়। দলীয় কোন্দল প্রকাশ্য হয়ে ওঠে
শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে মেয়র আইভী বলেন, ‘গডফাদার খেতাব আপনি একসময় বলেছেন আপনাকে নাকি দুইটা পত্রিকা বানিয়েছে আপনি গডফাদার। কিন্তু আপনি নিজেইতো প্রমাণ করলেন। আপনার কাছে হাজার হাজার অস্ত্র ছিল যে অস্ত্র পুলিশের ভান্ডারও নাই। তাহলে আপনি কোথা থেকে এত অস্ত্র পান? তাহলে আপনিতো অবশ্যই গডফাদার। তাহলে এতদিন নারায়ণগঞ্জের মানুষ বলে এসেছে আপনার পরিবার প্রচুর হত্যাকান্ডে জড়িত ছিল। তাহলে সেটাই সত্য।’
গত ৬ মার্চ শুক্রবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকায় শেখ রাসেল নগর পার্কের মুক্ত মঞ্চে নারায়ণগঞ্জের মেধাবী শিক্ষার্থী তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার ৭বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সন্ত্রাস নিমূল ত্বকী মঞ্চের আয়োজনে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, শিশু সমাবেশ, আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মেয়র এসব কথা বলেন।
শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে মেয়র আইভী আরও বলেন, আপনি প্রশাসনকে ভয় দেখাতে চান? আমার মনে হয়না একজন কনস্টেবলও আপনাকে ভয় পায়। আমার মনে হয়না এই শহরের একটা রিকশাওয়ালাও আপনাকে ভয় পায়। আমার মনে হয়না এই শহরের একজন ছোট্ট বাচ্চাও আপনাকে ভয় পায়। কারণ ওই জুজুর ভয় দেখিয়ে আপনি আমাদের শহরের মধ্যে আর গডফাদার এই ভয় আমরা পাইনা।
অনুষ্ঠানে সন্ত্রাস নির্মুল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক ও নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বির সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান মাসুম, কবি হালিম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ চারুকলা ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ শামসুল আলম আজাদ ও সাংস্কৃতিক জোটের নেতা অ্যাডভোকেট জিয়াউল ইসলাম কাজল প্রমূখ।
এখানে উল্লেখ্যয্যে, গত ১ মার্চ রবিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে জেলা পুলিশের আয়োজনে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২০’ এর আলোচনা সভায় শামীম ওসমান ৯০’দশকের সহিংস রাজনীতির চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘২০০১ সালের আগে নারায়ণগঞ্জে পুলিশ ফোর্সের কাছে যত অস্ত্র ছিল তার চেয়ে বেশি অস্ত্র একা আমার নিজের কাছেই ছিল। আজকে আমার গাড়িতে অস্ত্র আছে কি না তা আমি নিজেও জানি না।’
অতীত সহিংস রাজনৈতিক পরিবর্তন হয়েছে দাবি করে শামীম ওসমান বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক দর্শন আগে ছিল একরকম। নিজের জন্য করতাম। জিন্দাবাদ শুনতে ভালো লাগতো। ২০০১ সালের পরে আমার এই চিন্তা পরিবর্তন হয়েছে।’
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পরের পরিস্থিতি তুলে ধরে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেছিলেন, ‘সে সময় সদর থানার ওসি ছিল মঞ্জুর কাদের। তার ওপর একটি বাড়ি থেকে এসে হামলা চালানো হলো। ওই বাড়ি থেকে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা এসে ওর উপর হামলা করলো। তখন চাষাড়ার সকল হকারকে আমরা পলিটিক্যাল মটিভেশন করেছিলাম। এর জন্য হকারদের প্রতি আলাদা একটা টান আছে। তারা লাঠি নিয়ে পাহারা দিত। যে মুহূর্তে পুলিশের উপর অ্যাটাক হয়েছিলো এই টোটাল হকাররা লাঠি নিয়ে তাদেরকে ঘেরাও করে ফেলেছিল। এ কারণেই ওরা কিন্তু নারায়ণগঞ্জে কোনো ঘটনা ঘটাতে পারে নাই।