মহামারিতে বিএনপি নেতারা নাই জনগণের পাশে, কর্মীরাও দিশেহারা!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

করোনাভাইরাস মহামারিতে সরকারি বেসরকারি সহ সকল উপার্জনকারী প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এতে করে সকল শ্রেণি পেশার মানুষেরও আয়ের পথ বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে গরীব অসহায় দুঃস্থ দিনমজুর খেটে খাওয়া পরিবারগুলোর আহারের পথও বন্ধ। খুব কষ্টে দিনাতিপাত কাটাচ্ছেন তারা। এই মহামারিতে এসব অসহায় মানুষের পাশে বিএনপির ভুমিকা বেশ প্রশ্নবিদ্ধ। হাতেগোনা বিএনপির বেশকজন নেতা ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কিছু মাস্ক বিতরণ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ ও কিছু খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেই তাদের দায়িত্ব শেষ করেছেন। এসবের মাঝে সমাজ সেবার চেয়ে মিডিয়া ফোকাস ও ফটোসেশনই ছিল তাদের মুল টার্গেট।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের ভুমিকা জনগণের মাঝে বিরাট প্রশ্নবিদ্ধ। প্রশ্নবিদ্ধ বিএনপির এসব নেতারা আসলেই কির জনগণের জন্য কাজ করেন কিনা। এবার সেই প্রশ্নের স্থলে যোগ হয়েছে বিএনপির যেসব গরীব দুঃস্থ অসহায় কর্মী সমর্থক রয়েছেন তাদেরও খোঁজ খরবও নিচ্ছেন কিনা। মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেই প্রশ্ন তুলেছেন। জেলায় বিএনপির যেসব নেতারা শিল্পপতি তারা দলের কর্মী সমর্থকদের পাশে তো দুরের কথা তারাও নেই জনগণের পাশে।

১৪ এপ্রিল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম আহমেদ বাবু লিখেছেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতৃত্ব নাকি ত্রাণ সামগ্রী দিচ্ছেন কেউ ২ হাজার, আবার কেউ ৫ হাজার, কেউ ১০ হাজার এর কথা বলছে। আপনাদেরকে বলবো আপনি কি নিজ দলের নেতাকমৃীদের কোন খোঁজ খবর নিয়েছেন? তারা কি না খেয়ে আছে নাডকি অনেকেই অনাহারে জীবনযাপন করছে? দয়া করে আগে নিজের ঘরের মানুষের খোঁজ খবর নেন তারপর অন্য কিছু ভাবুুন।’ ছাত্রদলের এই নেতার এমন স্ট্যাটাজে সমর্থন করে মন্তব্য করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ বিএনপি নেতা ইমাম হোসেন বাদল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া ও শ্রমিকদল নেতা নূর মোহাম্মদ সহ বেশকজন।

ইব্রাহীম বাবুর এই স্ট্যাটাজে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা অ্যাডভোকেট কাজী রুবায়েত হাসান সায়েম মন্তব্য করেছেন, ছোট, তারা নিজেরাই তো অভাবী, যদি সম্ভব হয় কিছু চাঁদা তুলে তাদের বাড়িতে বাজার করে দিয়ে আসো।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর জিয়া পরিষদের সভাপতি মাজহারুল ইসলাম জোসেফ লিখেছেন, এখন যা করা দরকার তা হলো প্রক্রিয়া শুরু করা, মূলদল ও অঙ্গ সংগঠনগুলি ওয়ার্ডভিত্তিক দলের নেতাকর্মীদের একটি তালিকা তৈরী করা যাদের বাস্তবিকই প্রয়োজন, সকলের সমন্বিত মতামতের ভিত্তিতে। মহানগর, জেলা পর্যায়ে বিষয়টা নিয়ে পর্যায়ক্রমিক আলোচনা শুরু করা। যারা গুরু দায়িত্বে আছেন ও এমপি হওয়ার প্রচেষ্টায়রত তাদেরই অগ্রণী ভুমিকা রাখতে হবে। সাংগঠনিক ও শুভাকাঙ্খী অনেকেই এগিয়ে আসবে ইনশাআল্লাহ। কারণ খুবই ভয়ংকর বাস্তবতা আসন্ন। যদি এই সময়ে সুশৃঙ্খলভাবে নিজ দলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় নিবেদিত হতে না পারে!! তাহলে বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা খুবই যুক্তিযুক্ত হিসেবে আসবে। ঐ প্রতিরোধে সকল ভন্ডামির অবসান ঘটবে। সুতরাং সোজা ও সহজ হোন এবং সর্বোচ্চ নিবেদিত হোন-প্রমাণ করুন নিজের প্রকৃত যোগ্যতার সঠিকতা। সকলের সুস্থতা ও অগ্রগতি প্রত্যাশা কামনা করি।

যদিও রূপগঞ্জে কিছু গরীবদের মাঝে সামান্য কিছু খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। কিন্তু ধুনকুবের মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুইয়া ও শিল্পপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের দেখা নাই। আড়াইহাজারে অসহায়দের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন নজরুল ইসলাম আজাদ ও মাহমুদুর রহমান সুমন। সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুরের কোন দেখা নাই। সোনারগাঁয়ে আজহারুল ইসলাম মান্নানের অনুগামী লোকজন খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করলেও তার দেখা নাই। এ ছাড়াও আর কাউকেই দেখা যাচ্ছেনা জনগনের পাশে। মাসুকুল ইসলাম রাজীব এক হাজার পরিবারের মাঝে এক সপ্তাহের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছিলেন। অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান সদর ও বন্দরের ৫’শতাধিক গরীব অসহায়দের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছিলেন। চিকিৎসকদের মাঝে পিপিই বিতরণ করেছিলেন সাবেক এমপি আবুল কালাম। অধ্যাপক মামুন মাহামুদও গরীব অসহায়দের মাঝে কিছু খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছিলেন। এ ছাড়াও জেলা ছাত্রদল, মহানগর ছাত্রদল ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এসব বিতরণ বিএনপি নেতাদের খুব যতসামান্য ছিল। তবে এসব নেতাদের কেউই দলের নেতাকর্মী যা অসহায় তাদের পাশে দাঁড়ায়নি।