সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক ও বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পেতে দলের মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছিলেন প্রায় শতাধিক নেতা। যারা সবাই এমপি হওয়ার জন্য দলের মনোনয়ন কিনেছিলেন। যেখানে নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসন থেকেই শুধুমাত্র আওয়ামীলীগের মনোনয়ন ক্রয় করেছিলেন ৩৬ জন নেতা। কিন্তু করোনাভাইরাসের মত মহামারিতে সাধারণ মানুষ যখণ দূর্বিসহ জীবন যাপন করছেন জনগণের পাশে দেখা নেই তাদের। মধ্যমসারির নেতারা মানুষকে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ সহ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন। কিন্তু শীর্ষ নেতারা নেই জনগণের পাশে। তবে নির্বাচন আসলে এসব নেতারা প্রতিটি অলিগলির মাটি মাড়িয়ে ধুয়া তুলে ফেলেন। এদের সঙ্গে জনগণ সবচেয়ে বেশি হতাশ হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের ৫ জন এমপির মধ্যে একমাত্র লিয়াকত হোসেন খোকা বাদে বাকি ৪ জন এমপির কাউকেই জনগণের পাশে দেখা গেল না।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন কাজী মনিরুজ্জামান মনির। তিনি একজন শিল্পপতি হলেও সাধারণ মানুষের পাশে তিনি নাই। এ ছাড়াও দেশের শীর্ষ ধনীদের মধ্যে একজন গুলবক্স ভূঁইয়ার নাতি ধনকুবের হিসেবে পরিচিত বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুইয়া, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারও নাই জনগণের পাশে। বিএনপির আমলে তৈমূর আলম বিআরটিসির চেয়ারম্যান ছিলেন কিন্তু জনগণের পাশে এক টাকাও খরচ করতে নারাজ। একইভাবে এখানে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন কিনেছিলেন সাবেক সেনা প্রধান কেএম শফিউল্লাহ, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই। তারাও জনগণের পাশে নাই। এখানকার জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশিসাইফুল ইসলামকেও জনগণের পাশে দেখা যাচ্ছেনা।
নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন নজরুল ইসলাম আজাদ। প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন। তাদের মধ্যে একমাত্র সুমন বাদে বাকি দুজনের কোন ছায়াও দেখা যাচ্ছেনা জনগণের পাশে। একইভাবে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি সাবেক রাষ্ট্রদূত মমতাজ হোসেন ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল পারভেজকেও জনগণের পাশে দেখা যাচ্ছেনা। এখান থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন আলমগীর সিকদার লোটন। তিনিও জনগণের পাশে নাই।
নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন আজহারুল ইসলাম মান্নান। তিনি নিজে মাঠে নেমে জনগণের পাশে না থাকলেও তার নির্দেশে তার অনুগত বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রতিদিনই মাস্ক, স্যানিটাইজার বিতরণ ও জীবাণুনাশক স্প্রে করছেন। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি খন্দকার আবু জাফর, ওয়ালিউর রহমান আপেল, ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুলকেও জনগণের পাশে দেখা যাচ্ছেনা। আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশি মাহফুজুর রহমান কালাম, আবু জাফর চৌধুরী বিরু, এইচএম মাসুদ দুলাল, সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, প্রফেসর শিরিন বেগম সহ অনেকেই। কিন্তু সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতকে জনগণের পাশে দেখা গেলেও বাকিদের জনগণের পাশে দেখা যাচ্ছেনা। তবে এ আসনের জাতীয়পার্টির লিয়াকত হোসেন খোকা নিয়মিত জনগণের পাশে দাড়াচ্ছেন।
নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী। তার ছায়াও দেখা যাচ্ছেনা। এখানে নৌকা প্রতীকের এমপি শামীম ওসমানও জনগণের পাশে নেই। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন শিল্পপতি শাহআলম, সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দীন, পারভেজ আহমেদ, আব্দুল হাই রাজু, অধ্যাপক মামুন মাহামুদ সহ আরও বেশকজন। জনগণের পাশে তাদের ছায়াও দেখা যাচ্ছেনা। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশি সালাউদ্দীন খোকা মোল্লাকেও দেখা যাচ্ছেনা। নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশি কাউসার আহমেদ পলাশও নেই জনগণের পাশে। নাই কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগ নেত্রী নাসিম হাসনাতও।
নারায়ণগঞ্জ-৫(সদর-বন্দর) আসনের দানবীর খ্যাত এমপি সেলিম ওসমানই নাই জনগণের পাশে। যদিও জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশি পারভীন ওসমান ও তার ছেলে আজমেরী ওসমান দাড়িয়েছেন জনগণের পাশে। নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশি জেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি শহীদ বাদল, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, খোকন সাহা, জিএম আরাফাত, একেএম আবু সুফিয়ান, আব্দুল কাদির সহ আরও বেশকজন। যাদের মধ্যে কাউকেই জনগণের পাশে দেখা যাচ্ছেনা। ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করা সাবেক এমপি এসএম আকরামেরও দেখা নেই। এ ছাড়াও এখানকার সাবেক এমপি আবুল কালামও নেই জনগণের পাশে।