সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
করোনাভাইরাসে ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা। গত ১৩ এপ্রিল একজন রোগী সনাক্ত হওয়ার পর সেই এলাকার ১৪ জনের নমুনার মধ্যে ৩ জন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছেন। উপজেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো কঠোর অবস্থান না নিলে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় হিমশিম খেতে হবে সোনারগাঁ উপজেলা প্রশাসনকে।
করোনা পরিস্থিতিতে উপজেলা প্রশাসনের কঠোর অবস্থান, স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা, ইউনিয়ন পরিষদগুলোর জনপ্রতিনিধি সহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ নিয়মিত মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে আসছেন। এমপির দেয়া হটলাইনে ফোন করলেই পৌছে যাচ্ছে খাদ্য সামগ্রী। নিজ হাতে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও। সোনারগাঁয়ে এ পর্যন্ত উপজেলার ১৫ হাজার ২’শ পরিবারকে মোট ১৮৬ হাজার ৫ মেট্রিক টন চাল ও ৮লাখ ২৫ হাজার নগদ টাকা সরকার কাছ থেকে বরাদ্ধ পেয়েছেন।
লকডাউন অমান্য করায় জেল জরিমানা করেই মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছেনা। যে কারনে বিরক্ত হয়ে ওঠেছে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বারংবার সোনারগাঁবাসীকে ঘরে থাকার জন্য আহ্বান করলেও আরও বেশি যেনো নির্দেশনা অমান্য করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। প্রতিটি এলাকার পাড়া মহল্লার অলিগলিতে গড়ে ওঠা দোকানগুলো ও মোড়ে মোড়ে জনতার ঢল দেখা যায়।
সোনারগাঁয়ের মানুষকে ঘরে থাকতে বলেও কারো কথাই কর্ণপাত করছেনা এখানকার মানুষজন। প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করলেই যেনো বুক ফুলিয়ে হাটা যায় এমন ভাব এলাকার তরুণ যুবকদের মাঝে। কিশোর যুবক থেকে শুরু করে সকল বয়সীরাও করোনাভাইরাসকে আমলেই নিচ্ছেনা। ইতিমধ্যে করোনায়া আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে সোনারগাঁয়ে। আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে দিন দিন। উল্টো লকডাউন মানতে উপজেলা প্রশাসনের কাছে মুখরোচক খাবারের বাজারের তালিকা তুলে দিচ্ছেন মানুষজন। সেই সঙ্গে কারো কারো বাড়ির পালিত গরুর জন্য ঘাস কেটে দিতেও দাবি তুলছেন। এসব কারনে সোনারগাঁয়ের প্রশাসনকে আরো কঠোর অবস্থানে যাওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেনত মহল।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় গত ১৩ এপ্রিল বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হাড়িয়া এলাকায় প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ার পর আক্রান্তের বাড়ীর ১৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
১৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে করোনার পজেটিভ আসে। বাকি ১১ জনের পরীক্ষায় করোনা আসেনি।
এ নিয়ে বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ৫ জন। এছাড়া উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নে ২জন, পৌরসভার টিপুরদীতে ১, শম্ভপুরা ইউনিয়নের একরামপুর এলাকায় একজন, সোনারগাঁ থানার এক নারী কনস্টেবল করোনায় আক্রান্ত হোন যার বাড়ী মন্সিগঞ্জে। তিনি সেখানে যাওয়ার পর করোনা রোগী সনাক্ত হন।
এ ছাড়া করোনা উপসর্গ নিয়ে যে ২জন মারা যান তাদের নমুনা সংগ্রহ করে তাদের রিপোর্টেও পজেটিভ আসে। এ নিয়ে সোনারগাঁয়ে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১২ জন।
এর মধ্যে উপসর্গ নিয়ে ২ ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন। যারা মৃত্যুবরণ করছেন তাদের পরিবারের সদস্যদেরও নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এদের একজন শম্ভপুরা ইউনিয়নের চেলারচর এলাকায় আরেক মোগরাপাড়া ইউনিয়নের গোহাট্টা গ্রামের ভাড়াটিয়া।