সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ-(আড়াইহাজার) আসন থেকে তিনবারের সাবেক এমপি এম আতাউর রহমান আঙ্গুর। বিএনপির সাবেক এই এমপিকে মহামারি করোনা পরিস্থিতিতেও জনগণের পাশে দেখা যাচ্ছেনা। অথচ জনগণ তাকে একটি ইউনিয়নের নেতা থেকে এমপি বানিয়েছেন তিনবার। আড়াইহাজারবাসীর পাশে সামান্য এক মুঠো চাল বিতরণ করতেও দেখা গেল না তাকে। অথচ তিনি নির্বাচন আসলেই এমপি হওয়ার জন্য দলের মনোনয়ন যুদ্ধে নেমে পড়েন। নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটালেও আড়াইহাজারের মানুষের জন্য তার অবদান প্রশ্নবিদ্ধ যখন এমন মহামারিতে গরীব অসহায় দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে তার কিঞ্চিত সহযোগীতা নাই। মানুষ হতাশ হয়েছেন তার এমন আচরণে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ক্ষোভ ঝাড়ছেন আড়াইহাজারবাসী।
১৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ফেসবুকে সোহেল আহমেদ নামে একজন আতাউর রহমান আঙ্গুরের ছবি সহ পোস্ট করে লিখেছেন, প্রিয় আড়াইহাজারবাসী, আপনারা নিশ্চয়ই এই ভদ্রলোককে চিনেন। ইনি সেই সৌভাগ্যবান ব্যক্তি যিনি হাইজাদী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি থাকা অবস্থায় তার বড় ভাই তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব এ এম বদরুজ্জামান খসরু সাহেবের বদৌলতে এমপি হন এবং আমরা আড়াইহাজারবাসী তাকে তিনবার এমপি নির্বাচিত করি। বিগত ২০০৮সালে মনোনয়ন না পাওয়ায় দলের বিরোধীতা করে বদরুজ্জামান খসরু সাহেবকে পরাজিত করতে সক্ষম হন। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তাকে আমরা এক যুগেরও বেশী সময় ধরে হারিয়ে ফেলেছি। যদিও প্রতিবারই মনোনয়ন নেয়ার সময় তাকে দেখার সুযোগ আমরা পাই। যাই হোক এইগুলি আমাদের দলের কথা, মনের আবেগ রাখতে না পেরে বললাম। এখন এইসব কথা বলার সময় নয়, আসল কথাটা আমাদের সাবেক এমপি সাহেবের উদ্দেশ্যে,,,,,,, আপনাকে আড়াইহাজারবাসী তিনবার এমপি বানালো, এমপি হয়ে আপনি কত টাকার পাহাড় বানিয়েছেন তা আমরা জানতে চাইনা। করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবায় আমরা আড়াইহাজারবাসী আজ বিপদগ্রস্থ, এই সময়ে আমরা আপনার চেহারাটা একবার দেখতে পারলাম না,,, আফসোস। ভুলটা আমাদের, আমরা ভুল পাত্র বেছে নিয়েছিলাম। অতীতের মতো আজও বিপদের সময় কাছে আসলেন না, ভুল করেও আপনার নিজের স্বার্থে জনগণের সামনে আসার সাহস দেখাবেন না,,,, জনগণ তখন কি করবে সেটা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা।’
অন্যদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন- নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনের বিএনপির সাবেক এম আতাউর রহমান আঙ্গুর গরীব অসহায় দুঃস্থ মানুষের পাশে নেই করোনাভাইরাসের মহামারির বিপদের সময়েও। আড়াইহাজারের একটি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি পদ থেকে বিএনপিতে এসেই বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে এমপি হয়েছিলেন তিনি। সেই আঙ্গুুর পরবর্তীতে হয়েছেন তিনবার এমপি। আড়াইহাজারে রয়েছে তার শতশত ভিঘা জমি। যার একটি ৪০ কানি পরিমান পুকুর রয়েছে। স্থানীয়রা অনেকটা মজা করেই বলছেন- যে পুকুরের মাছ খাওয়ালেও আড়াইহাজারবাসীর এক মাস চলে যাবে। কিন্তু আঙ্গুর এখন পর্যন্ত কোন গরীব অসহায় মানুষের হাতে একমুঠো চাল তুলেও দিলেন না!
