সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
হাতেম আল তাঈ বা হাতেম তাঈ-এর পূর্ণ নাম হাতেম ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে সা’দ আত তাঈ। তিনি বিখ্যাত মূলত: তার মহানুভবতা ও দানশীলতার জন্যে। মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও প্রাচীন ভারতবর্ষে তিনি অতিসুপরিচিত ব্যক্তি ছিলেন। খ্রিষ্টান এই আরব ব্যক্তিটি ছিলেন তাঈ গোত্রের লোক। এই গোত্রটি আরব উপদ্বীপের মধ্যভাগে হাইলে বসবাস করত।
হাতেম তাঈ এর দানশীলতার কথা সারা প্রাচ্যের লোক সুবিদিত ছিল। এখন পর্যন্ত তিনি তার চরম মহত্ব ও দানশীলতার জন্যে আরবদের মাঝে আইকন হয়ে রয়েছেন। তার নামে একটা প্রবাদ বাক্যই প্রচলিত রয়েছে- ‘হাতেম এর চেয়েও মহানুভব!!’-কারও দানশীলতার পরিমাপে মানুষ এটি ব্যবহার করে।
হাতেম বাল্যকালেই তার পিতাকে হারিয়েছিলেন। ফলে তিনি তার পিতামহের কাছে মানুষ হন। কথিত আছে, তার মাতা গুনাইয়া বিনতে আফিফ তাঈও অতি দয়ালু ছিলেন। আর সম্ভবত: হাতেম তার মাতার নিকট থেকেই দানশীলতার এই গুণটি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন। বলা হয়ে থাকে, হাতেমের দানশীলতার কারণেই তার পিতামহের সাথে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তার পিতামহ দান করাকে অপচয় হিসেবে মূল্যায়ণ করতেন। আর এ কারণেই তিনি একসময় হাতেমকে পরিত্যাগ করেছিলেন। যে হাতেম তাঈ রাতের আধারে অর্ধাহারে অনাহারে থাকতেন বাড়িতে ত্রাণ নিয়ে যেতেন। নিজের পরিচয় গোপন করে ছদ্মবেশে তিনি ত্রাণ বিতরণ করছেন। এবার সেই হাতেম তাঈয়ের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। তিনি ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন সোনারগাঁয়ের কোন মানুষ না খেয়ে মরবেন না। প্রতিদিন রাতে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে তিনি ত্রাণ বিতরণ করছেন। মুলত যেসব মানুষ লোকলজ্জার ভয়ে বাহিরে এসে ত্রাণ সংগ্রহ করতে পারছেন না তাদের ঘরেও পৌছে দিচ্ছেন ত্রাণ।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদূর্ভাবের ফলে সমাজের শ্রমজীবি ও নি¤œ আয়ের লোকগুলো পড়েছে বিপাকে। যানবাহন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাখার ফলে বেকার হয়ে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। এতে দেখা দিয়েছে খাদ্যভাব। সোনারগাঁয়ে একটি লোকও খাবারে মারে যাবে না সেজন্য সরকার ও স্থানীয় সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার উদ্যোগে নেয়া হয়েছে। প্রশাসনের উদ্যোগে ইতিমধ্যে কিছু অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ করা হলেও থেমে নেই এমপি।
সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা রাতের আধারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উপজেলার কোন না কোন এলাকায় তার ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রাখছেন। ৩০ মার্চ সোমবার তিনি মোগরাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের হাবিবপুর ও কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় নি¤œ আয়ের মানুষের কাছে খাবার পৌচ্ছে দিতে উপস্থিত হন তাদের বাড়িতে। রাতের আধারে তিনি ওই এলাকার প্রতিটি নি¤œ আয় ও শ্রমজীবি মানুষের হাতে খাবার তুলে দেন এবং তার সাথে যোগাযোগ করে খাবার সংগ্রহের পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে তিনি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করে আসছেন।
এ সময় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য বর্তমানে সবাই ঘরে অবস্থান করার কারণে শ্রমজীবিরা অনেক কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। আমাদের সমাজে যারা রিক্সা, ভ্যান ও সিএনজি চালক, শ্রমিক ও দিনমজুর রয়েছেন আমরা তাদের অসহায়ত্ব উপলুব্দি করে তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। আমার অনুরোধ থাকবে আমাদের সমাজের স্বচ্ছল ব্যক্তিদের সহায়তায় একটি ফান্ড তৈরি করে এবং অসহায় পরিবার চিহ্নিত করে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিত্যপণ্য বিতরণ করা আর এভাবে প্রতি এলাকায় সামাজিক উদ্যোগে অসহায়দের পাশে দাঁড়ালে খুব সহজেই অসহায় পরিবারগুলোর এ কষ্ট লাঘব করা সম্ভব।