সরকার মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে: রুহুল কবির রিজভী

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহম্মেদ বলেছেন, মহামারি মোকাবেলা করতে হলে সকলের ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না করে সরকার মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। মানুষের জীবন নিয়ে খেলতে গিয়ে ভয়ংকর ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। দিন দিন এদেশের মানুষের লাশের সারি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২৬ এপ্রিল রবিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমনের নিজ বাসভবন ইলমদী এলাকায় ত্রাণ বিতরণে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় বিএনপি নেতা মাহমুদুর রহমান সুমনের উদ্যোগে খাদ্য ও নগদ অর্থ গরীব অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়

এতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান রনি সহ আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

রিজভী আরও বলেন, আমাদের দেশে হাসপাতালে চলছে সীমাহীন অব্যবস্থাপনা। প্রয়োজনীয় ওষুধ নেই। চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা নেই। মানুষ যাবে কোথায়? চিকিৎসকরা নার্সরা ভয় পাচ্ছেন। যারা চিকিৎসা করবে তারা যদি ঝুঁকির মধ্যে থাকে, করোনা আক্রান্ত হয় তাহলে কে চিকিৎসা দিবে? বিশ্বে যে পরিস্থিতি দেখছি আল্লাহ না করুক ওইসব দেশের মত যেন না হয়। উন্নত দেশগুলো লাশের সারি ঠেকাতে পারছে না। সে তুলনায় আমাদের প্রতিরোধমূলক কিছুই নাই।

তিনি বলেন, সরকার কোন দায়িত্বই নিতে চায় না। বুঝেও না। মন্ত্রীরা ঘরের মধ্য থেকে ভিডিও বার্তা দিচ্ছে আর বিএনপি নেতাকর্মীরা ঝুঁকির মধ্যেও অসহায় মানুষদের পাশে ছুটে যাচ্ছে সহযোগিতা করছে।

রিজভী বলেন, বিএনপি চেযারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় দলের নেতাকর্মীরা অসহায় দুস্থ ও কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। সরকারের অনেক নিপীড়ন নির্যাতনের পরও নিজেদের পকেটের টাকায় সারাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিএনপির নেতাকর্মীরা ১২ লাখ মানুষকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ দিতে পেরেছে। আজকে আড়াইহাজারে মাহমুদুর রহমান সুমন নগদ অর্থ ও খাদ্য দিচ্ছে।

তিনি বলেন, জনগণের টাকায় কেনা ত্রাণ সরকারি দলের লোকেরা চুরি করছে। আওয়ামী লীগের লোক এমন চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ঘর থেকে, খড়ের পালা থেকে, খাটের নিচ থেকে চাল ডাল তেল পাওয়া যাচ্ছে। এই ধরণের রাজনৈতিক দল দিয়ে প্রধানমন্ত্রী করোনা মহামারীতে দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা করতে পারবেন না। হাজার হাজার বস্তা চাল ধরা পড়ছে চেয়ারম্যান-মেম্বার অথবা আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে। গোটা দেশকে দুর্ভিক্ষের মধ্যে ফেলে দিয়ে দেশ পরিচালনা করবেন মানুষ সেটা মেনে নেবে না।

রিজভী বলেন, চীনে যখন করোনা ভাইরাস শুরু হল তখন বাংলাদেশ সরকার কোনো পদক্ষেপ নিল না। মার্চ মাসে করোনা শুরু হয়েছে সরকার তা জানায় নাই। অন্য কাজে ব্যস্ত ছিল। দেশের প্রতি জনগণের প্রতি কতটুকু দায়িত্ব আছে তা আপনারাই বুঝতে পারছেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, আজকের চিকিৎসকেরা মারা যাচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নেই। করোনার বিরুদ্ধে যে প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার ছিল তা নেয়নি। গতকাল বলছে সিটিতে গার্মেন্টস খুলে দেবে। সকল শ্রমিক আসলে কি ভয়াবহ অবস্থা হবে তা অনুমান করা যায়। একজনের হলে সকলে আক্রান্ত হবে। ব্যাপক বিস্তার লাভ করতে পারে

সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, প্রতিদিন আমরা ৪০০ থেকে ৫০০ লোকের আক্রান্ত খবর পাচ্ছি। মারা যাচ্ছে বহু লোক। যথাযথ পদক্ষেপ নিলে এত আক্রান্ত হতো না। ভিয়েতনাম ও ভুটান পদক্ষেপ নেয়ায় সে দেশে আক্রান্ত হয়নি। কিন্তু আমাদের দেশে সরকার পদক্ষেপ নেয়নি বরং সরকারি দলের লোকেরা আত্মসাৎ করছে, চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে আর তাতে সহযোগিতা করছে সরকার। আবার যারা চুরি করছে তাদেরকে দিয়ে ত্রাণ সহায়তার কথা বলছে। অর্থাৎ চোরকে দিয়ে ঘর পাহারা দেওয়ার কথা বলছে। তাহলে এই সরকার দিয়ে দেশের সঙ্কট মোকাবেলা করা যাবে না।

এতে মাহমুদুর রহমান সুমন বলেন, আজকে করোনায় অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। বহু মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে। গত ১২ বছরে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এটি করেই ক্ষমতাসীনরা ক্ষ্যান্ত হননি। দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন-নিপীড়নের মাধ্যমে বিএনপিকে তারা ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। বিএনপিকে ধ্বংস করা যাবেনা বরং বিএনপি আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে সরকার। কিন্তু তারেক রহমান দেশের মানুষের হৃদয়ে ঢুকে গেছে। বাংলাদেশের মানুষ তাকে ভালোবাসে। তার নেতৃত্বেই আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব।