সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাজে তারই সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিককে নিয়ে লেখা নিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম বিতর্ক ও হাস্যরসিকতা সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমত ছাত্রদলের এই নেতার অশ্রাব্য ভাষ্য প্রকাশ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। সেই সঙ্গে জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতির সাত লাইনের একটি স্ট্যাটাজে ডজন খানিক বানান ভুলের কারনে হাস্যরসিকতা সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপদগ্রস্থ দিনমজুর ও অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। আয়োজকদের দাবিমতে- নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে সেই আয়োজন থাকলেও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সেক্রেটারির কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক। ওই অনুষ্ঠানটি কাদের নেতৃত্বে হয়েছে তা নিয়ে মোহাম্মদ উল্লাহ ও রফিকুল ইসলাম রফিকের অবস্থান মুখোমুখী। কারন রফিককে ইঙ্গিত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাজ পোস্ট করেন মোহাম্মদ উল্লাহ। তার স্ট্যাটাজের অশ্রাব্য ভাষার কারনে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পোস্টে ছাত্রদলের অন্যান্য নেতাকর্মীরাও নানান মন্তব্য করেছেন। যা নিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম বিতর্ক সৃষ্টি হয়। গত দুদিন যাবত এ নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা।
মোহাম্মদ উল্লাহ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে রফিকুল ইসলাম রফিককে ইঙ্গিত করে লিখেন, রাজনৈতিক দেওলিয়াপনা (দেউলিয়া)……….. চামবাজি (চাপাবাজি) ও তেলবাজ নেতা হওয়ায় তৃণমুল (তৃণমূল) কমীদের (কর্মীদের) আপত্তির কারণে যাকে প্রোগ্রামে ইনভাইট করতে পারিনি.. প্রোগ্রামই নাকি হয়েয়ছে (হয়েছে) তার নেতৃত্বে…… নিউজে পাইলাম। আগে করত চামবাজি(চাপাবাজি), তেলবাজি নতুন করে শুরু করেছে বাটপারি চিটারি….. তাদের মদতদাতা (মদদদাতা), পৃষ্ঠপাষক এবং তারা আড়াইহাজার থানা ছাএদল (ছাত্রদল) এর জন্য করোনার মতই মরন ব্যাধি (মরণব্যাধি), এদের প্রতিরোধ করতে হবে। একটা জীবনের জন্য আরেকটা সংগঠনের জন্য, সব সময় সব স্থানে।’ তবে মোহাম্মদ উল্লাহর এমন লেখায় ডজন খানিক বানান ভুল। তা নিয়েও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাঝে হাস্যরসিকতার সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের কাউকে করোনার সঙ্গে তুলনা করাটাও সমুচিন হয়নি বলে দাবি তুলেছেন নেতাকর্মীরা।
২ এপ্রিল মোহাম্মদ উল্লাহ একটি অনলাইনের নিউজের লিংক পোস্ট করে এসব মন্তব্য করেন। যে নিউজের শিরোনাম ছিল মোহাম্মদ উল্লাহ ও রফিকের নেতৃত্বে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ। এই বিষয়টির বিরোধীতা করেন মোহাম্মদ উল্লাহ। তার দাবি তার ও ছাত্রদল নেতা মোবারক হোসেনের নেতৃত্বে ওই কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
অন্যদিকে ওই কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, জেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে কোন কর্মসূচি পালন করা হলে সেখানে জেলা ছাত্রদলের নেতাদের নেতৃত্বেই হবে। আর যেহেতু আড়াইহাজারে জেলা ছাত্রদলের নেতা আমরা দুজন, সেহেতু আমাদের দুজনের নেতৃত্বেই এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ছাত্রদলের কর্মসূচিতে যিনিই সার্বিক সহযোগীতা করুক না কেন এটা জেলা ছাত্রদলের নেতাদের নেতৃত্বেই। এখানে থানার কোন নেতার নেতৃত্বে হতে পারেনা। তাছাড়া থানায় কোন কমিটি নেই। যারা রাজনীতি বুঝেনা তারাই বিতর্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। দেশ ও দলের এমন ক্রান্তিলগ্নে আমি কারো সঙ্গে বিরোধে জড়াতে চাইনা। কারন আমরা সবাই রাজপথের নেতাকর্মীরা। সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজনীতি করতে চাই।
এদিকে জানাগেছে, ১ এপ্রিল আয়োজকদের একটি অংশ দাবি করেছেন- কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নির্দেশনায় ও নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে আড়াইহাজারের দুঃস্থ ও অসহায় পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ।
১ এপ্রিল বুধবার দুপুরে আড়াইহাজার উপজেলার থানার মোড়ে জেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে অসহায় দিনমজুর মানুষের মাঝে চাল, ডাল, আলু সহ খাদ্য সামগ্রী ও সাবান এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেন নজরুল ইসলাম আজাদ।
খাদ্য সামগ্রী বিতরণে উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি লুৎফর রহমান আব্দু, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবু, জেলা বিএনপির সাবেক যুব বিষয়ক সম্পাদক জুয়েল আহমেদ, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান বাচ্চু, যুগ্ম আহবায়ক খাজা মাইনউদ্দিন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, আড়াইহাজার পৌরসভা যুবদলের আহ্বায়ক কবির হোসেন, থানা ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান, জহিরুল মোল্লা, সুমন মিয়া, আবুল বাশার সুমন, ছালাউদ্দিন সুমন, শওকত হোসেন পরাণ, বাকির মোল্লা, ইয়াছিন আরাফাত, খাইরুল ইসলাম রাসেল ও শ্যামল প্রমূখ।