তবে করোনা পরিস্থিতির শুরুতেই আড়াইহাজারের বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবু ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন গরীব অসহায় দুঃস্থ মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন সমান তালে। এমপির নিজস্ব তহবিল ছাড়াও রয়েছে সরকারি ও অন্যান্য ফান্ড। কিন্তু বিএনপি নেতা মাহমুদুর রহমান সুমন আড়াইহাজারবাসীর পাশে দাড়িয়েছেন নিজ তহবিল থেকে। নিয়মিত আড়াইহাজারের বিভিন্ন এলাকায় তিনি খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন। তবে আড়াইহাজারের শীর্ষ পর্যায়ের যে কজন নেতা রয়েছেন যারা এমপি হতে চান তাদের মধ্যে সবার আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণে নেমেছিলেন মাহমুদুর রহমান সুমন। প্রথম দিনেই তিনি দুই হাজার স্যানিটাইজার বিতরণ করেছিলেন। তিনি স্বশরীরে বিতরণে না থাকলেও তার নেতাকর্মীরা বিতরণে কাজ করেছেন।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে বেশ আলোচনায় থাকা জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজের উদ্যোগে উপজেলার মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী, ওষুধ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার সহ বিভিন্ন খাদ্য পণ্য বিতরণ করেছেন। এ ছাড়াও এ আসনের সাবেক এমপি এমদাদুল হক ভূঁইয়াকেও জনগণের মাঝে দেখা যাচ্ছেনা। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাবেক সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ও সাবেক রাষ্ট্রদূত মমতাজ হোসেনও নাই গরীব অসহায় মানুষের পাশে। তিনিও নির্বাচন আসলেই মনোনয়ন লড়াইয়ে নামেন। কিন্তু জনগণের মাঝে তাকে কখনই দেখা যায়নি। অথচ তিনি আড়াইহাজারের একজন কৃতি সন্তান। সেই হিসেবে ইকবাল পারভেজই কেবল আওয়ামীলীগ নেতাদের মধ্যে জনগণের খোজ খবর বেশি রাখেন।
অন্যদিকে বিএনপির নেতাদের মধ্যে জনগণের পাশে দাড়িয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন। প্রায় দুুই সপ্তাহ ধরে তার উদ্যোগে আড়াইহাজারেরর দূর্গম কালাপাহাড়িয়া থেকে শুরু করে আড়াইহাজারেরর প্রতিটা ইউনিয়ন এলাকায় তার নেতাকর্মীদের দিয়ে টিমওয়ার্ক গঠন করে খাদ্য সামগ্রী, মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিতরণ করছেন। বিএনপির নেতাদের মধ্যে সবার আগে আড়াইহাজারের মানুষকে সচেতন করে গড়ে তুলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার মাস্ক ও লিফলেট বিতরণ করা হয় সুমনের উদ্যোগে।
তবে তুমুল সমালোচনার পর আড়াইহাজারের গরীব মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণে নামেন গত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদকে। ৪ এপ্রিল তিনি আড়াইহাজারের রিক্সাওয়ালাদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। এর আগে গত ২ এপ্রিল ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে নিয়ে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছিলেন যেখানে অনেক অসহায় রিক্সাওয়ালা ভিক্ষুকেরা খাদ্য সামগ্রী পায়নি খাদ্য সামগ্রীর সংকটের কারনে।
এ ছাড়াও আড়াইহাজারের গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে যার ছায়াও দেখা যাচ্ছেনা তিনি হলেন কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির নেতা আলমগীর সিকদার লোটন। জাতীয় নির্বাচন আসলেই তিনি যে আড়াইহাজারের সন্তান সেটা মানুষকে স্বরণ করিয়ে দেন। কিন্তু আড়াইহাজারের মানুষের পাশে তাকে কখনই দেখা যায়নি। এমন মহামারিতেও তাকে দেখা যাচ্ছেনা গরীবের পাশে দাড়াতে। তার মতই বেশির ভাগ নেতাদের অবস্থা। কেউ কেউ গাঁ ছাড়াভাবে কিছু খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে চুপসে গেলেও স্থানীয় এমপি নিয়মিত গরীব অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন। একইভাবে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন মাহমুদুর রহমান সুমন।