সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
দীর্ঘ ৭৮৭ দিন কারাভোগ শেষে মুক্তি পেয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কারাগারে যাওয়ার পর দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছিলেন, যতদিন নেত্রীর মুক্তি না হবে তিনি দলের পার্টি অফিস থেকে বের হবে না। অফিসের একটি ৯ ফিট দৈর্ঘ্য ও ৪ ফিট প্রস্থের রুমে এতদিন বসবাস করে আসছিলেন রিজভী। অবশেষে সেই কক্ষটি ছেড়েছেন তিনি। যেখানে বসেই দেশের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বসে সব সময় রাজনীতি করতেন। এখান থেকে বের হয়েই রাজপথে আন্দোলনে যেতেন আবার কখনও দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন শেসে আবারো ফিরে আসতেন সেই ছোট্ট একটি কক্ষে।
এদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীকে নিয়ে আবেগআপ্লুত কন্ঠে আড়াইহাজার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন বলেন, ৭৮৭ দিনের দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় খুব কাছ থেকে দেখেছি আপনাকে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য প্রতিক্ষণ আপনার যে আকুতি, যে যন্ত্রনা, হৃদয়ের গভীরে অবিরত রক্তক্ষরণ। তা রীতিমত আমাকে ভাবিয়ে তুলে কি করে পারেন আপনি স্যালুট নেতা আপনাকে।
২৮ মার্চ শনিবার সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন মাহমুদুর রহমান সুমন যিনি অ্যাডভোকট রুহুল কবির রিজভীর আস্থাভাজন। খালেদা জিয়া কারাগারে থাকাকালীন সময়ে ঢাকার রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে রিজভীর সঙ্গে সর্বত্র ছিলেন মাহমুদুর রহমান সুমন।
মাহমুদুর রহমান সুমন রিজভীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, দেশনেত্রীর মুক্তির মিছিলের ম্লোগানে শ্লোগানে একাই কাঁপিয়েছেন রাজপথ, যেখানে আপনিই ছিলেন নেতা, আপনিই ছিলেন সংগঠক, আপনিই ছিলেন কর্মী। এক একটি করে ছেলেদের ডেকে, দিন কি রাত, তাদের সঙ্গে নিজে কথা বলে সংগঠিত করেছেন, সামিল করেছেন দেশনেত্রীর মুক্তির মিছিলে। সারারাত ধরে আব্দুল্লাহপুর হতে কাঁচপুর, গাবতলী থেকে কেরানীগঞ্জ ধানমন্ডি থেকে গুলশান ঢাকার প্রতিটি অলিতে-গলিতে নিজ হাতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির পোস্টার মেরেছেন কতো রাত ধরে তার সঠিক সংখ্যাও হয়তো জানা নাই আপনার।
রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বিএনপিতে আর জন্মাবেনা বলেও মাহমুদুর রহমান সুমন মন্তব্য করে বলেন, প্রতিনিয়তের ঘাত-প্রতিঘাত, আর নিন্দুকের ঠুনকো সমালোচনাকে কেয়ার না করে একাই এগিয়ে গিয়েছেন। এই বন্ধুর পথ চলতে যে কতবার আঘাতের শিকার হয়েছেন, তবু একবারের জন্য চিন্তা করেন নাই, থেমে যান নাই, একবারও আপনার মনে আসেনি, অনেক হয়েছে এবার একটু ক্ষান্ত দেই। রাত ৩টা, ৪টা, ৫টায় ঘুমিয়ে সকাল ৮টায় উঠে নেতাকর্মীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শোনার সেই মানসিকতা, তাদেরকে সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়ার মতো আর একজন রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বিএনপিতে আর কখনোই জন্মাবে না, ঘর সংসার পরিবার পরিজন ছেড়ে ৯ ফুট বাই ৪ ফুট একটা ঘরে ৭৮৭ দিন থাকার মতো আর কেউ বিএনপিতে কখনোই আসবেনা।
এছাড়া তিনি বলেন, ইতিহাস একদিনে লেখা হয় না। কালের বিবর্তনে ক্ষণজন্মারা তাদের নিজ কর্ম দিয়ে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেয়। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কাছে ওয়াদা করেছিলেন, তাঁর মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত অফিস ছেড়ে যাবেন না, নেতাকর্মীদের পাশে থাকবেন। আপনি আপনার কথা রেখেছেন, সর্বদা নেতাকর্মীর পাশে থেকেছেন, আমাদের সাহস যুগিয়েছেন। আমরা ব্যর্থ সন্তানরা কিছুই করতে পারলাম না, ভুল ত্রুটি নিজ গুণে ক্ষমা করবেন। যেখানেই থাকুন, যেভাবে থাকুন, আল্লাহ আপনাকে সবসময় সুস্থ রাখুন, ভালো রাখুন- এই কামনাই করি। পরিশেষে বলতে চাই বিএনপির জন্য যে আপনার আত্মত্যাগ নেতাকর্মীদের কাছে ইতিহাস ও উদাহরণ হয়ে থাকবেন আপনি।